১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেসব স্থান বধ্যভূমিতে পরিণত করেছিল সেই সব স্থানে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভগুলো ভেঙে পড়ছে অবহেলায়। দলীয় লোকদের ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে নির্মিত এসব স্মৃতিসৌধের বেশির ভাগই অকেজো হয়ে পড়ছে। সীমানা প্রাচীর খুলে নিয়ে গেছে নেশাখোররা। মাদকসেবীদের আড্ডাকেন্দ্রে পরিণত হওয়া এসব বধ্যভূমিতে ভয়ে সন্তানদের যেতে দেন না মা-বাবারা।
বধ্যভূমিতে কাঁদছে স্মৃতিস্তম্ভ
আবুল কাশেম ও আরিফুর রহমান

দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ বিলিয়ে দেওয়া শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণে এসব বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বিদেশে থাকায় এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, আইএমইডির প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইএমইডি সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। আইএমইডির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ৩৫টি স্মৃতিস্তম্ভের হালনাগাদ অবস্থা জানার জন্য আইএমইডিকে সমীক্ষা চালাতে অনুরোধ করেছিল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে বধ্যভূমির উপযুক্ত স্থান চিহ্নিত করা হয়নি। স্মৃতিস্তম্ভগুলো বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের অসংগতি ধরা পড়েছে। অনেক স্মৃতিস্তম্ভ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। আর নির্মাণকাজ শেষে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কোনোরকমে নির্মাণকাজ শেষ করা হয়েছে। ফলে বেশির ভাগ স্মৃতিস্তম্ভ থেকে খসে পড়ছে টাইলস।
প্রকল্প অনুযায়ী, সব জায়গায় ৩৫ ফুট উচ্চতার মূল স্তম্ভ নির্মাণ করার কথা থাকলেও মিরপুর জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ ছাড়া বাকিগুলোতে তা হয়নি। প্রতিটি ক্ষেত্রে পাঁচ ফুট উচ্চতার সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কথা থাকলেও ১২টিতে সমীক্ষা চালিয়ে একটিতেও তা পাওয়া যায়নি। সব স্মৃতিস্তম্ভে পতাকা রাখার বেদি নির্মাণের কথা থাকলেও বাস্তবে তা পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া প্রবেশপথ, অভিবাদন গ্রহণের স্থানও সঠিকভাবে নির্মিত হয়নি। স্মৃতিস্তম্ভগুলো নির্মাণের উদ্দেশ্য সফল হয়নি উল্লেখ করে আইএমইডি বলেছে, বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের ফলে ওই সব এলাকার তরুণ, যুবসমাজ ও আপামর জনসাধারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আশাব্যঞ্জকভাবে উজ্জীবিত হয়নি।
আইএমইডি বলেছে, এসব স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পে নানা অনিয়ম হয়েছে। বিশেষ করে বধ্যভূমির উপযুক্ত স্থান নির্বাচন না করা, দলীয় ঠিকাদার নির্বাচন, নির্মাণ সামগ্রীর গুণগত মান নিশ্চিত না করা, প্রকল্প কাজের পর্যাপ্ত তদারকি ও নজরদারি না করা, স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তি ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত না করা, প্রকল্পের ত্রুটিপূর্ণ নকশা প্রণয়ন, স্মৃতিস্তম্ভগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না করায় এসব বধ্যভূমিতে যেতে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের মধ্যে কোনো আগ্রহ সৃষ্টি হয়নি। তা ছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ বধ্যভূমির এসব স্মৃতিসৌধে যে যাবে, সে জন্য প্রকল্প অঞ্চলকে পর্যটন খাতের সঙ্গেও যুক্ত করা হয়নি।
স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের প্রভাব মূল্যায়ন করে আইএমইডি বলেছে, ‘যে উদ্দেশ্যে এসব স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে, তা সফল হয়নি। স্মৃতিস্তম্ভ এলাকার বেশির ভাগ মানুষই মুক্তিযুদ্ধ ও আমাদের জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ দিবস, ওই এলাকায় অবস্থিত বধ্যভূমি বা স্মৃতিস্তম্ভ বিষয়ে তেমন কিছুই জানে না। তাই এসব স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে দৃষ্টি আকর্ষণ করার মতো কোনো সামাজিক প্রভাব আইএমইডির মূল্যায়ন সমীক্ষায় উঠে আসেনি।’
আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বধ্যভূমিগুলো অনেকটা অরক্ষিত অবস্থায় আছে। বেশির ভাগ বধ্যভূমিতে কোনো নামফলক নেই। নেই কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী বা সীমানা প্রাচীর। স্মৃতিস্তম্ভগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভরপুর এবং অনেকটা পরিত্যক্ত স্থানের মতো পড়ে আছে। বেশির ভাগ বধ্যভূমিতে সন্ধ্যার পর মাদকসেবীদের আড্ডা বসে। কিশোরগঞ্জে অবস্থিত বধ্যভূমিতে ল্যাট্রিনের স্যুয়ারেজ লাইন সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। বগুড়ার বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ এলাকাটি রিকশা ও টেম্পোর গ্যারেজ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। স্থানীয় অধিবাসীরা বধ্যভূমিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভগুলোর ব্যাপারে নির্বিকার। শুধু দু-একটি স্থানে স্থানীয় প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালন করা হয়।
মিরপুর জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ মূল্যায়ন করে আইএমইডি বলেছে, ৩৫ ফুট উচ্চতার মূল স্তম্ভে ১০টি বিচ্যুতি রয়েছে। চারপাশের দেয়ালে রয়েছে আরো ১০টি বিচ্যুতি। বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভে পতাকা রাখার স্থানে পাঁচটি ও কেন্দ্রীয় চত্বরে ১১টি বিচ্যুতি ধরা পড়েছে। মূল প্রবেশ পথে ত্রুটি রয়েছে ১২টি। প্রকল্পের জমির পরিমাণ একেক জায়গায় একেক রকম বলা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার দানাপাটুলি গ্রামে বধ্যভূমিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভটির কোনো প্রতিষ্ঠা সাল জানা সম্ভব হয়নি আইএমইডি কর্মকর্তাদের পক্ষে। এ স্মৃতিস্তম্ভের কোনো সীমানা প্রাচীর নেই। এর মিনারও নির্মাণ করা হয়নি। স্মৃতিস্তম্ভটির অবস্থা ভালো নয়। অযত্ন, অবহেলা ও নোংরা অবস্থায় পর্যবসিত এটি। এ বধ্যভূমিতে আসা-যাওয়ার জন্য কোনো রাস্তা নেই। শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতীতে অবস্থিত বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভটির অবস্থাও ভালো নয়। সেখানে যাতায়াতের কোনো রাস্তা নেই।
কিশোরগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা ছফির উদ্দিন আইএমইডিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘এটি নির্মাণ করার চেয়ে না করাই ভালো ছিল। এটির বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। নোংরা, ভাঙা, মল-মূত্র ও টয়লেটের ট্যাংকি থেকে অবিরত নোংরা পানি চুইয়ে পড়ছে। যারা পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নিষ্ঠুরভাবে হত্যার শিকার হয়েছিল, আজ তাদের এভাবেই সম্মান জানানো হচ্ছে! এটি অত্যন্ত দুঃখের।’
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বধ্যভূমিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভের বর্তমান অবস্থান ‘খুব খারাপ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে আইএমইডির প্রতিবেদনে। এই স্মৃতিস্তম্ভে বিদ্যুৎ সংযোগও নেই, যাতায়াতের রাস্তাও কাঁচা। নেই কোনো বিশ্রামাগার ও নিরাপত্তাকর্মী। আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বধ্যভূমির তেমন কোনো কাজ করা হয়নি। নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভটি নির্ধারিত নকশা অনুযায়ী হয়নি। স্থানীয় লোকেরা এটি নিজেদের মতো করে নির্মাণ করেছে। স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে এলাকাবাসীর কাছে এটি তেমন কোনো মূল্যায়ন পায়নি। নির্ধারিত নকশার কোনো কিছুই এখানে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
নাটোর সদর উপজেলার ফুলবাগান বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভ নিয়ে আইএমইডি বলেছে, স্মৃতিস্তম্ভটি মোট ১২ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। এটি দেখতে সুন্দর হলেও অবকাঠামোগতভাবে বেশ দুর্বল। শহরে প্রধান সড়কের পাশেই নির্মিত হওয়ায় এটি সহজে চোখে পড়ার মতো। তবে এটি নির্মাণে ভালোমানের ইট, বালু ও সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়নি।
