ঢাকা, শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫
১১ শ্রাবণ ১৪৩২, ৩০ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫
১১ শ্রাবণ ১৪৩২, ৩০ মহররম ১৪৪৭
অনুকরণীয়

সুন্দরবনের সাহসী মেয়েরা

জামাল হোসেইন, সাতক্ষীরা থেকে ফিরে
জামাল হোসেইন, সাতক্ষীরা থেকে ফিরে
শেয়ার
সুন্দরবনের সাহসী মেয়েরা
ক্রিকেট খেলায় মেতেছে সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি : কালের কণ্ঠ

আফগানিস্তানের মানচিত্রের এক কোণের প্রায় ঝাপসা একটি গ্রাম ‘দাসবুজ’। ততোধিক ঝাপসা এই গ্রামের মেয়েরা। তালেবানের ভয়ে মুখ বুজে থাকতে হয় ওদের। পোশাক থেকে শিক্ষা—সব কিছুতেই তালেবানের আপত্তি।

কিন্তু এসব মানতে রাজি নন রাজিয়া জান। তালেবানের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে এই নারী প্রতিষ্ঠা করেন ‘জাবুলি এডুকেশন সেন্টার’। ধর্মীয় গোঁড়ামির হামলা থেকে বাঁচাতে স্থানীয় মেয়েরা পালাক্রমে স্কুলটিকে পাহারা দেয়। ক্রমেই স্কুলে মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।
দাসবুজ গ্রামে নারীদের মধ্যে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন বোনে স্কুলটি। ‘হায়াট টুমরো ব্রিংস’ চলচ্চিত্রের সারসংক্ষেপ এটি।

সাতক্ষীরার শ্যামনগরের প্রত্যন্ত গ্রাম ‘সুন্দরবন’ যেন বাংলাদেশের ‘দাসবুজ’। তবে প্রেক্ষাপট ভিন্ন।

এখানে মেয়েদের উচ্চশিক্ষা লাভে বড় বাধা ধর্মীয় গোঁড়ামি নয়, অসচেতনতা। বাল্যবিয়ে নামক এক অভিশাপ যেন আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে এই গ্রামসহ আশপাশের এলাকাকে। প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিকে পা রাখতে না রাখতেই বেশির ভাগ মেয়েকে বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দেওয়া হয়। ‘ভালো’ পাত্র পেলে অনেক সময় প্রাথমিকের গণ্ডিও পেরুনোর সুযোগ মেলে না। তাই বাল্যবিয়ের জন্য সুন্দরবন গ্রামের দুর্নাম আছে।

আশার কথা, বাল্যবিয়ে ও যৌন নির্যাতনের মতো সামাজিক ব্যাধি নির্মূলে উদ্যোগী হয়ে উঠেছে স্থানীয় মেয়েরা। প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার সারা বিশ্বের সাহস জাগানিয়া ডকুমেন্টারি দেখে সাহসী হয়ে উঠেছে সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের মেয়েরা। এখন তারা নিজেরাই সব সমস্যার সমাধান করতে পারছে। তারা বাল্যবিয়ে বন্ধের পাশাপাশি যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ এমনকি ঝরেপড়া মেয়েদের স্কুলে ফিরিয়ে আনাসহ সব কিছুই করতে পারছে।

সামাজিক প্রতিকূলতা মোকাবিলায় সুন্দরবন স্কুলের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির মেয়েরা মিলে গঠন করেছে ‘বেস্ট স্কুল গার্লস কমিটি’। কমিটিতে মোট ৩৫ জন সদস্য রয়েছে। গ্রামের কোনো মেয়ের বাল্যবিয়ের আয়োজন হলেই তারা একসঙ্গে সেখানে গিয়ে উপস্থিত হচ্ছে। বাল্যবিয়ের নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরে প্রথমে তারা সংশ্লিষ্ট অভিভাবককে বোঝানোর চেষ্টা করে। বুঝলে ভালো, না বুঝলে উপজেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয় তারা। এ ছাড়া কোনো মেয়ে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিলে তাকে যেকোনোভাবেই হোক ফিরিয়ে আনা হয়। ঝরে পড়া রোধে মেয়েদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যব্যস্থাও করে গার্লস কমিটি।

