সন্তান প্রসবের প্রহর গুনছিলেন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কিয়েত ইয়ো পিন গ্রামের এক নারী। ওই নারী প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করলেও নবজাতকের মুখ দেখার জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে ওই বাড়িতে অপেক্ষা করছিল স্বজনরা। কিন্তু একদল সেনা সদস্যের বর্বরতায় সেই নবজাতকের আগমন-মুহূর্তটি দুঃস্বপ্ন হয়ে ধরা দেয়। রাখাইনের নার সার কিউ গ্রাম থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এক রোহিঙ্গা তরুণী সেদিনের সেই নৃশংস ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) একটি তদন্তদলের কাছে।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের রিপোর্ট
হত্যা ধর্ষণ নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র
মেহেদী হাসান

এটি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী দেশটির রাখাইন রাজ্যের মংডুর উত্তরের একটি এলাকায় রোহিঙ্গা নারীদের গণধর্ষণ, শিশু-তরুণসহ সব বয়সী মানুষকে হত্যা, নির্মম নির্যাতন, গুম করাসহ মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন ঘটিয়েছে। গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের সাক্ষাত্কারের ভিত্তিতে প্রণীত জাতিসংঘের ওএইচসিএইচআরের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে গতকাল শুক্রবার।
জাতিসংঘের মানবাধিকার তদন্তকারী একটি দল সম্প্রতি বাংলাদেশে ২০৪ জন রোহিঙ্গার সাক্ষাত্কার নিয়েছে।
জাতিসংঘ জানায়, রোহিঙ্গা শিশুদের ভয়ংকর নির্মমতার শিকার হওয়ার তথ্য মিলেছে। আট মাস, পাঁচ বছর ও ছয় বছর বয়সী তিন শিশুর তথ্য উল্লেখ করে জাতিসংঘ বলেছে, তাদের ছুরি দিয়ে জবাই করা হয়েছে। এক মা বর্ণনা দিয়েছেন কিভাবে তার পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে তাকে ধর্ষণ থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করেছিল। তিনি বলেন, তাঁকে ধর্ষণ করতে আসা ব্যক্তি একপর্যায়ে লম্বা একটি ছুরি বের করে এবং তার মেয়ের গলা কেটে ফেলে।
অন্য এক ঘটনায় পাঁচজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা মিলে এক নারীকে ধর্ষণের সময় তার আট মাস বয়সী শিশুকে মেরে ফেলে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর সাম্প্রতিক সহিংসতার মাত্রা নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার জায়িদ রাদ আল হুসেইন। তিনি বলেন, ‘শিশুদের ওপর ভয়ংকর নির্মমতা সহ্য করার মাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে। কতটা ঘৃণা থাকলে মায়ের দুধের জন্য কান্নারত একটি শিশুকে এক লোক ছুরি দিয়ে হত্যা করতে পারে এবং ওই মাকে ধর্ষিত হওয়ার সময় নিজের শিশুসন্তানকে হত্যার দৃশ্যও দেখতে হয়! যে নিরাপত্তা বাহিনীর তাঁকে রক্ষা করার কথা, তারাই তাঁকে ধর্ষণ করে! এটি কেমন অভিযান?’