আইএমইডির প্রতিবেদন মতে, হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার বধ্যভূমিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে ভালোমানের কংক্রিট ব্যবহার করা হয়নি। স্মৃতিস্তম্ভটি টাইলস দ্বারা নির্মিত। কিন্তু ম্যাসোনারি কাজ ভালো করা হয়নি। টাইলসগুলো মিনারের স্তম্ভ থেকে খুলে পড়ছে। এটি নির্মাণে ভালো মানের ইট, বালু, সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়নি। স্থানীয়দের কাছ থেকে দরপত্রে অনেক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্মৃতিস্তম্ভের অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ। কুমিল্লা শহরের রসুলপুর বধ্যভূমিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভের অবস্থাও একই রকম। এ স্মৃতিস্তম্ভটির টাইলস ভেঙে পড়ছে। সীমানা প্রাচীরও ভেঙে পড়ে আছে। যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া রায়পাড়ায় বধ্যভূমির ৫.৫ শতাংশ জমিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভটি ‘নামে মাত্র স্মৃতিস্তম্ভ’। ওই বধ্যভূমির জায়গা খুবই সংকীর্ণ। নকশা অনুযায়ী স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে ওঠেনি। স্মৃতিস্তম্ভে কোনো পতাকা বেদিও স্থাপন করা হয়নি। নির্মাণকাজে নিম্নমানের ইট, বালু ও সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে অবকাঠামোগত কোনো কাজ হয়নি বললেই চলে। গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ীর বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণেও ভালো মানের ইট, বালু ও সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়নি। এখনো এর সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ বাকি। তবে এর মূল স্তম্ভের নিচের দিক দুর্বল হয়ে পড়েছে। এ স্তম্ভের অবস্থা খুবই নাজুক। স্তম্ভটির দেয়াল ধীরে ধীরে ধসে পড়ছে। এ বধ্যভূমিতে কোনো ফলক নেই। এখানে নেশাখোরদের আনাগোনা বেশি। অনেক অভিভাবক সন্তানদের এ স্মৃতিসৌধে যেতে দেন না। স্মৃতিস্তম্ভের চারদিকে নিরাপত্তা গ্রিল দেওয়া হয়েছিল, তবে নেশাখোররা তা খুলে নিয়ে গেছে। বগুড়া শহরের সবচেয়ে বড় বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভের মিনার জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। নিম্নমানের ইট, বালু ও সিমেন্ট দিয়ে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। বধ্যভূমির চারপাশের পরিবেশও খুব খারাপ। স্মৃতিস্তম্ভের মিনার টাইলস দ্বারা নির্মিত হলেও সেই টাইলসও খসে পড়ছে। এখানে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ রয়েছে। বধ্যভূমিতে রিকশা ও টেম্পোর গ্যারেজ গড়ে উঠেছে। বরিশাল সদর উপজেলার বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে কোনো রড ব্যবহার করা হয়নি। খুবই নিম্নমানের ইট, বালু, সিমেন্ট দিয়ে কোনো রকমে তা নির্মাণ করা হয়েছে। টাইলস দিয়ে স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করা হলেও টাইলসগুলো এখন খুলে পড়ছে। এ বধ্যভূমির দরপত্রে অনেক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর বর্তমান অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ। ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার বধ্যভূমিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভের মিনারটি টাইলস দ্বারা বেষ্টিত। কিন্তু বধ্যভূমির অবকাঠামো দুর্বল হওয়ায় টাইলস খুলে পড়ছে। ব্যবহৃত ইট, বালু ও সিমেন্ট নিম্নমানের হওয়ায় অবকাঠামোর ভিত দুর্বল হয়ে পড়েছে। এখানে কংক্রিটও খুলে পড়ে গেছে।
স্মৃতিস্তম্ভগুলো সুরক্ষায় বেশ কিছু সুপারিশ করে আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পটিকে সমন্বিত ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা যেতে পারে, যেখানে স্থানীয় প্রশাসন, সুধীসমাজের সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভগুলোর সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার, জাদুঘর, মুক্তমঞ্চ, মিলনায়তন তৈরি করে বধ্যভূমিগুলোকে একটি ‘মুক্তিযুদ্ধ চর্চাকেন্দ্র’ হিসেবে রূপান্তর করতে হবে। পাশাপাশি পর্যটনকেন্দ্র বা পিকনিক স্পটসহ দর্শনীয় স্থাপনা গড়ে তোলা যেতে পারে। প্রতিটি স্মৃতিস্তম্ভে অন্তত একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও একজন নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। স্থাপনাগুলোতে নামফলক বসানো ও নিরাপত্তার জন্য নিয়মিত পুলিশ টহলের ব্যবস্থা করতে হবে। জাতীয় ও স্থানীয়ভাবে ‘বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ ব্যবস্থাপনা কমিটি’ গঠন করে শহীদদের পরিবারকে ব্যবস্থাপনার কাজে যুক্ত করা যেতে পারে।
সম্পর্কিত খবর

মোদি ও শেহবাজ শরিফের শোক
- বাংলাদেশে জাতিসংঘের কার্যালয়ের শোক
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। একই ঘটনায় পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারও শোক প্রকাশ করেছেন।