যৌন নির্যাতন প্রতিরোধেও শতভাগ সফল সুন্দরবন স্কুলের মেয়েরা। ব্যতিক্রমী এক উপায়ে তারা এই সামাজিক ব্যাধি দূর করতে সক্ষম হয়েছে। বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে তারা একটি ‘অভিযোগ বাক্স’ রাখার ব্যবস্থা করেছে। কোনো মেয়ে কোনো বখাটের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হলে সে ওই বখাটে ও সহযোগীদের নাম লিখে অভিযোগ বাক্সে জমা দেয়। প্রতিদিন বিকেলে স্কুল ছুটির পর গার্লস কমিটির সভাপতি বাক্স খুলে দেখে। কোনো অভিযোগ জমা পড়লে কমিটির সদস্যরা সভায় বসে করণীয় ঠিক করে। এরপর সরাসরি ওইসব বখাটের বাড়িতে হাজির হয়ে প্রথমে তাদের অভিভাবকদের বিষয়টি জানানো হয়। অভিভাবকরা ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে প্রশাসনের সহযোগিতাসহ বিভিন্ন উপায়ে শাস্তির ব্যবস্থা করে গার্লস কমিটি।

বেস্ট স্কুল গার্লস কমিটির সভাপতি ও সুন্দরবন স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী শিল্পী মৃধা বলে, ‘গত দুই বছর ধরে কমিটি মাঠপর্যায়ে কাজ করে চলেছে। এলাকায় বাল্যবিয়ে ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে কমিটি শতভাগ সফল হয়েছে।’ শিল্পী আরো বলে, ‘আগে আমরা এতটা সাহসী ছিলাম না। ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন সার্ভিসের (আইটিভিএস) উদ্যোগে প্রতি সপ্তাহে ডকু-ফিল্ম দেখে আমরা সাহসী হয়েছি। সংস্থাটি কমিটির কাজে সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে। তাদের সহযোগিতা না পেলে আমাদের পক্ষে এমন কাজ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হতো।’

সামাজিক নানা বাধা পেরিয়ে ক্রীড়া ক্ষেত্রেও নজির সৃষ্টি করছে সুন্দরবন স্কুলের মেয়েরা। ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল, দৌড়, উচ্চ বা দীর্ঘ লাফেও সমান পারদর্শী ওরা। বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী আসমা খাতুন খুলনা বিভাগে ২০০ মিটার দৌড় এবং উচ্চ লাফে বরাবরই প্রথম হয়ে আসছে। ক্রিকেট-ফুটবলেও শ্যামনগর উপজেলায় সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন।

ওরা এখানেই থেমে থাকেনি। স্কুলের মেয়েরা প্রতি সপ্তাতে ‘বেলাভূমি’ নামে একটি পত্রিকা বের করে। ‘বিজ্ঞান ক্লাব দেয়ালিকা’ নামে বিজ্ঞানভিত্তিক একটি পত্রিকাও রয়েছে। প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত কুমার বৈদ্যর তত্ত্বাবধানে সুন্দরবন স্কুলের মেয়েরা সামাজিক সমস্যা প্রতিরোধ, খেলাধুলা ও পড়ালেখায় দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে।

বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের কোলের প্রত্যন্ত এই লোকালয়ে নানা গোঁড়ামির বিরুদ্ধে এই যুদ্ধের নেপথ্যে বড় ভূমিকা রেখে চলেছে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন সার্ভিস (আইটিভিএস) নামের একটি বেসরকারি সংস্থা। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটির কান্ট্রি এনগেজমেন্ট কো-অর্ডিনেটর সৈয়দ মাহমুদ হাসান হলেন নেপথ্যের মূল ব্যক্তি। শুধু সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় নয়; সাতক্ষীরা ৮৭টি, নওগাঁর পত্নীতলা ও মহাদেবপুরের ৮৭টি, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ৫৬টি, রংপুরের গঙ্গাচড়ার ৫৩টি এবং মেহেরপুরের ৭০টি বিদ্যালয়ে আইটিভিএসের এমন কার্যক্রম চালু রয়েছে।

জানতে চাইলে মাহমুদ হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের দেশের মেয়েরাই যে শুধু সামাজিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে, তা নয়। অনুন্নত ও উন্নয়নশীল অনেক দেশের চিত্র এর চেয়ে ভয়াবহ। আইটিভিএস ওইসব দেশের নারীদের বাস্তবভিত্তিক কাজের সাফল্যের চিত্র ডকুমেন্ট ফিল্মের মাধ্যমে তুলে ধরে তাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেয়েদের কাছে আমরা এই বার্তাটি পৌঁছে দিতে চাই যে, অন্য দেশের মেয়েরা পারলে তোমরা পারবে না কেন?’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মার্কিন শুল্ক সংকট

ভার্চুয়াল বৈঠকের আগেও আসতে পারে সুখবর

    ৩৫% থেকে শুল্ক কমে ১৮-২০% হওয়ার প্রত্যাশা
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ভার্চুয়াল বৈঠকের আগেও আসতে পারে সুখবর

শুল্ক নিয়ে পুনরায় বৈঠকের সময় চেয়ে দফায় দফায় চিঠি দেওয়া হয়েছে মার্কিন প্রশাসনকে। ওয়াশিংটনে গিয়ে সরাসরি বৈঠকের আহ্বান জানানো না হলেও আগামী ২৯ জুলাই বাংলাদেশের সঙ্গে ভর্চুয়ালি বৈঠক করবেন মার্কিন প্রতিনিধিরা। তবে প্রত্যাশা করা হচ্ছে, ওই ভার্চুয়াল বেঠকের আগেই শুল্ক বিষয়ে ওয়াশিংটন থেকে বাংলাদেশের জন্য আসতে পারে কোনো সুখবর। এর আগের টানা তিন দিনের বৈঠকের পর থেকে এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে কী কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়গুলো জানিয়ে যেসব ডকুমেন্ট দেওয়া হয়েছে, তার আলোকেই বাংলাদেশের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে পারে মার্কিন প্রশাসন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

গতকাল শুক্রবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সূত্রে আরো জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ২৯ জুলাই ভার্চুয়ালি বৈঠক করা হবে এবং ওই বৈঠকেই শুল্ক বিষয়ে আলোচনা হবে। এরপর এখন পর্যন্ত নতুন করে মার্কিন প্রশাসন থেকে আর কিছু জানানো হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা প্রত্যাশা করছি, আগামী ২৯ জুলাইয়ের ভার্চুয়াল বৈঠকের আগেও শুল্কের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার নতুন করে কোনো ঘোষণা দিতে পারে।

কেননা আগের টানা তিন দিনের বৈঠকের পর থেকে আমরা যেসব ডকুমেন্ট তাদের দিয়েছি এবং এর পর থেকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বিষয়ে আমরা যেসব উদ্যোগ নিয়েছি, সেগুলোর আলোকেই তারা একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বিশেষ করে ইউএসটিআরের যেসব কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, তাঁরা যদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আমাদের দেওয়া ডকুমেন্টের বিষয়গুলো জানান এবং আমরা এখনো পর্যন্ত কী কী উদ্যোগ নিয়েছি সেগুলো যদি তাঁকে জানানো হয়, তাহলে হয়তো ২৯ জুলাইয়ের আগেও কোনো ঘোষণা আসতে পারে।