জায়িদ রাদ আল হুসেইন বলেন, ‘আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বলি তারা যেন সর্বশক্তি নিয়ে আমার সঙ্গে মিলে মিয়ানমারের নেতৃত্বের প্রতি এ ধরনের সামরিক অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানায়। অভিযোগের যে ব্যাপকতা ও মাত্রা তা অবশ্যই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো প্রতিক্রিয়ার দাবি রাখে।’
জাতিসংঘ জানায়, বারবার আহ্বান সত্ত্বেও মিয়ানমার সরকার জাতিসংঘের ওএইচসিএইচআরকে রাখাইন রাজ্যে নির্বিঘ্নে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার জায়িদ রাদ আল হুসেইন তাঁর দপ্তরের কিছু কর্মীকে বাংলাদেশের মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকায় পাঠান।
ঢাকায় কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, জাতিসংঘের ওএইচসিএইচআরের একটি দল গত ৮ থেকে ২৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি নিয়ে তাদের মতো করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে।
জাতিসংঘ বলেছে, গত ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের তিনটি সীমান্ত চৌকিতে হামলার পর সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক অভিযান এবং অবরুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সাক্ষাত্কার নেয় ওই দলটি। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বরাবরই বলছে, ৯ অক্টোবরের পর তারা ওই অঞ্চলে অপরাধীদের খোঁজে অভিযান চালিয়েছে। তবে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লিখিত বিবরণ থেকে স্পষ্ট যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, পুলিশ ও কিছু ক্ষেত্রে বেসামরিক লোকজন অভিযানের নামে বাড়িঘর, স্কুল, বাজার, দোকানপাট, মাদরাসা ও মসজিদ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছে, শুধু বসতবাড়ি ও ধর্মীয় উপাসনালয়ই নয়, তাদের খাবার ও খাবারের উত্স যেমন ধানক্ষেত ধ্বংস করেছে, গবাদি পশু ছিনিয়ে নিয়ে গেছে সেনারা।
প্রতিবেদনের একটি অংশের উদ্ধৃতি দিয়ে ওএইচসিএইচআর জানায়, ‘বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা লোকজনের অনেক সাক্ষ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এটি নিশ্চিত যে সেনাবাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবেই রোহিঙ্গাদের ঘরের মধ্যে আটকে রেখে আগুন দিয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রে আগুন লাগানো ঘরে রোহিঙ্গাদের ঢুকতে বাধ্য করেছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘বেশ কয়েকটি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছে, সেনাবাহিনী বা রাখাইন গ্রামবাসী বয়স্ক, প্রতিবন্ধীসহ রোহিঙ্গা পরিবারগুলোর সব সদস্যকে ঘরে আটকে আগুন দিয়ে সবাইকে মেরে ফেলেছে।’
ওএইচসিএইচআরের প্রতিবেদনে বলা হয়, নিরাপত্তা বাহিনীর নির্বিচার ও লাগাতার গুলিবর্ষণের সময় অনেক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। আবার অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে এলাকা ছাড়ার সময় নিহত হয়। যারা গুরুতর আহত হয়েছে তাদের কোনো ধরনের জরুরি চিকিত্সা পাওয়ার সুযোগ ছিল না। ওএইচসিএইচআরের প্রতিনিধিদলকে সাক্ষাত্কার দেওয়া অনেকেই মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা দেখার পর থেকে অত্যন্ত ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় আছে। মিয়ানমারে তাদের অনেকের প্রিয়জনদের সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে গেছে বা তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। ওই ব্যক্তিদের পরিণতি কী হয়েছে তা তারা জানে না। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা সেখানে রেখে আসা স্বজনদের নিয়ে বিশেষভাবে চিন্তিত।
জাতিসংঘ জানায়, মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের অনেকেই বলেছে, সেখানে তাদের আটক করে নির্যাতন বা ধর্ষণের সময় বলা হতো—‘তোরা বাংলাদেশ থেকে এসেছিস এবং বাংলাদেশেই তোদের ফিরে যাওয়া উচিত।’ অথবা ‘তোর আল্লাহ তোকে কিভাবে বাঁচাবে? দেখ, আমরা তোকে কী করি?’
ওএইচসিএইচআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯ অক্টোবরের পর থেকে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। বরং এটি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের সমাজ থেকে বিচ্যুত করার ধারাবাহিক নীতির অংশ।
প্রতিবেদন থেকে ধারণা পাওয়া যায়, গত অক্টোবরে শুরু হওয়া মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান জানুয়ারিতেও অব্যাহত ছিল। হয়তো এর ভয়াবহতার মাত্রা কিছুটা কমেছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল : জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, ‘প্রার্থনা করা, পরিবারের সদস্যদের জন্য মাছ ধরা কিংবা নিজেদের ঘরে ঘুমানোর সময় অনেককে হত্যা করা হয়েছে। দুই বছর বয়সী শিশু থেকে শুরু করে আশি বছরের বৃদ্ধাকে পর্যন্ত নির্মমভাবে পেটানো হয়েছে। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের এসব ঘটনার নির্দেশদাতাদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘মিয়ানমার সরকারকে অনতিবিলম্বে তার নিজের লোকদের ওপর ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন থামাতে হবে। যা ঘটেছে তা অস্বীকার করার নীতি ছেড়ে মিয়ানমার সরকারকে অবশ্যই এসব ঘটনা স্বীকার করে ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার, ক্ষতিপূরণ ও নিরাপত্তার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’
ওএইচসিএইচআর বলেছে, প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের ওপর যে মাত্রায় সহিংসতার তথ্য প্রকাশ পেয়েছে তা মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে অত্যন্ত সাদৃশ্যপূর্ণ।
অক্টোবর থেকে ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে : গত অক্টোবর মাস থেকে প্রায় ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে গত বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিচ এমন তথ্য তুলে ধরেন। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা দপ্তরের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, গত অক্টোবর মাসে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর থেকে সেখানে অন্তত ৯২ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, রাখাইন রাজ্যের উত্তরাংশে জাতিসংঘ ও অন্য সংস্থাগুলোর ত্রাণ তত্পরতা তিন মাস ব্যাহত হওয়ার পর মিয়ানমার সরকার আবার তাদের কিছু কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি দিয়েছে। তবে বিদেশি কর্মীরা তাদের চলাফেরায় বিধিনিষেধ অনুধাবন করায় সেখানে স্থানীয় কর্মীদের মাধ্যমেই বেশির ভাগ গ্রামে খাদ্য ও অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।
মুখপাত্র আরো বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতীয়তা, নৃতাত্ত্বিক পরিচয়, ধর্ম বা নাগরিক মর্যাদা নির্বিশেষে সবার কাছে প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর সুযোগ দিতে সেখানে চলাফেরায় বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছে জাতিসংঘ।
তদন্তের আশ্বাস সু চির : জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চি রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন-নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার যায়িদ রা’দ আল-হোসেইন গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, ‘প্রায় দেড় ঘণ্টা আগে আমি অং সান সু চির সঙ্গে কথা বলেছি। সামরিক বাহিনীর ওপর চাপ সৃষ্টি ও চলমান অভিযান বন্ধ করতে আমি তাঁকে তাঁর সব ধরনের সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছি। তিনি আমাকে বলেছেন, এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে। তিনি বলেছেন, তাঁদের বিস্তারিত তথ্য প্রয়োজন।’
সম্পর্কিত খবর

ঘরে ঘরে জ্বর, আতঙ্ক ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া নিয়ে
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর পশ্চিম আগারগাঁওয়ের বাসিন্দা ফারুক আহমেদ টানা তিন দিন ধরে জ্বরে ভুগছেন। ফার্মেসির ওষুধে জ্বর না কমায় তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। ফারুক জানান, প্রথমে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন, পরে তাঁর স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তানও জ্বরে ভুগতে শুরু করে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালের বহির্বিভাগে কথা হয় ফারুক আহমেদের সঙ্গে।
চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তন ও বাতাসে আর্দ্রতার ওঠানামার কারণে ভাইরাসজনিত জ্বর বাড়ছে। শিশুসহ সব বয়সী মানুষ এতে আক্রান্ত হচ্ছে। ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল এবং চিকিৎসকের চেম্বারে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।
সোমবার ও মঙ্গলবার রাজধানীর ডিএনসিসি হাসপাতাল, শিশু হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে দেখা গেছে, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি শিশু এখন জ্বর নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছে।
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘একসঙ্গে বিভিন্ন ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। সাধারণ ভাইরাল জ্বরের পাশাপাশি ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও রোটা ভাইরাসও বাড়ছে।
রাজধানীর শিশু হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি বলে জানান হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এ বি এম মাহফুজ হাসান আল মামুন। তিনি বলেন, ‘এখন ভাইরাল জ্বরের মৌসুম চলছে। পাশাপাশি চলছে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মৌসুমও। বেশির ভাগ রোগী তীব্র জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, চোখ লাল হওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া, শরীরে র্যাশ—এসব উপসর্গ নিয়ে আসছে। অনেকের ডেঙ্গুর উপসর্গ থাকলেও পরীক্ষায় ধরা পড়ছে না।’
জ্বর কেন হয়?
