বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ নগরী ঢাকা। কর্মসংস্থানের বিকেন্দ্রীকরণ না হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষের স্রোত ঢাকার অভিমুখে। ৭৫ শতাংশ তৈরি পোশাক কারখানা, বিভিন্ন শিল্পাঞ্চল ঢাকা ও এর আশপাশে। চাকরি ছাড়াও বিচার ও প্রশাসনিক কাজ, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ঢাকায় দিনে যোগ হচ্ছে এক হাজার ৭০০ মানুষ।
মেট্রো রেল-এক্সপ্রেসওয়ে-ফ্লাইওভার
ভোগান্তি সয়েও সচল ঢাকার অপেক্ষা
পার্থ সারথি দাস

ঢাকার সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (আরএসটিপি) বলা হয়েছে, ১৭ বছরে ঢাকার জনসংখ্যা ৫৫ শতাংশ বেড়ে যাবে।
আরএসটিপির তথ্য মতে, বর্তমানে ঢাকার জনসংখ্যা এক কোটি ৭০ লাখ, যা ২০৩৫ সালে হবে দুই কোটি ৬৩ লাখ। এ সময় ট্রিপের সংখ্যা দুই কোটি ৯৮ লাখ থেকে বেড়ে দাঁড়াবে পাঁচ কোটি ১১ লাখে।
তবে সরকার ঢাকাকে যানজটমুক্ত রাখতে গত সাড়ে আট বছরে ছয়টি বড় ফ্লাইওভার ও ওভারপাস উদ্বোধন করেছে। একটি মেট্রো রেল, একটি বিআরটি, দুটি এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে। অচল ঢাকা সচল করতে পাঁচটি পথে হবে মেট্রো রেল। এতে বিনিয়োগ দরকার হবে এক লাখ ৫৯ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা। মেট্রো রেলের এ পাঁচটি রুটের মধ্যে বর্তমানে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে। নির্মাণকাজের খোঁড়াখুঁড়িতে অনেক ভোগান্তি সইতে হচ্ছে নগরবাসীকে। দুটি বিআরটি নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে আরএসটিপিতে। এর মধ্যে গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর সড়ক, মগবাজার, শান্তিনগর, গুলিস্তান হয়ে ঝিলমিল পর্যন্ত হবে বিআরটি-৩। এ প্রকল্পের গাজীপুর-বিমানবন্দর সড়ক অংশের কাজ শুরু হয়েছে। সাময়িক ভোগান্তি সয়েও মানুষ অপেক্ষায় আছে এসব মহাপ্রকল্প বাস্তবায়িত হলে যানজটের দুর্ভোগ থেকে স্থায়ীভাবে মুক্তি পাওয়ার।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ঢাকার যানজট নিরসনের লক্ষ্যে সড়কের উড়াল অবকাঠামোর প্রকল্প নেওয়া এবং বাস্তবায়ন শুরু হয়। সাড়ে আট বছরের ব্যবধানে সরকার রাজধানীতে প্রায় ২৯ কিলোমিটার ফ্লাইওভার ও ওভারপাস নির্মাণ করেছে। এ সময়ে ছয়টি ফ্লাইওভার নির্মাণে ব্যয় হয়েছে চার হাজার ১৫৬ কোটি ২০ লাখ টাকা। ৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬২০ মিটার দীর্ঘ খিলগাঁও ফ্লাইওভারের লুপ নির্মাণ করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মগবাজার-মালিবাগ সমন্বিত প্রকল্পের আওতায় আট কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ ফ্লাইওভার যান চলাচলের জন্য উদ্বোধন করেছেন। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে এক হাজার ২১৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এটি চালু হওয়ায় রাজধানীর সাতরাস্তা, এফডিসি, মগবাজার, মৌচাক, শান্তিনগর, মালিবাগ ও মগবাজার রেলক্রসিং এলাকায় নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রায় ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার, কুড়িল বহুমুখী ফ্লাইওভার, বিমানবন্দর-মিরপুর জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার, মিরপুর-বনানী ফ্লাইওভার ও বনানী ওভারপাস, বিজয় সরণি-তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল সংযোগ সড়ক ও রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণের পর চালু করে। ঢাকা সিটি করপোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) অধীনে এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। ২০১৩ সালের ১১ অক্টোবর মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার উদ্বোধনের পর শনির আখড়া থেকে যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, টিকাটুলী, গুলিস্তান হয়ে নিমতলী ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ পূর্বাঞ্চলীয় এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ৩০টি জেলার যাতায়াতে মানুষকে এখন আর যানজটের ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না।