বাংলাদেশের তরফ থেকে দেওয়া ডকুমেন্টগুলোতে কী ধরনের তথ্য দেওয়া হয়েছে এবং বাংলাদেশ আসলে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সে বিষয়ে বাণিজ্যসচিব বলেন, আমরা তো তাদের সঙ্গে যে চুক্তি করব, তার ওপরই প্রস্তুতি নিচ্ছি। চুক্তির খসড়ার ওপর এবং তাদের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে মূলত আমরা তথ্যাদি এবং আমাদের মতামত তুলে ধরেছি।

তারা তাদের অবস্থান ঠিক করেছে, আমরা আমাদের অবস্থান ঠিক করেছি। আমাদের তরফ থেকে যে অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে তার মধ্যে মূলত চুক্তির খুঁটিনাটি বিষয়গুলো তুলে ধরেছি। এ ছাড়া বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে কী কী পণ্য ক্রয় করব, যেমনতুলা, সয়াবিন, গম এবং এয়ারক্রাফট কিনবএসব বিষয় উল্লেখ করেছি। মাত্র কয়েক দিন আগে তাদের সঙ্গে আমরা গম ক্রয়ের চুক্তি করেছি। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে তুলা আমদানি বাড়ানোর কথা বলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি করে সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমরা চট্টগ্রামের মিরসরাই ইপিজেডে ৬০০ একর জমি দিয়েছি। এসব বিষয় আমরা জানিয়েছি। এ ছাড়া ২৫টি বোয়িং কেনার উদ্যোগ নিয়েছি তাদের কাছ থেকে। এসব উদ্যোগ নেওয়াই তো হয়েছে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর জন্য। এ ছাড়া শুল্ক কমানোর বিষয়ে কিছু পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি, যেগুলো হয়তো এখনই বলা যাচ্ছে না, চুক্তির পরই জানানো যাবে।

তিনি বলেন, মার্কিন প্রশাসন ইন্দোনেশিয়ার বিষয়ে জানিয়েছেতাদের ওপর ১৯ শতাংশ শুল্ক ধার্য করবে। এ ছাড়া ভারতের সঙ্গে ২০ শতাংশ শুল্কের বিষয় উল্লেখ করে চুক্তি হতে পারে। আমরাও প্রত্যাশা করছি, ৩৫ শতাংশ থেকে কমে ১৮ থেকে ২০ শতাংশের মতো শুল্ক নির্ধারণ করা হতে পারে বা এর চেয়ে কমও হতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা এখন আগামী ২৯ জুলাইয়ের ভার্চুয়াল মিটিংয়ের জন্যই অপেক্ষা করছি। সেই সঙ্গে আমরা আশা করছি, ২৯ জুলাইয়ের ভার্চুয়াল মিটিংয়ের পরিবর্তে মার্কিন প্রশাসন থেকে প্রস্তাব আসতে পারে সেখানে গিয়ে সরাসরি বৈঠকের। এই কয় দিনের মধ্যে সে রকম প্রস্তাব আসতে পারেএমন প্রত্যাশাও রয়েছে আমাদের।

 

 

 

মন্তব্য
সরেজমিন

আ. লীগের কার্যালয়ের সামনে নতুন ব্যানার করা হচ্ছে পরিষ্কার

তৌফিক হাসান
তৌফিক হাসান
শেয়ার
আ. লীগের কার্যালয়ের সামনে নতুন ব্যানার করা হচ্ছে পরিষ্কার
গণ-অভ্যুত্থানের এক বছরের মাথায় এসে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ চলছে। ভবনটির সামনে ‘আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’ লেখা ব্যানার টানানো হয়েছে। ছবি : কালের কণ্ঠ