চিকিৎসকরা বলছেন, জ্বর নিজে কোনো রোগ নয়, এটি একটি উপসর্গ বা সতর্কবার্তা। সাধারণ ঠাণ্ডা বা সর্দিকাশির পাশাপাশি ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণে জ্বর হতে পারে। করোনাভাইরাস, ডেঙ্গু, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া—এসব রোগের প্রাথমিক লক্ষণ জ্বর। টিকা নেওয়া, টিউমার, ফোড়া, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, প্রস্রাবের সংক্রমণ, পিরিয়ড বা মানসিক চাপ থেকেও জ্বর হতে পারে।
ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘বাইরের প্রচণ্ড গরম থেকে ফিরে অনেকেই এসির নিচে চলে যায় বা ঠাণ্ডা পানি পান করে। এই গরম-ঠাণ্ডার তারতম্য থেকেই জ্বর-সর্দি হতে পারে। প্রতিটি পরিবারেই এখন মৌসুমি জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। এ ছাড়া বন্যাকবলিত এলাকায় টাইফয়েড ও পানিবাহিত রোগও বেড়েছে।’
ডা. লেলিন আরো বলেন, ‘এসব জ্বর সাধারণত প্যারাসিটামল খেলেই সেরে যায়। অ্যান্টিবায়োটিকের দরকার পড়ে না। তবে জ্বর যদি সপ্তাহখানেকের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।’
সাধারণ জ্বর কিভাবে বুঝব?
বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. ফজলে রাব্বি চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আগে কভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে জ্বরের সঙ্গে কাশি, গন্ধ না পাওয়া, শ্বাসকষ্ট দেখা যেত। এখন অনেক কভিড রোগীও গায়ে ব্যথা ও মাথাব্যথার উপসর্গ নিয়ে আসছে। তাই পরীক্ষা ছাড়া রোগ নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।’
ডা. ফজলে রাব্বি আরো বলেন, ‘ডেঙ্গুতে সাধারণত মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, পেট ব্যথা ও পাতলা পায়খানা হয়। অন্যদিকে চিকুনগুনিয়ায় গায়ে বেশি ব্যথা, বিশেষ করে জয়েন্টে ব্যথা ও দ্রুত র্যাশ দেখা দেয়। সাধারণ ভাইরাল জ্বরে হালকা গায়ে ব্যথা ও সর্দিকাশি হয় এবং তা চার দিনের মধ্যে সেরে যায়। চার দিনের বেশি জ্বর থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।’

জুলাই ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর শাহবাগে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজন গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বারডেম হাসপাতালের পাশের ওই কার্যালয়ের কক্ষে ভাঙচুর চালান।
সূত্র জানায়, হামলার শুরুতে তাঁরা প্রথমে ওই কার্যালয়ে তালা লাগান। পরে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সেখানে ভাঙচুর করা হয়।
তবে রাতে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল আকবর জানান, টাকা না পেয়ে আহতরা ক্ষুব্ধ হয়ে অফিসে তালা লাগিয়ে দেন।
ফাউন্ডেশনের একজন কর্মচারী খারাপ আচরণ করলে সেখানে ভাঙচুর করা হয় বলে আহতদের কয়েকজন জানিয়েছেন।
ভাঙচুরের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, অনেক চেয়ার এলোমেলো পড়ে আছে। পানির ফিল্টার ও তিনটি দরজার গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়েছে। মেঝেতে কাচের টুকরা ছড়িয়েছিটিয়ে আছে।
গত বছর আন্দোলনে গিয়ে আহত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত চিকিৎসাধীন জানিয়ে মামুন হোসেন নামের একজন বলেন, ‘আমার মাথার ভেতরে গুলি, ১১ মাস যাবৎ চিকিৎসাধীন। আমাদের জীবনের নিশ্চয়তা কী? তো কিসের জুলাই ফাউন্ডেশন?’