নরেন্দ্র মোদি এক্স বার্তায় লিখেছেন, ‘ঢাকায় একটি মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত ও দুঃখিত বোধ করছি। নিহতদের মধ্যে অনেকেই তরুণ শিক্ষার্থী।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এক বার্তায় লিখেছেন, ‘ঢাকার মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক প্রাণহানির ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত।
এদিকে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এক্স বার্তায় লিখেছেন, ‘ঢাকায় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর বিমানবাহিনীর একটি বিমান দুর্ঘটনায় মূল্যবান প্রাণহানির ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত। নিহতদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।
এদিকে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক জানিয়েছে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রতিনিধিদল। গতকাল এক শোকবার্তায় ইইউ প্রতিনিধিদল বলেছে, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত। এ দুর্ঘটনায় নিহত, তাদের পরিবারবর্গ এবং ক্ষতিগ্রস্ত সবার প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’
বার্তায় আরো উল্লেখ করা হয়, ‘আমাদের হৃদয় শোকাহত—আমরা নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছি।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের কার্যালয় গতকাল এক ফেসবুক বার্তায় বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় শোক ও সমবেদনা জানিয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা
সরকারি চাকরিতে জুলাই যোদ্ধাদের কোটা থাকছে না
বিশেষ প্রতিনিধি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারের সদস্য ও আহতদের জন্য সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা রাখা হবে না বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গৃহীত কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
জুলাই যোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারকে সরকারিভাবে ফ্ল্যাট দেওয়া এবং সরকারি চাকরিতে তাদের জন্য কোটা রাখা হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাঁদের পুনর্বাসনের কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুসারে মন্ত্রণালয় যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে।
তিনি আরো বলেন, ‘পুনর্বাসন নানাভাবে হতে পারে। তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্যতা অনুযায়ী তিনি যেভাবে পুনর্বাসিত হতে চান সেভাবে করা হবে।
জুলাই যোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সমকক্ষ করা হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওইভাবে (সমকক্ষ) কেউ দেখছে না। আমরাও দেখছি না। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা পেতে ৩০ থেকে ৩৫ বছর লেগেছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা চূড়ান্তকরণ, আহতদের চিকিৎসা ব্যয় এবং তাঁদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তাসহ পুনর্বাসন করার উদ্দেশ্যে যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য ২৮ এপ্রিল ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ গঠন করা হয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের জুলাই শহীদ এবং আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে সরকার ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর মাধ্যমে স্বীকৃতি দিয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তালিকা অনুযায়ী মোট ৮৪৪ জন শহীদের তালিকা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় গেজেট আকারে প্রকাশ করে।
আহত হওয়ার ধরন অনুসারে জুলাই যোদ্ধাদের তিনটি শ্রেণিভুক্ত করে ৪৯৩ জনকে ‘ক’ শ্রেণিতে, ৯০৮ জনকে ‘খ’ শ্রেণিতে এবং এক হাজার ৬৪২ জনকে ‘গ’ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। সম্প্র্রতি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে ‘ক’ শ্রেণির ১১৪ জন, ‘খ’ শ্রেণির ২১৩ জন এবং ‘গ’ শ্রেণির এক হাজার ৪৪২ জন, মোট এক হাজার ৭৬৯ জনের তালিকা পাওয়া গেছে, যা যাচাই-বাছাই শেষে শিগগিরই গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।

ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ
একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান না থাকার প্রস্তাবে বিএনপির আপত্তি