রাজধানীর গুলিস্তানের শহীদ আবরার ফাহাদ এভিনিউয়ে (সাবেক বঙ্গবন্ধু এভিনিউ) কার্যক্রম নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ভবনটিকে আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট হিসেবে তৈরি করা হবে। আর এই ইনস্টিটিউটেই ফ্যাসিবাদের উত্থান, কার্যকলাপ ও পতন নিয়ে পড়াশোনা ও গবেষণা করা হবে।

গতকাল শুক্রবার ওই কার্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে এবং সেখানে উপস্থিত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

দেখা যায়, ভবনটির দেয়ালে দুটি লাল রঙের ব্যানার লাগানো। উভয় ব্যানারেই লেখা, আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট। ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায়, নিচতলায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলছে। ভেতরে জমে থাকা ময়লা পানি ওয়াসার স্যুয়ারেজের গাড়ি দিয়ে নিষ্কাশন করা হচ্ছে।

ভবনটির ভেতরে ইট-বালু, সিমেন্ট পরিষ্কারের কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। এরই মধ্যে দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা পরিষ্কার শেষ করে চতুর্থ তলা পরিষ্কার করা হচ্ছে।

শ্রমিকদের একজন হাফিজুর রহমান জানান, বুধবার থেকে তাঁরা এই কাজ করছেন। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, আমরা দৈনিক হিসেবে কাজ করতাছি।

চারতলা পর্যন্ত পরিষ্কার করছি। আমরাই পুরোটা পরিষ্কার করব।

ভবনটির বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সদস্য এস এম শাহ আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, এখানে আমরা ফ্যাসিবাদের উত্থান-পতন নিয়ে স্টাডি করব। একই সঙ্গে ফ্যাসিজম রোধে আমরা কী করতে পারি তা নিয়েও বিস্তর স্টাডি করব। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এটা নিয়ে সচেতন করব।

এটা নতুন পুরনো সব রাজনৈতিক দলের জন্য একটি শিক্ষাকেন্দ্র হবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা চিন্তা করেছি যে গুলিস্তানের মতো ব্যবসায়ী অঞ্চলে একটা ভবন আমরা কিভাবে ব্যবহার না করে ফেলে রাখি। এটাকে ঠিকঠাক করতে পারলে আশপাশের জনগণ উপকৃত হবে। এটা হয়েছিল গণশৌচাগার। গুলিস্তানের মতো একটা জায়গায় এত দুর্গন্ধ সহনীয় নয়। তাই আমরা নিজস্ব উদ্যোগে এটা পরিষ্কারের কার্যক্রম শুরু করেছি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যাত্রাবাড়ী থানার সংগঠক মুজাইদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, গত ১৭ বছর এখান থেকে যে ফ্যাসিজম চালানো হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এই ভবনে। এটিকে সরকারিভাবে দেশের স্বার্থে কিভাবে কাজে লাগানো যায় সে চিন্তাই আমরা করছি। কবে নাগাদ এই কার্যক্রম শেষ হবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না।

এর আগে গত ১৭ মে ভবনটিতে টাঙানো হয়েছিল জুলাই যোদ্ধাদের প্রধান কার্যালয় লেখা ব্যানার। তবে কে বা কারা এটি টাঙিয়েছিল সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভবনটিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে ভবনটিকে গণশৌচাগার হিসেবে ব্যবহার করা শুরু হয়। প্রায় এক বছর ধরে মলমূত্র জমে থাকার কারণে উৎকট গন্ধও তৈরি হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গুলিস্তানে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ১০ তলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি ২০১৮ সালের ২৩ জুন উদ্বোধন করেছিলেন দলের সভাপতি ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে সেখানে দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল।

 

 

মন্তব্য
জামায়াত আমির

দল নিয়ন্ত্রণ করেছি দেশও নিয়ন্ত্রণ করতে পারব

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দল নিয়ন্ত্রণ করেছি দেশও নিয়ন্ত্রণ করতে পারব
শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী দল নিয়ন্ত্রণ করেছে, দেশও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। যারা নিজেদের দলই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তারা দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারবে না।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখার রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বেগমপাড়া কিংবা পিসিপাড়া নেই উল্লেখ করে দলটির আমির বলেন, জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতা কখনোই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি এবং যাবেনও না।