২০১৩ সালের ৪ আগস্ট যান চলাচল শুরু হয় কুড়িল বহুমুখী ফ্লাইওভার দিয়ে। ৩ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার চালু হলে ঢাকার সঙ্গে পূর্বাচল নতুন শহরের সংযোগ স্থাপন, বিমানবন্দর সড়ক ও প্রগতি সরণি সংযোগস্থলের যানজট কমে যায়। ২০১৩ সালের ২৭ মার্চ বিমানবন্দর থেকে সেনানিবাস হয়ে মিরপুর পর্যন্ত জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার চালু হয়। চার লেনের এক হাজার ৭৯৩ মিটারের ফ্লাইওভার তৈরি হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে দিয়ে ১১ কিলোমিটার সড়কের পরিবর্তে মিরপুরবাসী ৩ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েই বিমানবন্দর সড়কে উঠতে পারছে। প্রধানমন্ত্রী ২০১০ সালের ২০ এপ্রিল বিজয় সরণি-তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল সংযোগ সড়ক ও রেলওয়ে ওভারপাস উদ্বোধন করেন। এক হাজার ১১৪ মিটার দীর্ঘ এই ওভারপাস নির্মাণে ব্যয় হয় ১১৪ কোটি টাকা। ঢাকা শহরের এয়ারপোর্ট রোডের পশ্চিমাংশ বিশেষ করে শেরেবাংলানগর, মিরপুর, কলাবাগান, লালমাটিয়া ও ধানমণ্ডি থেকে গুলশান, উত্তরা, বারিধারা ও বিমানবন্দর সড়কে যাতায়াতকারীদের যানজট থেকে রেহাই দেয় এটি।
বিশিষ্ট নগর বিশেষজ্ঞ, নগর গবেষণা কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, আরএসটিপিতে ফ্লাইওভার করার বিষয়টির অগ্রাধিকার ছিল না। এটি অগ্রাধিকার পাচ্ছে। মহাখালী, কুড়িল—এসব অংশে এখন স্বস্তি মিলছে। কিন্তু গণমানুষের চলাচলের জন্য বেশি গুরুত্ব দিতে হবে মেট্রো রেল, বাস র্যাপিড ট্রানজিট ও বাসসেবায়। হেঁটে চলার জন্য যথেষ্ট ফুটপাথ দরকার। মেট্রো রেল হওয়ার আগে বাসসেবায় শৃঙ্খলা আনতে হবে।
ঢাকায় মোটরসাইকেল বাড়ছে দিল্লি, হ্যানয়, ব্যাংককের মতো। মানুষ নিরুপায় হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এসব বাহন ব্যবহার করছে।
পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. সামছুল হক বলেন, নেপালের কাঠমাণ্ডুসহ বিভিন্ন দেশে সড়ক দুর্ঘটনার বড় কারণ বেপরোয়া মোটরসাইকেল। পরিকল্পনা মতো কাজ না হওয়ায় মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার বাড়ছে। অথচ এখানে দরকার সমন্বিত ও বৃত্তাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। কমিউটার ট্রেন বাড়ানো যায়।
পাঁচ মেট্রো রেল হবে, একটির কাজ হয়েছে ১০% : ঢাকাকে সচল করতে পাঁচটি পথে মেট্রো রেল নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে আরএসটিপিতে। এতে বিনিয়োগ লাগবে এক লাখ ৫৯ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা। মেট্রো রেলের এ পাঁচটি রুটের মধ্যে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকা গণপরিবহন কম্পানির তত্ত্বাবধানে এটির কাজ চলছে। প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।
উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে মিরপুর হয়ে আগারগাঁও পর্যন্ত রেলপথের প্রথম অংশ ২০১৯ সালের মধ্যে চালু করা সম্ভব হবে বলে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা আশা করছেন। রেলপথে ট্রেন কেনার জন্য ক্রয়চুক্তি হয়ে গেছে। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, মেট্রো রেল স্থাপনের সার্বিক অগ্রগতি এ পর্যন্ত ১০ শতাংশ।
দুটি বিআরটির একটি হচ্ছে : দুটি বিআরটি নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে আরএসটিপিতে। তার মধ্যে গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর সড়ক, মগবাজার, শান্তিনগর, গুলিস্তান হয়ে ঝিলমিল পর্যন্ত হবে বিআরটি-৩। এ অংশের মধ্যে গাজীপুর-বিমানবন্দর সড়ক অংশের কাজ শুরু হয়েছে। এ অংশে উত্তরার হাউজ বিল্ডিং থেকে টঙ্গী চেরাগ আলী পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার ও ১০ লেনের টঙ্গী সেতু নির্মাণকাজ শুরু হতে যাচ্ছে। গত ১৯ অক্টোবর চীনের জিয়াংসু প্রোভিনশিয়াল ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৯৩৫ কোটি টাকা। ফ্লাইওভারটি সাড়ে তিন কিলোমিটার হবে ছয় লেনের এবং এক কিলোমিটার হবে দুই লেনের। সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী ৩০ মাসের মধ্যে ফ্লাইওভার ও সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে। বিআরটি-৩-এর বাকি অংশ বিমানবন্দর সড়ক-ঝিলমিল অংশের বিস্তারিত নকশা হয়েছে। বিআরটি-৭ নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ থেকে ইস্টার্ন বাইপাস হয়ে আশুলিয়া পর্যন্ত।