- বিমান দুর্ঘটনার খবরে সংলাপ মুলতবি, আজ আবার বসবে
নিজস্ব প্রতিবেদক

একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা থাকার প্রশ্নে একমত হলেও প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান একই ব্যক্তি থাকার প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল। তবে গুরুত্বপূর্ণ ওই তিনটি পদে একই ব্যক্তির থাকার বিষয়ে বিধি-নিষেধ আরোপে সম্মত নয় বিএনপি।
এই ইস্যুতে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আর সংবিধানের মূলনীতি নিয়ে আলোচনাকালে কমিশনের প্রস্তাবে বিএনপি সমর্থন জানালেও ঘোরতর আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ (সিপিবি) বাম প্রগতিশীল দলগুলো।
গতকাল সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার সংলাপের ১৬তম দিনে এসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়। দুপুরের খাবার বিরতির পর বিমান দুর্ঘটনার খবর পৌঁছলে শোক প্রস্তাব গ্রহণের পর সংলাপ মুলতবি করা হয়।
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় সংলাপে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া।
সংলাপের সূচনা বক্তব্যে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত। আমি, আপনি ও আমরা সবাই যে জায়গায় উপনীত হয়েছি, তার সাফল্য ও ব্যর্থতা সবকিছুর ঊর্ধ্বে হচ্ছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। একটা স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলাম আমরা।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘৫৩ বছর ধরে আমরা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি।
সিপিবি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত সংবিধানের চার মূলনীতি বাতিল করে সংস্কার কমিশন নতুন প্রস্তাব করেছিল, আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম। আবার নতুন করে প্রস্তাব এনেছেন, যার মধ্যে চার মূলনীতি নাকচ করা হয়েছে। তাই আমরা আপত্তি জানিয়েছি। এ ক্ষেত্রে সমাধান হিসেবে বলেছি, প্রস্তাবটি হতে পারে, ‘সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির সঙ্গে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি’ উল্লেখিত হবে। অন্যথায় এটা গ্রহণ করা যাবে না।” সিপিবি ক্ষমতায় গেলে একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান থাকবেন না বলে জানান তিনি।
এর আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, তাঁর দল মনে করে, দলীয় প্রধানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি উন্মুক্ত থাকা দরকার। নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া কোনো দলের সংসদীয় কমিটি যদি মনে করে যে তারা দলীয় প্রধানকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করবে, তাহলে গণতান্ত্রিক এ প্রক্রিয়ার সুযোগ বন্ধ করা ঠিক হবে না। প্রধানমন্ত্রী এবং তার সঙ্গে সংসদ নেতার ভূমিকাটা প্রায় অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত, এই দুই ক্ষেত্রে একত্রে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সংসদ নেতা থাকতে কোনো অসুবিধা নেই।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘গণতন্ত্রে কোনো ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হলে তাঁকে অপশন হিসেবে রাজনৈতিক দলের প্রধানের পদটা ছাড়তে হবে, এ রকম কোনো চর্চা সাধারণত দেখা যায় না। এটা (দলীয় পদ) তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার।’
সংলাপ শেষে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘এক ব্যক্তি যাতে দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী হতে না পারেন সে বিষয়ে সংবিধানে নীতি প্রণয়ন করার প্রস্তাবকে আমরা সমর্থন জানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান একই ব্যক্তি হলে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দলীয়করণ কিভাবে রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তা আমরা অতীতে বহুবার দেখেছি।’
তিনি বলেন, বিএনপি উপস্থাপিত ৩১ দফার চতুর্থ পয়েন্টে আইনসভা, মন্ত্রিসভা, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার যে অঙ্গীকার করা হয়েছে, তার সঙ্গে এই প্রস্তাব সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
