<p>রাজধানী ঢাকায় প্রতিমন্ত্রীরাও তাঁদের বহনকারী গাড়িতে জাতীয় পতাকা ওড়াতে পারবেন। মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় নীতিগত সম্মতির পর বিষয়টি অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বর্তমানে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে রয়েছে বলে জানা গেছে। </p> <p>‘বাংলাদেশ ফ্ল্যাগ রুলস, ১৯৭২’ অনুযায়ী রাজধানী ঢাকায় চলাচলের সময় গাড়িতে পতাকা ব্যবহার করতে পারেন না প্রতিমন্ত্রীরা। তবে রাজধানীর বাইরে তাঁরা তাঁদের বহনকারী গাড়িতে জাতীয় পতাকা ব্যবহার করতে পারেন। এমনকি রাজধানীর বাইরে যাওয়ার সময় তাঁরা রাজধানী থেকেই পতাকা ব্যবহার করতে পারেন। রাজধানীসহ যেকোনো স্থানে চলাচলের সময় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতার মতো মন্ত্রী ও মন্ত্রী পদমর্যাদার পদধারীরা গাড়িতে জাতীয় পতাকা ব্যবহার করতে পারেন।</p> <p>বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় ১৭ জন প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন। সম্প্রতি তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, পূর্ণ মন্ত্রীদের মতো তাঁরাও তাঁদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা ব্যবহার করতে চান। তাঁরা এ সময় বিভিন্ন ধরনের যুক্তি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তখন প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি দেখবেন বলে প্রতিমন্ত্রীদের আশ্বস্ত করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীকে জানান, প্রতিমন্ত্রীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা ব্যবহার করতে হলে ফ্ল্যাগ রুল সংশোধন করলেই চলবে। প্রধানমন্ত্রী ফ্ল্যাগ রুল সংশোধনসংক্রান্ত একটি প্রস্তাব তাঁর কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিলে গত সপ্তাহে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ওই প্রস্তাবে প্রতিমন্ত্রীদের সঙ্গে উপমন্ত্রীদের গাড়িতেও পতাকা ব্যবহারের সুযোগ দেওয়ার সুপারিশ রয়েছে। তবে সিদ্ধান্তের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, উপমন্ত্রীরাও বর্তমানে ঢাকার বাইরে গাড়িতে পতাকা ওড়াতে পারেন।</p> <p>মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রতিমন্ত্রীরা দীর্ঘদিন ধরেই তাঁদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা ব্যবহারের দাবি জানিয়ে আসছেন। ২০১২ সালেও তৎকালীন প্রতিমন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ দাবি করেছিলেন। তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। কিন্তু এবারের বিষয়টি একটু ভিন্ন। কারণ বর্তমানে প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ শিং, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। মূলত তাঁরাই গাড়িতে পতাকা ব্যবহারের সুযোগ দেওয়ার জোর দাবি তুলেছেন। এ ছাড়া মন্ত্রিসভার দুই উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব ও আরিফ খান জয় রয়েছেন।</p> <p>একজন প্রতিমন্ত্রী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মন্ত্রীদের গাড়িতে পতাকা ব্যবহার করতে দেওয়ার কারণ হচ্ছে তাঁদের সম্মানিত করা। তাঁরা প্রত্যেকেই একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে মন্ত্রিসভায় প্রতিনিধিত্ব করেন। যেমন—বাণিজ্যমন্ত্রী বাণিজ্যসংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। খাদ্যমন্ত্রী করেন খাদ্যসংক্রান্ত বিষয়ের প্রতিনিধিত্ব। সব প্রতিনিধিত্ব একসঙ্গে করেই তো প্রধানমন্ত্রী। সেই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভায় তো আমরাও সুনির্দিষ্ট বিষয়ে প্রতিনিধিত্ব করছি। তাহলে আমরা কেন এই সম্মানটুকু পাব না?’</p> <p>জাতীয় পতাকার বইরেও বিভিন্ন ধরনের পতাকা রয়েছে, যা গাড়িতে ব্যবহার করা হয়। বিচারকদের জন্য বিশেষ মনোগ্রামের পতাকা রয়েছে। বিচারকদের মতো সচিবরাও বিশেষ ধরনের পতাকা ব্যবহার করতে চান, যা তাঁরা একাধিক সচিব সভায় উপস্থাপন করেছেন।</p>