ছয় এক্সপ্রেসওয়ের দুটির কাজ চলছে : মেট্রো রেল ও বিআরটি রাজধানীতে যাত্রী পরিবহনের চাহিদার ৬৪ শতাংশ পূরণ করতে পারবে। বাকি ৩৬ শতাংশ চাহিদা মেটাতে ছয়টি এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ এবং বেশ কিছু সড়ক নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে। চার দফায় ৯৬ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে এ ক্ষেত্রে। ছয়টি এক্সপ্রেসওয়ে পূর্ণ বা আংশিক ঢাকায় থাকবে। ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ের ভৌত কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পে ব্যয় হবে ছয় হাজার ২৫২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। যাত্রাবাড়ী ইন্টারসেকশন থেকে ইকুরিয়া-বাবু বাজার সংযোগ সড়কসহ মাওয়া পর্যন্ত এবং পাচ্চর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত হবে এটি। প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত চার লেনের এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর সঙ্গে যোগ হবে। এটি চালু হবে ২০১৯ সালের এপ্রিলে। এই এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে যাত্রাবাড়ী থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা যেতে সময় লাগবে ৪২ মিনিট। ছয়টি ফ্লাইওভার ও ১৫টি আন্ডারপাসবিশিষ্ট নির্মিতব্য এক্সপ্রেসওয়ের কোথাও ট্রাফিক ক্রসিং থাকবে না। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন-পশ্চিম এই প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করেছে।
ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক কর্নেল মো. তৌহিদ হোসেন জানান, প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৩০ শতাংশ। মাটি ভরাটের কাজ চলছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো কাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে পদ্মা নদীর দুই পারে কাজ চলছে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পসূত্রে জানা গেছে, এ যাবৎ প্রকল্পের অগ্রগতি ৯ শতাংশ। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল হয়ে নবীনগর মোড় ইপিজেড হয়ে চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে। গত মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সরকারিভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সম্পর্কিত খবর

ব্যর্থ মেহেদী হাসান মিরাজ


বেশি দামে আরো ১০ মিলিয়ন ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী করার ইঙ্গিত দিয়ে নিলামের মাধ্যমে আরো ১০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণার দিনই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হস্তক্ষেপ করবে। তাঁর ভাষায়, ‘আমরা বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। প্রয়োজন হলে ডলার কিনব, আবার প্রয়োজন হলে বিক্রিও করব।
খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এর মাধ্যমে একদিকে যেমন বাজারে ‘আপওয়ার্ড সিগন্যাল’ দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে চাহিদা-জোগানের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা চলছে। এতে করে ডলারের রেট একদিকে পুরোপুরি বাজারের ওপর নির্ভরশীল থাকছে, অন্যদিকে প্রয়োজন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিগত উপস্থিতিও বজায় থাকছে। এই কৌশল মুদ্রাবাজারে অস্থিতিশীলতা নিয়ন্ত্রণ এবং আইএমএফের শর্ত পূরণ উভয় উদ্দেশেই সহায়ক হিসেবে কাজ করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী করার ইঙ্গিত দিয়ে নিলামের মাধ্যমে আরো ১০ মিলিয়ন বা এক কোটি ডলার কিনেছে। গত ২৩ জুলাই এই নিলামে কাট-অফ রেট নির্ধারণ করা হয় ১২১.