চার দশক আগের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশের মধ্যে পার্থক্য অনেক। দেশ বদলেছে, জীবন বদলেছে। সেই বদলের ছোঁয়া লেগেছে গ্রামীণ জীবনেও। সত্তরের দশকে অজপাড়াগাঁ বলতে যা বোঝাত, তা এখন খুঁজে পাওয়া কঠিন।
জীবন বদলে গেছে অজপাড়াগাঁয়েও
রাজীব আহমেদ

গ্রামে এখনো দারিদ্র্য আছে, কিন্তু না খেয়ে থাকা মানুষ আর নেই।
বদল এসেছে গ্রামীণ অবকাঠামোতে, খাদ্যের প্রাপ্যতায়, জীবনযাত্রার মানে, যোগাযোগব্যবস্থায়, শিক্ষায় ও স্বাস্থ্যে। কুঁড়েঘরের জায়গায় এসেছে টিনের ঘর। প্রায় প্রতি বাড়িতেই আছে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানার ব্যবস্থা। মহামারি বিদায় নিয়েছে।
চার দশকে সাম্প্রতিকতম পরিবর্তনটি এসেছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। কৃষির বাইরেও দেশের মোট অর্থনৈতিক ইউনিটের ৭১ শতাংশই এখন গ্রামে। শুধু কৃষিকাজ নয়, গ্রামের মানুষ এখন বহু পেশায় নিজেকে যুক্ত করে জীবন বদলে দিচ্ছে। প্রত্যন্ত গ্রামেও চলে গেছে ব্যাংকের সেবা। উদ্যোক্তা হয়ে উঠছে গ্রামের তরুণ-তরুণীরাও।
অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ গত বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, গ্রাম মানেই এখন আর কৃষিকাজ নয়। গ্রামীণ খাতে উন্নয়ন হচ্ছে। কৃষিবহির্ভূত কাজ গ্রাম থেকে শহরে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে এবং ধীরে ধীরে তা বাড়ছে। তিনি বলেন, গ্রামীণ পরিবারগুলো শুধু কৃষি নয়, নানা ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত। এটা আগে ছিল না, এখন হচ্ছে। গ্রাম-শহরের অর্থনৈতিক বিভাজন অনেক কমে গেছে।
বাংলাদেশের প্রথম খানা আয়-ব্যয় জরিপ হয়েছিল ১৯৭৩-৭৪ সালে। ওই জরিপে দেখা যায়, তখন গ্রামের একেকটি খানার (পরিবার) মাসিক গড় আয় ছিল ৪৬৪ টাকা। ২০১০ সালের সর্বশেষ জরিপে দেখা যায়, সেই গড় আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৬৪৮ টাকায়। তখন একটি পরিবার যে আয় করত, এখন তার ২১ গুণ বেশি আয় করে। সেই আয় দিয়ে মানুষ এখন শুধু তার খাদ্য চাহিদাই নয়, অন্য অনেক চাহিদাও পূরণ করছে।
খাদ্য গ্রহণেও এসেছে বৈচিত্র্য। তখন গ্রামের মানুষের খাবার বলতে ছিল ভাত আর ডাল। মাছ, মাংস, ডিম জুটত খুব কম। ১৯৭৩-৭৪ সালে গ্রামের একজন মানুষ দিনে গড়ে মাত্র ৪.৯৩ গ্রাম মাংস খেতে পারত। ডিম খেতে পারত ১.১৬ গ্রাম। এখন সেটা বেড়ে মাংস ১৪.৭ ও ডিম ৫.৮ গ্রাম হয়েছে। মোট খাদ্য গ্রহণের হার দিনে ৬৭৮.৫৩ গ্রাম থেকে বেড়ে এক হাজার গ্রাম ছাড়িয়েছে। মাছ খাওয়ার হার ২৬ গ্রাম থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৬ গ্রাম।
১৯৭৩-৭৪ অর্থবছরে পরিবারগুলো খাদ্যের পেছনে ব্যয় করত তাদের মোট ব্যয়ের ৭৫ শতাংশ। এ ছাড়া ৫.২৬ শতাংশ পোশাক ও পাদুকা, ৮ শতাংশ আলোর পেছনে ব্যয় করত। এখন খাদ্যের পেছনে ব্যয় ৫৯ শতাংশে নেমেছে। অন্যান্য খাতে বেশি ব্যয় করছে গ্রামের মানুষ। এর মধ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন রয়েছে। এমনকি গ্রামের মানুষের ব্যয়ের একটি বড় খাত এখন মোবাইল ফোন। গ্রাম থেকে কুঁড়েঘর বিদায় নেওয়ার পথে। বেশির ভাগ ঘরই এখন টিনের। এর পাশাপাশি কিছু কংক্রিটের ছাদওয়ালা বাড়িও গড়ে উঠেছে। খানা আয়-ব্যয় জরিপ ২০১০ অনুযায়ী, গ্রামের ৮৬.৩৮ শতাংশ ঘরের ছাদই এখন টিনের তৈরি। ৩.৬৫ শতাংশ বাড়ির ছাদ কংক্রিটের। প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই আছে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা। গ্রামের মাত্র ৫.৭৩ শতাংশ মানুষকে এখন খোলা আকাশের নিচে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হয়। ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছে পৌঁছানো গেছে বিশুদ্ধ পানি।
সামগ্রিক অর্থনীতিতে গ্রামীণ অর্থনীতির ভূমিকা বেড়েছে। অর্থনৈতিক শুমারি ২০১৩ অনুযায়ী, ২০০৩ সালে সামগ্রিক অকৃষিমূলক অর্থনীতির মধ্যে পল্লী এলাকার অবদান ছিল ৬২.৬১ শতাংশ। বর্তমানে এ হার বেড়ে হয়েছে ৭১.৪৮ শতাংশ।
