<p>মডেল টেস্ট</p> <p>মান ৭০ ♦ সময় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট</p> <p> </p> <p>সৃজনশীল প্রশ্ন</p> <p>গদ্যাংশ ও কবিতাংশ থেকে অন্তত দুটি এবং  উপন্যাস ও নাটক থেকে অন্তত একটি করে মোট সাতটি প্রশ্নের উত্তর দাও : </p> <p><strong>ক</strong><strong>-</strong><strong>অংশ</strong><strong> (</strong><strong>গদ্য</strong><strong>)</strong></p> <p>১। যতীন্দ্রমোহন বাগচী রচিত ‘অন্ধবধূ’ কবিতার বধূটি দৃষ্টিহীন হলেও ইন্দ্রিয় সচেতনতা দিয়ে তার সেই প্রতিবন্ধকতাকে দূর করেছে। তাই অন্ধ হয়েও পায়ের নিচে নরম বস্তুর অস্তিত্ব, কোকিলের ডাক শুনে নতুন আগমন অনুমান, শেওলায় পা রেখে নতুন সিঁড়ি জেগে ওঠার কথা বুঝতে পারে। দৃষ্টিহীন বলে সে নিজেকে ঘরের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে আপন অন্তর্দৃষ্টিকে প্রসারিত করেছে। অনুভবে বধূটি জগতের রূপ-রস-গন্ধ সম্পর্কে জ্ঞান রাখে।</p> <p>ক) ‘পূর্ণিমা তিথি’ শব্দের অর্থ কী?</p> <p>খ) ‘গ্রামে দুই-চারিটি অকর্মণ্য সরকারি লোক থাকা প্রয়োজন’—কেন প্রতাপ সম্পর্কে এরূপ মন্তব্য করা হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>গ) উদ্দীপকের অন্ধ বধূটি ‘সুভা’ গল্পের সুভার সঙ্গে কিভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>ঘ) ‘প্রতিবন্ধী মানুষেরও আশ্রয়ের একটি জগৎ রয়েছে’ মন্তব্যটি উদ্দীপক ও ‘সুভা’ গল্প অবলম্বনে বিশ্লেষণ করো।</p> <p> </p> <p>২। ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধে কামরুল হাসান বাংলাদেশের লোকশিল্প ও লোক ঐতিহ্যের বর্ণনা দিয়েছেন। আগে আমাদের দেশে যে সমব লোকশিল্পের দ্রব্য তৈরি হতো তার অনেকই অত্যন্ত উচ্চমানের ছিল। ঢাকাই মসলিন তার অন্যতম। এই শাড়ি বিলুপ্ত হলেও জামদানি শাড়ি অনেকাংশে সে স্থান অধিকার করেছে। নকশি কাঁথাও আজ লুপ্ত প্রায় গ্রামীণ লোকশিল্প। আপন পরিবেশ থেকেই মেয়েরা তাদের মনের মতো করে কাঁথা সেলাইয়ের অনুপ্রেরণা পেত। আমাদের দেশের কুমারপাড়ার শিল্পীরা পোড়ামাটি দিয়ে নানা প্রকার শৌখিন দ্রব্য যেমন—পুতুল, মূর্তি, আধুনিক রুচির ফুলদানি, ছাইদানি, চায়ের সেট ইত্যাদি গড়ে থাকে। আমাদের দেশের এই যে লোকশিল্প, তা সংরক্ষণের দায়িত্ব আমাদের সবার। কারণ লোকশিল্পের মাধ্যমে আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পারি।</p> <p>ক) মনসুর বয়াতি কোন লোকগাথার প্রখ্যাত কবি?</p> <p>খ) পল্লী সাহিত্যের কোনো প্রাচীন সম্পদ অতীতের সঙ্গে আমাদের সম্বন্ধ লোপ করে দিচ্ছে? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>গ) উদ্দীপকের গ্রামীণ লোকশিল্প ও লোক-ঐতিহ্য ‘পল্লী সাহিত্য’ প্রবন্ধের সঙ্গে কিভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>ঘ) উদ্দীপকের লোকশিল্প সংরক্ষণের যে তাগিদ অনুভূত হয়েছে তা ‘পল্লী সাহিত্য’ প্রবন্ধের লেখকের বক্তব্য সমর্থন করে কি? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।</p> <p>৩। রুমা আর রুবা দুই বোনের মধ্যে খুব ভাব। বাবা-মায়ের আদরের ছায়ায় ওরা বড় হয়। স্কুলে যাওয়ায় পথে বুনোফুল ছিঁড়ে বেণির সঙ্গে গেঁথে রাখে। ফড়িং ধরে। আবার উড়িয়ে দেয়। ফুলের পাপড়ি ছিঁড়ে খাতার ভেতর চাপ দিয়ে রাখে। বর্ষায় দুই বোন ধানক্ষেতের আলের পাশ দিয়ে গড়িয়ে যাওয়া পানি থেকে কুঁচো চিংড়ি ধরে আনে, শুকনো লাকড়ি কুড়িয়ে এনে রান্নাঘরে জমিয়ে রাখে।</p> <p>ক) বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় কোন উপন্যাসের জন্য রবীন্দ্র পুরস্কারে ভূষিত হন?</p> <p>খ) ‘বাক্সের সমুদয় সম্পত্তি’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>গ) উদ্দীপকে ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের কোন দিক প্রকাশ পেয়েছে? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>ঘ) উদ্দীপকটি ‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পের মূলভাবকে সর্ম্পূভাবে ধারণ করে কি? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।</p> <p> </p> <p>৪। মাটির দখলেই খাঁটি জয় নয়, বুঝেছে বিজয়ী বীর,</p> <p>বিজিতের হৃদি দখল করিবে এখন করেছে স্থির।</p> <p>প্রজারঞ্জনে বাবুর দিয়াছে মন,</p> <p>হিন্দুর-হৃদি জিনিবার লাগি করিতেছে সুশাসন,</p> <p>ধরিয়া ছদ্মবেশ</p> <p>ঘুরি পথে পথে খুঁজিয়ে প্রজার কোথায় দুঃখ ক্লেশ।</p> <p>চিতোরের এক তরুণযোদ্ধা রণবীর চৌহান</p> <p>করিতেছে আজি বাবুরের সন্ধান,</p> <p>কুর্তার তলে কৃপাণ লুকায়ে ঘুরিছে যে পথে পথে</p> <p>দেখা যদি তার পায় আজি কোনো মতে</p> <p>লইবে তাহার প্রাণ,</p> <p>শোণিতে তাহার ক্ষালিত করিবে চিতোরের অপমান।</p> <p>ক) বোধন বাঁশিতে সুর দিয়ে কবি কোন চরণ দুটি উচ্চারণ করতে চান?</p> <p>খ) আমাদের দেশে জনশক্তি গঠিত হতে পারছে না কেন? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>গ) উদ্দীপকের রণবীর চৌহানের সঙ্গে ‘উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন’ প্রবন্ধের কার সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>ঘ) উদ্দীপকের সম্রাট বাবুরই ‘উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন’ প্রবন্ধে উল্লিখিত বোধন বাঁশিতে সুর দিতে পারা মানুষ— মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই করো।