যাঁরা দেশ ও জনগণকে ভালোবাসে না, তাঁরাই বিদেশে নিজেদের দ্বিতীয় ঠিকানা গড়ে তুলেছেন এবং তাঁরা নিজেদের স্বার্থে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।

জামায়াত আমির বলেন, বিগত ৫৪ বছরে জামায়াতে ইসলামী দেশের একজন নাগরিকের প্রতিও অবিচার করেনি, জুলুম করেনি। জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতাকর্মী চাঁদাবাজি কিংবা সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত হননি, হবেও না। জামায়াত দল নিয়ন্ত্রণ করেছে, দেশও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।

যারা দলই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তারা দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশের সংকটকালে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জামায়াতে ইসলামীর নেতারা বিদেশ থেকে দেশে এসে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আধিপত্যবাদের দোসর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। যে কারণে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিচারিক হত্যা করা হয়েছে।

পৃথিবীর একমাত্র অসামপ্রদায়িক ধর্ম ইসলাম উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, ধর্ষক, খুনি, লুটেরাদের ভয় আছেএ জন্য তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে।

যারা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে, তাদের মা-বোন যদি প্রয়োজনে বাজারে যেতে পারে, হাসপাতালে যেতে পারে, প্রয়োজনীয় মৌলিক সব কাজ করতে পারেতাহলে কেন ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে নারীদের চলাফেরায় বাধা সৃষ্টি হবে?

আমিরে জামায়াত বলেন, সব ধর্মের নারী-পুরুষই রাষ্ট্রের কাছে সমান। রাষ্ট্র ধর্ম বা লিঙ্গের ভিত্তিতে কোনো বৈষম্য করতে পারে না। ইনসাফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে সবার সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, ইসলাম ও দেশপ্রেমিক সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পথ চলতে চায় জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের রাজনীতি হবে কেবলই মানুষ ও মানবতার কল্যাণে।

জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রমুখ।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতে ইসলামী আগামীতে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মানুষের কল্যাণ সাধনের জন্যই জামায়াতে ইসলামী ব্যাপকভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জামায়াতে ইসলামীকে কোনো ষড়যন্ত্রই অগ্রযাত্রা থেকে থামাতে পারেনি, পারবেও না। একটি বৈষম্যহীন, সুখী-সমৃদ্ধ, আধুনিক, কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসার জন্য তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

 

মন্তব্য

নীলক্ষেতে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে এইচএসসির ব্যাবহারিক খাতা

    অঙ্কনসহ পূর্ণ খাতা কিনে নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার মান ও নৈতিক অবক্ষয়ের অভিযোগ
মানজুর হোছাঈন মাহি
মানজুর হোছাঈন মাহি
শেয়ার
নীলক্ষেতে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে এইচএসসির ব্যাবহারিক খাতা

এইচএসসি পরীক্ষার ব্যাবহারিক খাতা শিক্ষার্থীদের নিজ হাতে লেখার কথা। কারণ এতে কেবল তথ্য নয়, শেখার প্রক্রিয়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বাস্তবে হচ্ছে ঠিক উল্টো। রাজধানীর নীলক্ষেত এলাকায় এখন একটি সরল হিসাবটাকা দিলেই মিলবে পুরো লেখা ও অঙ্কনসহ খাতা।

তারপর তা জমা পড়বে পরীক্ষাকেন্দ্রে, মিলবে নম্বর, পাসও।

রাজধানীর খিলগাঁও মডেল কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শরীফ আহমেদ (ছদ্মনাম) চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। সে এখনো কোনো ব্যাবহারিক খাতা লেখেনি। কারণ জানতে চাইলে বলে, সব খাতা নীলক্ষেত থেকে কিনে নেব।