গ্রামের অর্থনীতির পরিবর্তনটি চোখে পড়ে বাজারের কোনো মুদি দোকানে গেলেই। সেখানে এখন শুধু চাল, ডাল আর কেরোসিন তেলই নয়, বিক্রি হয় শ্যাম্পু, সুগন্ধি সাবানসহ প্রসাধন সামগ্রীও। গ্রামের মানুষ এখন আর কাঠকয়লা দিয়ে দাঁত মাজে না, মাজে টুথপেস্ট কিংবা নিদেনপক্ষে টুথ পাউডার দিয়ে। চিপস, পানীয়, ফ্রুট ড্রিংক—এমনকি মিনারেল ওয়াটারও পাওয়া যায় গ্রামের বাজারে। বাড়িতে বাড়িতে এখন মোটরসাইকেল। ১৩ কোটি মোবাইল ফোন গ্রাহকের বড় অংশ গ্রামের মানুষ। তাদের কেউ কেউ স্কাইপ ব্যবহার করতেও শিখে গেছে। বিদেশে থাকা স্বজনরা এখন আর টেপ রেকর্ডারে রেকর্ড করে নিজের গলার আওয়াজ পাঠায় না। গ্রামের অল্পশিক্ষিত অনেক তরুণ-তরুণীরও এখন ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট আছে। গ্রামের মানুষ এখন ইন্টারনেট ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের বড় গ্রাহক। প্রায় এক কোটি কৃষকের আছে নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ মানুষ এখন বিদ্যুতের আওতায়। ৮০ লাখ পরিবার সোলার হোম সিস্টেমের মাধ্যমে সৌর বিদ্যুত্ ব্যবহার করে, যা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি। দেশে সৌর বিদ্যুত্ উত্পাদিত হয় ৩৩০ মেগাওয়াট। বিদ্যুতের সঙ্গে গ্রামে গেছে টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটরসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক সামগ্রীও।
গত চার দশকে কৃষিতে বিপ্লব এসেছে। ধান উত্পাদন বেড়েছে তিন গুণ, অন্যান্য ফসলের উত্পাদন বেড়েছে ব্যাপকভাবে। কৃষি এখন শুধু ধান-পাট আর ডালে সীমাবদ্ধ নেই। মাছ উত্পাদনে বাংলাদেশ চলে এসেছে শীর্ষ পাঁচে। গ্রামে গ্রামে গড়ে উঠেছে পোল্ট্রি খামার। মানুষ নিজের পালিত মুরগির চেয়ে বাজার থেকে কেনা ‘ব্রয়লার’ মুরগিই বেশি খায়। শুধু আম-কাঁঠাল নয়, গ্রামে এখন ফলে বাউকুল, স্ট্রবেরির মতো নতুন নতুন অনেক ফল। শুধু লাউ-কুমড়া নয়, গ্রামের কৃষক এখন ক্যাপসিকাম, গ্রীষ্মের টমেটো ফলানোর মতো নতুন নতুন কৃষি-প্রযুক্তি আয়ত্তে এনেছে। শুধু কাস্তে দিয়ে নয়, ধান কাটতে যন্ত্রের ব্যবহারও শুরু হয়েছে কৃষিতে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান কালের কণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশের গ্রামীণ দারিদ্র্য উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। পরিবর্তন এসেছে দারিদ্র্যের ধরনেও। না খেয়ে থাকা মানুষ এখন আর নেই বললেই চলে। উত্তরবঙ্গ থেকে মঙ্গাও বিদায় নিয়েছে। গ্রামে মানুষের পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। গ্রামের বাজারে এখন প্রক্রিয়াজাত ভোগ্যপণ্য পাওয়া যায়। অনেক গ্রামে ডিশ সংযোগ চলে গেছে। গ্রামে গ্রামে এখন রেফ্রিজারেটরের ব্যবহার শুরু হয়েছে। তিনি আরো বলেন, গ্রামে কৃষি শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে। এর পরও ভরা মৌসুমে শ্রমিক পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। এর মানে হলো—তাদের এখন বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
গ্রামীণ অর্থনীতির এই পরিবর্তনের পেছনে রেমিট্যান্স, গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নতি, কৃষির বহুমুখীকরণ ও পোশাক খাতের মতো শ্রমনির্ভর খাত ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। এর পাশাপাশি ক্ষুদ্রঋণ গ্রামে অর্থের প্রবাহ বাড়িয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘সার্বিকভাবে গ্রামীণ জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। তবে যে জায়গায় আমরা যেতে চাই সেখানে যেতে অনেক কাজ করতে হবে।’
সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের ‘অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।
এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।
মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।’
গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।’

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল
বিশেষ প্রতিনিধি

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।
মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮’-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ‘ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮’-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।
প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি) বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।
গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।
অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।
তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।
সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান
বরগুনা প্রতিনিধি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।