</p> <p> </p> <p><strong>খ</strong> <strong>অংশ</strong><strong> (</strong><strong>কবিতা</strong><strong>)</strong></p> <p>৫। বঙ্কিমচন্দ্র চক্রবর্তী নবম ও দশম শ্রেণিতে বাংলা পড়ান। তিনি লক্ষ করেছেন, শিক্ষার্থীদের ক্লাসে লিখতে দিলে বেশ গুছিয়ে লিখতে পারে; কিন্তু মুখে কিছু বলতে বললে একটা বাক্যে দু-তিনটি করে ইংরেজি শব্দ ঢোকায়। কথায় কথায় ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করাকে তারা স্মার্টনেসের পরিচয় বলে মনে করে। এ নিয়ে বঙ্কিমবাবু অভিভাবকদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। কেউ কেউ সে জন্য লজ্জিত হলেও একজন তো বলেই বসলেন—‘জানেন দাদা, আমার ছেলের বাংলাটা ঠিক আসে না। ছোটবেলায় ওকে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়িয়েছি তো তাই ওভাবেই বাংলা বলে অভ্যস্ত।’ অভিভাবকের কথা শুনে ক্ষোভে বঙ্কিমবাবু মন্তব্য করলেন,           ‘তাহলে আপনার ছেলেকে বিদেশে পড়ালেই ভালো করতেন।’</p> <p>ক) কবি আবদুল হাকিম কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?</p> <p>খ) কবি কেন বাংলা ভাষায় কাব্য রচনা করেছেন?</p> <p>গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত শিক্ষার্থীরা ‘বঙ্গবাণী’ কবিতায় কাদের প্রতিনিধিত্ব করেছে? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>ঘ) “বঙ্কিমবাবুর মাতৃভাষার প্রতি অনুরাগ ‘বঙ্গবাণী’ কবিতার কবির মানসিকতাকেই তুলে ধরেছে”—মন্তব্যটির যথার্থতা বিশ্লেষণ করো।</p> <p> </p> <p>৬। হবুচন্দ্র রাজা মন্ত্রী গবুচন্দ্রকে ডেকে নির্দেশ দিলেন তাঁর রাজ্যে এক নতুন আইন জারি করতে। আইনটি হলো তাঁর রাজ্যে এখন থেকে কেউ কান্নাকাটি করতে পারবে না। ধনী, গরিব, ইতর-ভদ্র যার জীবনে যত শোক-দুঃখ আসুক না কেন, সর্বাবস্থায় তাকে হাসতে হবে। এখন থেকে শাস্ত্রী-সেপাই, পেয়াদা-পাইক ছদ্মবেশে ঘুরে প্রজাসাধারণকে লক্ষ করবে, আর কেউ কাঁদলে তাকে বেঁধে এনে শাস্তি প্রদান করা হবে।</p> <p>ক) ‘জুতা আবিষ্কার’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলন করা হয়েছে?</p> <p>খ) রাজা সবাইকে ‘গাধা’ বলেছেন কেন? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>গ) উদ্দীপকের রাজা ‘জুতা আবিষ্কার’ কবিতার রাজার কোন দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>ঘ) “সাদৃশ্য থাকলেও ‘জুতা আবিষ্কার’ কবিতার রাজার চিন্তাভাবনা অনেক যৌক্তিক”—মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই করো।</p> <p>৭। নুজহাতের দাদির অনেক বয়স হয়েছে। সারা দিন কিছু করার নেই বলে ছোট নাতি-নাতনিদের ডেকে রূপকথা-উপকথার গল্প শোনান। তাঁর গল্প বলার ধরন এত সুন্দর যে পাড়া-প্রতিবেশীরাও সেই গল্প শুনতে চলে আসে। গল্প বলার ফাঁকে ফাঁকে তিনি সবাইকে পর্যবেক্ষণ করেন, দেখতে পান সবার দৃষ্টিতে মুগ্ধতা ও আনন্দ। সেই মুগ্ধতা দেখে নুজহাতের দাদি নিজে থেকে আরো নতুন নতুন গল্প তৈরি করেন।</p> <p>ক) ‘ঝাঁঝি’ শব্দের অর্থ কী?</p> <p>খ) ‘শঙ্কা নাই, সমান যাই’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?</p> <p>গ) উদ্দীপকের নুজহাতের দাদির কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ‘ঝর্ণার গান’ কবিতার বৈসাদৃশ্য কতটুকু? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>ঘ) ‘মানুষকে আনন্দ প্রদানে নতুন সৃষ্টির ক্ষেত্রে উদ্দীপকের নুজহাতের দাদি ও ঝর্ণা যেন একে অন্যের পরিপূরক’—মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।</p> <p> </p> <p><strong>গ</strong> <strong>অংশ</strong><strong> (</strong><strong>উপন্যাস</strong><strong>)</strong></p> <p>৮। তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা,</p> <p>শহরের বুকে জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক এলো</p> <p>দানবের মতো চিৎকার করতে করতে</p> <p>তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা,</p> <p>ছাত্রাবাস, বস্তি উজাড় হলো।</p> <p>রিকয়েললেস রাইফেল আর মেশিনগান খই ফোটালো যত্রতত্র।</p> <p>ক) উপন্যাসের দ্বিতীয় উপাদান কোনটি?</p> <p>খ) আহাদ মুন্সির চোখ কপালে উঠেছিল কেন?</p> <p>গ) উদ্দীপকটি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের কোন দিককে তুলে ধরে ? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>ঘ) “সাদৃশ্যগত দিকটি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের প্রধান দিক নয়” মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।</p> <p>৯। মন্তুর কোনো জমিজমা নেই। পরের জমিতে খেটে রোজগার করে। লাঙল চষে, ধান বোনে, শস্য ফলায়। আবার সে ধান পাকলে পরে কেটে এনে মালিকের গোলা ভর্তি করে। তারপর ধানের মৌসুম শেষ হয়ে গেলে কলাই, মুগ, তিল, সরিষার ক্ষেতে কাজ করে মন্তু। মাঝে মাঝে এ বাড়ি-ও বাড়ি লাকড়ি কাটার চুক্তি নেয়। আবার সময়ে নৌকাও চালায়।</p> <p>ক) বুধা দুঃখকে কী ভাবে?</p> <p>খ) গণকবর কী? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>গ) উদ্দীপকের মন্তুর সঙ্গে ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের বুধার কোনদিক থেকে সাদৃশ্য রয়েছে ব্যাখ্যা করো।</p> <p>ঘ) “সাদৃশ্যগত দিকটি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের একটি খণ্ডচিত্র’’— এ উক্তির যথার্থতা মূল্যায়ন করো।</p> <p> </p> <p><strong>ঘ</strong> <strong>অংশ</strong><strong> (</strong><strong>নাটক</strong><strong>)</strong></p> <p>১০। আকলিমা নবম শ্রেণিতে পড়ে। তার বাবা একজন দরিদ্র কৃষক। একদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে সে জানতে পারে যে, পাশের গ্রামের বিপত্নীক মেম্বারের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়েছে। তার সত্মা এ বিয়ের ঘটক। আকলিমা বিষয়টি তার প্রধান শিক্ষককে জানালে তিনি এসে আকলিমার বাবার সঙ্গে কথা বলে বিয়ে বন্ধের ব্যবস্থা করেন। আকলিমার বাবাকে তিনি বোঝাতে সক্ষম হন যে মেয়ের বিয়ের প্রকৃত বয়স হওয়ার আগে বিয়ে দিলে মা-বাবা উভয়েই আইন দণ্ডনীয় হবেন।</p> <p>ক) সাধারণত নাটকের কয়টি উপাদান থাকে?