বিমান দুর্ঘটনায় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ মুলতবি : রাজধানীর উত্তরায় বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দিনের পরবর্তী অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করা হয়।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ শোকবার্তা পাঠ করেন। এরপর নিহত সদস্যের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। কমিশনের পক্ষ থেকে আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয় এবং তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়। কমিশনের সভায় উপস্থিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেন।
আজ সকাল সাড়ে ১০টায় আবারও এই সংলাপ বসবে বলে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

আদালতের নির্দেশে গোপালগঞ্জে তিনজনের মরদেহ উত্তোলন
- নিরীহরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় : বিএনপি
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

আদালতের নির্দেশে গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত পাঁচজনের মধ্যে তিনজনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে গোপালগঞ্জ পৌর কবরস্থান থেকে ইমন তালুকদার ও রমজান কাজীর লাশ এবং টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী থেকে সোহেল কাজীর লাশ উত্তোলন করা হয়।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মীর মো. সাজেদুর রহমান বলেন, নিহতের ঘটনায় মামলার বাদীরা গত রবিবার আদালতে নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলনের আবেদন করলে আদালত লাশ উত্তোলনের আদেশ দেন। পরবর্তী সময়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল মুন্সী ও রন্টি পোদ্দারের উপস্থিতিতে নিহত রমজান কাজী, ইমন তালুকদারের লাশ গোপালগঞ্জের গেটপাড়া পৌর কবরস্থান থেকে উত্তোলন করা হয়।
এদিকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মারুফ দস্তগির সোহেল রানা মোল্লার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করে। পরে তিনটি লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ আড়াই শ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। এ ছাড়া অন্য দুজনের মধ্যে দীপ্ত সাহার মরদেহ সৎকার ও রমজান মুন্সীর মরদেহের ময়নাতদন্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করা হয়।
গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবান : গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাকর্মী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় কোনো নিরীহ শান্তিপ্রিয় নাগরিক যাতে হয়রানি না হয়, সেদিকে প্রশাসনের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছে জেলা বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির আহবায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, গত বুধবার গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলা বা থানায় হামলার ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপি তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে। আগামীতে যেকোনো নিবন্ধিত বৈধ রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশ ও মিটিং-মিছিলে যাতে কোনো অপশক্তি কোনো প্রকার আক্রমণ বা বাধার সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য জেলা প্রশাসকসহ সব আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে সজাগ দৃষ্টি রাখার অনুরোধ রইল।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন সমাবেশ শুরুর আগে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত অঙ্গসহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এনসিপির সমাবেশ পণ্ড করতে সকাল থেকে গোপালগঞ্জ শহরে আসার সব সড়কের পাশে থাকা গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করে। সেই সঙ্গে কর্তব্যরত সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যদের মারপিট, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে জনমনে ভীতির সৃষ্টি করে। এ ছাড়া সরকারি স্থাপনায় হামলা, ও ভাঙচুর করে এবং গোপালগঞ্জ জেলা সদরে থাকা বিএনপি নেতাদের বেশ কয়েকটি তোরণ ভাঙচুর করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট কাজী আবুল খায়ের, বিএনপি নেতা ডা. কে এম বাবর, অ্যাডভোকেট তৌফিকুল ইসলামসহ বিএনপি ও সহযোয়ী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।