৯৫ টাকা, যা আগের তুলনায় ০.৪৫ টাকা বেশি। এর মাধ্যমে মাত্র আট দিনের ব্যবধানে নিলামে ডলারের রেট উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হলো। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘বিভিন্ন ব্যাংকের দর দেখে ১২১ টাকা ৯৫ পয়সায় এক কোটি ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য একজন কর্মকর্তা জানান, এটা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৌশলগত পদক্ষেপ। এই নিলামে ডলারের কাট-অফ রেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১২১.৯৫ টাকা।
ব্যাংকগুলোর অংশগ্রহণ ও বাজারে প্রতিক্রিয়া : শীর্ষস্থানীয় একটি বেসরকারি ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিলামে অংশ নেওয়ার জন্য আমাদের আমন্ত্রণ জানায়। তবে এবার আগের মতো অনেক ব্যাংক আগ্রহ দেখায়নি। কারণ অনেক ব্যাংক ধারণা করছে, সামনে ডলারের দাম আরো বাড়বে। তাই তারা অপেক্ষা করছে। চড়া দর সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংক মাত্র ১০ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করতে পেরেছে। এ থেকেই বোঝা যায়, বাজারে প্রত্যাশা কিভাবে গড়ে উঠছে।’
ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শেখ মোহাম্মদ মারুফ মনে করেন, এ মুহূর্তে ব্যাংকগুলো চাচ্ছে, যে ডলার রয়েছে সামনে সেটা দিয়েই দায় পরিশোধ করবে। তা ছাড়া চলতি মাসেই বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো প্রায় ৫০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। যে কারণে বাণিজ্যিক ব্যাংক ডলার বিক্রি করতে তেমন আগ্রহী ছিল না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
মারুফ বলেন, ‘বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে যা উদ্বৃত্ত ডলার ছিল তা বাংলাদেশ ব্যাংককে দিয়েছে। এটা দিয়ে বোঝায় যে ব্যাংকের কাছে যে পরিমাণ উদ্বৃত্ত ডলার ছিল তা কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়ে গেছে এবং যে পরিমাণ তারল্য রয়েছে, আসলে এত দরকার নেই।’
বাজার পরিস্থিতি ও এলসির চাপ : পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সম্প্রতি ডলারের বাজার কিছুটা টাইট। কারণ ব্যাংকগুলো আমদানি এলসি খোলার পরিমাণ বাড়াচ্ছে। তবে আগামী সপ্তাহে ডলারের প্রবাহ বাড়লে তারল্য পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করছি।’ তিনি বলেন, ‘ডলারের বাজার স্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করে। সম্প্রতি মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাবে না বলেই আমাদের বিশ্বাস। আগের অস্থিরতা অনেকটাই কেটে গেছে, তবে আরো কিছুদিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা দরকার।’
স্পট ও আন্ত ব্যাংক বিনিময় হার : বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২৩ জুলাই স্পট বিনিময় হার ছিল ১২১.৯৪ টাকা। আন্ত ব্যাংক বাজারে ডলার লেনদেন হয় ১২১.৬০ থেকে ১২২.০২ টাকার মধ্যে। শীর্ষস্থানীয় আরেক ব্যাংকের কর্মকর্তা বলেন, ‘বুধবার আন্ত ব্যাংক বাজারেই ডলারের দাম ১২২ টাকা ছাড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আপওয়ার্ড সিগন্যালের ফলে আগামীকাল এটি আরো বাড়তে পারে।’
আইএমএফের শর্তে বাজারভিত্তিক নীতি : বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী এক কর্মকর্তা জানান, আইএমএফের ঋণচুক্তির আওতায় এখন আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি হস্তক্ষেপ করে নির্দিষ্ট রেটে ডলার কেনে না। মে মাস থেকে বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু হওয়ায় এখন নিলামের মাধ্যমে ডলার কেনা হয়। এতে করে ডলারের মূল্য নির্ধারণে বাজার প্রভাবশালী ভূমিকা রাখে।