</p> <p>খ) তাহেরা শেষে নিজে থেকেই পীরের সঙ্গে যাওয়ার জন্য জিদ ধরল কেন?</p> <p>গ) উদ্দীপকের বিষয়বস্তুর সঙ্গে ‘বহিপীর’ নাটকের অমিল কতটুকু? ব্যাখ্যা করো।    </p> <p>ঘ) প্রধান শিক্ষক ও ‘বহিপীর’ নাটকের হাশেম আলিকে একই মানসিকতার অধিকারী বলা যায় কি? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।</p> <p>১১। আবদুল আলি সাহেব সম্প্রতি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। সংসারে স্ত্রী ও দুই ছেলে মেয়ে। বড় ছেলে বিএ পরীক্ষা দিয়েছে, মেয়ের বিয়ে দিতে পারেননি, অথচ আগামী মাস থেকে চাকরি শেষ বলে বেতনও পাবেন না। এ নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত; কিন্তু তাঁর ছেলে-মেয়ে বাবাকে বোঝাতে সক্ষম হয় যে, তারা এ যুগের সন্তান; শিক্ষাই তার সম্পদ। এখনই হতাশ হওয়ার মতো কারণ ঘটেনি। প্রয়োজনে তারা টিউশনি করে সংসারে অর্থের যোগান দেবে।</p> <p>ক) ‘বহিপীর’ নাটকের প্রথম সংলাপটি কার?</p> <p>খ) তাহেরাকে নারী জাগরণের প্রতীক বলা হয়েছে কেন? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>গ) উদ্দীপকের আবদুল আলির হতাশা ‘বহিপীর’ নাটকের কোন চরিত্রকে নির্দেশ করে। ব্যাখ্যা করো।ঘ) “সাদৃশ্য থাকলেও ‘বহিপীর’ নাটকের মূল বক্তব্য থেকে উদ্দীপকটি দূরে সরে গেছে।” মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই করো।</p> <p> </p> <p style="text-align: center;"><strong>সৃজনশীল</strong> <strong>মডেল</strong> <strong>টেস্টের</strong> <strong>উত্তর</strong></p> <p>১ (ক) ‘পূর্ণিমা তিথি’ শব্দের অর্থ হলো—চাঁদের পরিপূর্ণ রূপ হওয়ার সময়।</p> <p>১ (খ) ‘গ্রামে দুই-চারিটি অকর্মণ্য সরকারি লোক থাকা প্রয়োজন’—প্রতাপ সম্পর্কে এরূপ মন্তব্যের কারণ হলো—প্রয়োজনের সময় তাদের হাতের কাছে পাওয়া যায়।</p> <p>রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘সুভা’ গল্পের গোঁসাইদের ছোট ছেলে প্রতাপ নিতান্তই অকর্মণ্য। সে যে কাজ-কর্ম করে সংসারে উন্নতি করতে চেষ্ট করবে, সে আশাও তার বাপ-মা ত্যাগ করেছেন। অকর্মণ্য লোকদের ওপর আত্মীয়-স্বজন বিরক্ত হলেও তারা কিন্তু নিঃসম্পর্ক লোকদের প্রিয়পাত্র হয়। কোনো কাজে আবদ্ধ না থাকার কারণে তারা সরকারি সম্পত্তি হয়ে দাঁড়ায়। শহরে যেমন এক-আধটা গৃহ সম্পর্কহীন সরকারি বাগান থাকা দরকার, তেমনি গ্রামেও প্রতাপের মতো দু-চারটি অকর্মণ্য সরকারি লোক থাকা বিশেষ প্রয়োজন। কাজে-কর্মে, আমোদে-অবসরে যেখানে একটা লোক কম পড়ে, সেখানেই তাদের হাতের কাছে পাওয়া যায়।</p> <p>১ (গ) উদ্দীপকের অন্ধ বধূটি প্রতিবন্ধিতা ও ইন্দ্রিয় সচেতনতার দিক দিয়ে ‘সুভা’ গল্পের সুভার সঙ্গে সম্পর্কিত।