সাভার সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আহত নাজমুল হোসেন বলেন, ‘দ্বিতীয় ধাপের টাকার জন্য সাত মাস ধরে ঘুরছি। টাকা দেওয়া হচ্ছে না। জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইও বারবার ডেট দিয়ে আমাদের টাকা দিচ্ছেন না।’
জানতে চাইলে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল আকবর বলেন, ‘জুলাই আহতদের অনেকে এখনো মানসিক ট্রমার মধ্যে আছেন।
এই ফাউন্ডেশনে সাত কোটি টাকা আছে জানিয়ে কামাল আকবর বলেন, ‘ধারাবাহিকভাবে আহত ও শহীদ পরিবারগুলোকে অনুদান দেওয়ার চেষ্টা করছি।’ তা ছাড়া আহতদের তালিকা থেকে ৩৯ জন ভুয়া আহতকে বাদ দিতে এবং শহীদদের তালিকা থেকে চারজনের নাম বাদ দিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার
নির্বাচনের তারিখ আমি নিজেই জানি না
নিজস্ব প্রতিবেদক

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে তা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন এখনো জানেন না। গতকাল মঙ্গলবার সকালে কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। পরে বিকেলে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ডেমোক্রেসি (আরএফডি) আয়োজিত ফল উৎসব ও সাংবাদিক অ্যাকসেস কার্ড প্রদান অনুষ্ঠানেও তিনি একই কথা বলেন।
এ ছাড়া সিইসি সাংবাদিকদের জানান, আগামী নির্বাচনে ভোটের প্রচারে এআইয়ের অপব্যবহার রোধ করতে চায় নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন ভবনে কানাডার হাইকমিশনারের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টার সাক্ষাৎ শেষে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিসইউজ অব এআই আমাদের জন্যও হুমকি। এ বিষয়ে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে কানাডা।
এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমাদের বিভিন্ন সেক্টরে যে প্রস্তুতি নিয়েছি, আগামী নির্বাচনে আমরা ঠিকমতো ডেলিভার করতে পারব কি না সে বিষয়গুলো জানতে চেয়েছেন তাঁরা। আমাদের প্রস্তুতির বিষয়টা বিস্তারিত জানিয়েছি। বিশেষ করে দেশজুড়ে ভোটার সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করতে যাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছি। ভোটার সচেতনতা ক্যাম্পেইনের পাশাপাশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণ, এজেন্টদের প্রশিক্ষণসহ সার্বিক কাজে কানাডা পাশে থাকবে বলে জানিয়েছে।
সিইসি বলেন, ‘কানাডা আমাদের সহায়তার জন্য প্রস্তুত এবং আমাদের আলোচনা অব্যাহত থাকবে। তারা চায় যে ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল ইলেকশন যেন হয়। আমাদের ভোটার নিবন্ধনে নারীদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছে, পার্বত্য এলাকায় ভোটার সচেতনতামূলক কাজের বিষয়ে জানতে চেয়েছে। আমাদের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছি।’
নির্বাচন কবে বা ভোটের সম্ভাব্য সময়সীমা বিষয়ে কানাডার হাইকমিশনার জানতে চেয়েছেন কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, “উনি জানতে চেয়েছেন ভোটের স্পেসিফিক ডেট হয়েছে কি না। আমি বলেছি ‘নো’। সময়সীমা নিয়ে কোনো আলাপ হয়নি। সময়সীমা সম্পর্কে আপনারা যা জানেন, আমিও তাই জানি। যেদিন ভোট হবে, তার দুই মাস আগে আমি জানিয়ে দেব।”
নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আসার বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অবজারভার হিসেবে কাজ করার জন্য জিজ্ঞেস করেছি। নীতিমালাও প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। ইইউকে বলা হয়েছে, আগেই যেন জানিয়ে রাখা হয়। তাদের ২৮টি দেশের অবজারভারকে সমন্বয় করে পাঠাতে হবে, এ জন্য আগেভাগে স্বাগত জানিয়েছি।’
পক্ষপাতদুষ্ট বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অনুমোদন দেওয়া হবে না বলেও জানান সিইসি। তিনি বলেন, ‘গত তিনটি নির্বাচনকে যাঁরা সার্টিফিকেট দিয়েছেন তাঁদের (অনুমোদন) দেব কেন? যেসব পর্যবেক্ষক গত তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন খুব সুন্দর হয়েছে বলে সার্টিফিকেট দিয়েছেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে বলেছেন, তাঁদের কি আমাদের নেওয়া উচিত? আমরা দেখে-শুনেই নেব। যাঁরা অভিজ্ঞ, ডিপেন্ডেবল, রিলায়েবল এবং বিভিন্ন দেশে নির্বাচন অবজার্ভ করেছেন, তাঁদের নেব। তিনটি নির্বাচনকে যাঁরা সার্টিফিকেট দিয়েছেন, তাঁদের কোনোমতেই নেওয়া হবে না।’