নিজের হাতে লিখে লাভ কী? সবাই তো কিনে জমা দিচ্ছে।

শুধু শরীফ নয়, রাজধানীর বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই প্রবণতা ব্যাপক। তারা ২০০ থেকে ৪০০ টাকায় নীলক্ষেত থেকে কেনে অঙ্কন ও লেখা সম্পন্ন ব্যাবহারিক খাতাযেন একটি অবাধ বাণিজ্য এবং চলছে প্রকাশ্যেই।

 

নীলক্ষেতের দোকানে সরেজমিন : লিখে দিচ্ছে আমাদের লোক

শিক্ষার্থী পরিচয়ে ঢাকার নীলক্ষেতের ইসলামিয়া মার্কেটে সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, ব্যাবহারিক খাতার এই বাজার বেশ সুসংগঠিত।

দোকানে দোকানে পাওয়া যায় প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা খাতা। প্রতিটি খাতা আগেই লেখা ও অঙ্কন করা। চাহিদা অনুযায়ী সাজানো থাকে আলাদা আলাদা কলেজের নামে।

১৩৮ নম্বর দোকান হ্যাপি বুক হাউজ-এ গিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের খাতা চাইলে দোকানদার বলেন, পেয়ে যাবেন, আজকেই দেওয়া যাবে। একদম আপডেট খাতা।

দাম প্রথমে বলা হয় ৪০০ টাকা। দরদামের পর ৩০০ টাকায় বিক্রি করেন।

৯৪ নম্বর দোকান সালমা বই ঘর-এ গেলে পুরো বিজ্ঞান বিভাগের এক সেট খাতা দেখানো হয়। রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, উচ্চতর গণিত ও আইসিটিসব বিষয়ের খাতা অঙ্কনসহ প্রস্তুত। দোকানদার জানান, প্রতিটি খাতা ৩০০ টাকা, আইসিটির জন্য ২০০ টাকামোট দাম তিন হাজার ৪০০ টাকা।

১০৩ নম্বর দোকান ইব্রাহীম মেডিকেল বুক হাউজ-এও একই চিত্র। প্রশ্ন করলে দোকানি বলেন, আমাদের লোক আছে, তারাই লিখে দেয়। আবার হ্যাপি বুক হাউজ-এর একজন বলেন, নার্সিং ইনস্টিটিউটের ছাত্রীরা এগুলো লেখেন ও আঁকেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রবণতা শিক্ষাব্যবস্থার ভয়াবহ এক অনিয়ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিনুর রশীদ বলেন, ব্যাবহারিক খাতার কেনাবেচা এখন এক ধরনের স্টার্টআপ বিজনেস-এ পরিণত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা শিখছে না, বরং শিখছে কিভাবে অর্থের বিনিময়ে পাস করা যায়।

তিনি আরো বলেন, এই সংস্কৃতি শিক্ষক, প্রিন্সিপাল ও প্রশাসনের জেনেও চোখ বন্ধ রাখার ফল। ওপেন সিক্রেট এই দুর্নীতি শুধু শিক্ষার মান নয়, একটি জাতির ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছে।

শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের আরেক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, এটি একাডেমিক ফ্রডের সবচেয়ে বড় উদাহরণ। টার্ম পেপার, থিসিস, ব্যাবহারিকসবই টাকা দিয়ে কেনা যাচ্ছে। এখনই না থামালে ভবিষ্যতে আমরা আত্মপ্রবঞ্চনার মধ্যে ডুবে যাব।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহসানুল কবির বলেন, ব্যাবহারিক খাতার কেনাবেচা গুরুতর সমস্যা। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের খাতা নিজেরা লেখায় না, তারা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ।

তিনি বলেন, শিক্ষকদের উচিত কেনা খাতা গ্রহণ না করা। প্রয়োজনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যায়ে কড়া মনিটরিং ও অডিট চালু করতে হবে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