তিনি বলেন, ‘আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজেরা রেট নির্ধারণ করত। এখন মার্কেট রেটেই লেনদেন হচ্ছে। এই পদ্ধতিই দীর্ঘ মেয়াদে বাজারকে আরো স্বচ্ছ করবে।’

ফিরে দেখা ২৫ জুলাই ’২৪
মানবাধিকার লঙ্ঘন তদন্তে সহযোগিতার প্রস্তাব জাতিসংঘের
নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে মানবাধিকার লঙ্ঘন তদন্তে সহযোগিতার প্রস্তাব দেয় জাতিসংঘ। ২০২৪ সালের ২৫ জুলাই জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে এই প্রস্তাব দেন। অন্যদিকে ভারতের নয়াদিল্লিতে এক ব্রিফিংয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় উল্লেখ করে বাংলাদেশে শিগগিরই শান্তি ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে হতাহতের ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্ত চেয়েছে বিএনপিও।
এদিকে এদিনই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে প্রবাসী ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যে বিক্ষোভ করে তাদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য চায় সরকার। বিশ্বের নানা দেশে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাস, হাইকমিশন এবং অনাবাসিক মিশনগুলোর মাধ্যমে হোস্ট গভর্নমেন্টের কাছে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এদিন সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা খোলা ছিল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিস। রাজধানীতে দূরপাল্লার গণপরিবহনে যাত্রীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। কারফিউ বলবৎ থাকায় রাজধানীতে ছিল কঠোর সেনা টহল।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) তথ্য অনুযায়ী, এদিন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আর কেবল কোটা সংস্কারের ইস্যুতে সীমাবদ্ধ নেই।’ তিনি বলেন, ‘প্রজ্ঞাপন জারির সঙ্গেই এই আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটবে না।
অন্যদিকে ২৩ জুলাই (২০২৪) প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে আংশিক বিজয় অর্জিত হয়েছে বলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানায় ‘সাধারণ শিক্ষার্থী মঞ্চ’। বিবৃতিতে ৯১ জন শিক্ষার্থী স্বাক্ষর করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আটটি বার্তা দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে হতাহতদের তালিকা তৈরি, হত্যা ও হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খুলে দেওয়ার জন্য চাপ তৈরি, হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের সহযোগিতা, রংপুরের আবু সাঈদসহ নিহত সবার কবর জিয়ারত, রুহের মাগফিরাত কামনা এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো।
২৫ জুলাই সারা দেশে ইন্টারনেট চালু, কারফিউ তুলে দেওয়াসহ ‘জরুরি’ চার দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষ হয়। তবে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে না পারায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেনি তারা। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে আরেক অংশের একটি বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। এর সমন্বয়ক হান্নান মাসুদের বরাত দিয়ে ওই বিবৃতিতে বলা হয়, পরদিন ২৬ জুলাই বাদ জুমা সারা দেশে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রার্থনা ও শোক মিছিল করা হবে।
নিহত ১৭০ জনের বেশি, আহত হাজারের বেশি— জাতিসংঘ : জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হালনাগাদ তথ্য থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে ১৭০ জনেরও বেশি লোক নিহত এবং হাজারের বেশি আহত হয়েছে। তাদের অনেকে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সরকারের নীতির বিরুদ্ধে ছাত্র ও তরুণদের প্রতিবাদ কর্মসূচির পর অনেকে নিখোঁজ রয়েছে। অন্তত দুজন সাংবাদিক নিহত এবং আরো অনেকের আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের কয়েক শ লোকের গ্রেপ্তার হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এদিনই এক যৌথ বিবৃতিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পূর্ণ জবাবদিহির আহবান জানান জাতিসংঘের ১৩ জন স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞ। তাঁরা বাংলাদেশে সহিংস দমন-পীড়নের অভিযোগ এনে তা বন্ধ করার আহবান জানান।
ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রো রেল স্টেশন পরিদর্শনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী, বিচার চাইলেন জনগণের কাছে : এদিন সকালে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে মেট্রো রেল স্টেশন পরিদর্শন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন ঘুরে দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। এ সময় তাঁকে চোখের পানি মুছতেও দেখা যায়। পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের জনগণকে তাদের (দেশব্যাপী তাণ্ডবের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের) বিচার করতে হবে। আমি জনগণের কাছে ন্যায়বিচার চাইছি। ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দেওয়ার মতো আমার আর কোনো ভাষা নেই।’
মামলা ও গ্রেপ্তার : ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সূত্র দিয়ে দেশের গণমাধ্যমগুলো জানায়, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে নাশকতার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে এদিনও অভিযান অব্যাহত ছিল। এদিন বিকেলে রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোড থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য আন্দালিব রহমান পার্থকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রসঙ্গ শুল্ক
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২৯ জুলাই চূড়ান্ত আলোচনা
নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রধান বাণিজ্য আলোচনাকারী সংস্থা ইউনাইটেড স্টেটস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইউএসটিআর) বাংলাদেশকে আগামী ২৯ জুলাই তৃতীয় ও চূড়ান্ত শুল্ক আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সংবাদ সংস্থা বাসসকে এই তথ্য জানিয়েছেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান। তিনি জানান, এর আগে বাংলাদেশ ২২ জুলাই ইউএসটিআরের কাছে নিজেদের অবস্থানপত্র পাঠায় এবং ২৬ জুলাই চূড়ান্ত দফার আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দেয়।
বাণিজ্যসচিব জানান, ইউএসটিআর ২৯ জুলাই দিন ধার্য করেছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের জন্য বিদ্যমান ৩৫ শতাংশ শুল্ক হার হ্রাস করবে। কারণ এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র জাপানের জন্য ১৫ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার জন্য ১৯ শতাংশ, ভিয়েতনামের জন্য ২০ শতাংশ এবং ফিলিপাইনের জন্য ১৯ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করেছে।
বাংলাদেশ এরই মধ্যে মার্কিন পণ্য, যেমন—তুলা, গম, তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), বিমান ও অন্যান্য কৃষিপণ্য শুল্কমুক্ত আমদানির প্রস্তাব দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে বাংলাদেশ ২০ জুলাই মার্কিন গম সরবরাহকারীদের সঙ্গে সাত লাখ টন গম আমদানির চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার কাছে সাংবাদিকরা শুল্ক আলোচনার সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে চান। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ নিয়ে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে, এমন কোনো কাজ করা হবে না।
শুল্ক আলোচনায় বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন প্রচারণা নাকচ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে আমরা কেন এমন কাজ করব? তাহলে তো আন্ত মন্ত্রণালয় মিটিংয়ের দরকার হয় না। কিছু জিনিস মেনে নিয়ে কাজটা করে ফেললেই তো হয়ে যায়। সম্পূরক শুল্কের মতো আন্তঃরাষ্ট্রীয় বিষয়গুলোতে লবিইস্ট নিয়োগ করে ভালো ফল পাওয়া যায় না।’