বিকেলে আরএফইডির অনুষ্ঠানে সিইসি বলেন, ‘আমরা বারবার প্রমাণ করেছি; ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ সালে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পেরেছিলাম। এবারও পারব ইনশাআল্লাহ। আমাদের প্রশাসন, পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে বলব, মানুষের শ্রদ্ধা পুনরুদ্ধারের এটিই সময়। ভাবমূর্তি রক্ষা ও পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ এখন এসেছে।’
সিইসি বলেন, ‘ভোটের নির্দিষ্ট তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি। তবে কমপক্ষে দুই মাস আগেই সব কিছু জানিয়ে দেওয়া হবে, কোন দিন ভোট, কোন দিন মনোনয়ন—এসবসহ।
গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রশংসা করে সিইসি বলেন, ‘আমরা আজকে যা কিছু করছি, তা আপনাদের মাধ্যমেই দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। কানাডার হাইকমিশনারের সঙ্গে আজকে আলাপের সময় দেখি উনি (কানাডার হাইকমিশনার) সব জানেন—ভোটার রেজিস্ট্রেশন, ইউএনডিপির সহযোগিতা, ক্যামেরা, ল্যাপটপ সব কিছু। তার মানে আমাদের সংবাদগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে। এ জন্য আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘সংবাদ পরিবেশনের সময় একটু সচেতন থাকবেন। দেখেছি অনেক সময় ভেতরে পজিটিভ রিপোর্ট থাকলেও হেডলাইন বা স্ক্রলে নেগেটিভ বার্তা থাকে। এতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়, মন খারাপ হয়। দয়া করে শিরোনাম, ক্যাপশন এমন দিন, যাতে মানুষ পজিটিভ বার্তা বুঝতে পারে।’
তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের দাবি বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন কমিশন সাংবাদিকদের সরাসরি অংশগ্রহণে বিভিন্ন ‘ওয়্যারনেস রেইজিং ক্যাম্পেইন’ চালু করবে। আমরা সাংবাদিকদের পার্টনার করে কাজ করতে চাই। সচেতনতামূলক প্রচারে আপনাদের যুক্ত করব। ২০১৮ সালের মতো অভিযোগ আর যেন না ওঠে। প্রশাসন, পুলিশ, প্রিজাইডিং অফিসার, সব কর্মকর্তাকে বলব, এটা ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের সময়।” আরএফইডির সভাপতি কাজী এমাদ উদ্দীনের (জেবেল) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

মিডিয়াকে হুমকি
ক্র্যাব, অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের উদ্বেগ
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই আন্দোলনের এক নেতা কর্তৃক মিডিয়াকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) ও অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্স।
অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের সভাপতি হাসান শরীফ ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সোহেল গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ এবং গণতান্ত্রিক কাঠামোর এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। গণমাধ্যমের কোনো প্রতিবেদনে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে তার প্রতিকার পাওয়ার জন্য দেশে প্রেস কাউন্সিল ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। হুমকি বা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিসর সংকুচিত করা যাবে না।
অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মুক্ত মত প্রকাশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হুমকি কিংবা ভয় দেখানোর চেষ্টা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সংবিধান প্রদত্ত অধিকার লঙ্ঘনের শামিল, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
এর আগে গত সোমবার ক্র্যাব কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল এবং সাধারণ সম্পাদক এম এম বাদশাহ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মিডিয়াকে হুমকি দেওয়ার ঘটনা জুলাইয়ের চেতনার সঙ্গে মানানসই নয়। যেসব কারণে জুলাইয়ের রক্তক্ষয়ী ছাত্র গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল, তার অন্যতম ছিল মত প্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ।
বিবৃতিতে ক্র্যাব নেতারা বলেন, ‘মিডিয়ার ভূমিকায় কেউ সংক্ষুব্ধ হলে তার প্রতিকারের জন্য প্রেস কাউন্সিল রয়েছে। প্রচলিত আইনের বিধি অনুযায়ী আদালতেও যাওয়া যায়। কিন্তু এই হুমকি দেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশের প্রতিবন্ধক বলে আমরা মনে করি।