</p> <p>‘সুভা’ গল্পের সুভা বাকপ্রতিবন্ধী হলেও বুঝতে পারত সে বিধাতার অভিশাপ নিয়ে জন্মেছে। সে জন্য সবার দৃষ্টিপথ থেকে যে নিজেকে গোপন করে রাখার চেষ্টা করত। মুখে কথা বলতে না পারলেও সুভার ভাষার অভাব প্রকৃতি যেন পূরণ করে দেয়। নদীর ফলধ্বনি, মানুষের কোলাহল, মাঝির গান, পাখির ডাক, তরুর মর্মর শব্দ ও বিচিত্র গতি যেন তার ভাষা। তার বড় গভীর কালো চোখের পাতায় সেই ভাবের ছায়া পড়ত। মধ্যাহ্নে যখন জেলে-মাঝিরা খেতে যেত, গৃহস্থরা ঘুমাত, পাখি ডাকত না, খেয়া নৌকা বন্ধ থাকত, অর্থাৎ সব কর্ম কোলাহল বন্ধ রেখে প্রকৃতি বিজনমূর্তি ধারণ করত, তখন বোবা প্রকৃতির সঙ্গে মেয়ে মেয়েটি একাত্ম হয়ে যেত।</p> <p style="text-align: center;"><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/January/24-01-2019/Ronger Mela/KK_ST_1A.jpg" style="height:483px; width:800px" /></p> <p>উদ্দীপকের অন্ধ বধূটিও তার ইন্দ্রিয় সচেতনতা দিয়ে ঋতুর আগমন, প্রকৃতির রূপ-রস-গন্ধ অনুভব করতে পারত। উদ্দীপকের এই দিকটি ‘সুভা’ গল্পের উপর্যুক্ত বক্তব্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।</p> <p>১ (ঘ) প্রতিবন্ধী মানুষেরও যে একটি আশ্রয়ের জগৎ রয়েছে ‘সুভা’ গল্পের সুভার অন্তরঙ্গ বোবা প্রাণীরা তার প্রমাণ।</p> <p>‘সুভা’ গল্পের সুভা কথা বলতে না পারলেও তার পোষা প্রাণীদের কাছে সে মুখর। তাদের সে খুবই কাছের মানুষ। তার গুটিকতক অন্তরঙ্গ বন্ধুর দলের মধ্য ছিল গোয়ালের সর্বশী ও পাঙ্গুলি নামের দুটি গাভি। সেই নাম সুভার মুখে গাভি দুটি কখনো না শুনলেও তার পদশব্দ ওরা চিনত। সুভার কথাহীন একটা করুণ সুর ছিল, তার মর্ম গাভি দুটি মুখের ভাষার থেকে সহজে বুঝত। সুভা কখন তাদের আদর, ভর্ত্সনা, কখন মিনতি করছে, তা ওরা মানুষের চেয়ে ভালো বুঝতে পারত। সুভা গোয়ালে ঢুকে দুই বাহু দিয়ে সর্বশীর গ্রীবা জড়িয়ে ধরে তার কানের কাছে নিজের গাল ঘষত আর পাঙ্গুলি স্নিগ্ধ দৃষ্টিতে তা নিরীক্ষণ করে সুভার গা চেটে দিত। সুভা নিয়মিত দিনে তিনবার গোয়াল ঘরে যেত। তবে ঘরে যেদিন কোনো কঠিন কথা শুনত, সেদিন সে অসময়ে বোবা প্রাণী দুটির কাছে যেত। প্রাণী দুটিও সুভার মর্মবেদনা বুঝতে পারত। তারা সুভার গা ঘেঁষে, বাহুতে শিং ঘষে তাকে ব্যাকুলতার সঙ্গে সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করত। এ ছাড়া সুভার ছাগল আর বিড়াল ছানাও ছিল। ও দুটিও সুভার প্রতি যথেষ্ট আনুগত্য প্রকাশ করত। বিড়াল ছানা যখন তখন সুভার গরম কোলটি নিঃসংকোচে অধিকার করে সুখনিদ্রার আয়োজন করত। সুভা তার ঘাড়ে ও পিঠে কোমল আঙুল বুলিয়ে দিলে তার যে ঘুমের আরাম হয়, এটাও ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিত।</p> <p>সুভার মতো উদ্দীপকের অন্ধ বধূটিও আশ্রয়ের একটি জগৎ ছিল। তাই পায়ের নিচে নরম বস্তুর অস্তিত্ব কোকিলের ডাক শুনে ঋতুর আগমনী সংবাদ, শেওলায় পা রেখে, নতুন সিঁড়ি জেগে ওঠার কথা সে বুঝতে পারত। দৃষ্টিহীন হলেও আপন অন্তর্দৃষ্টিকে যে প্রসারিত করেছে প্রকৃতির কাছে।</p> <p>‘সুভা’ গল্প ও উদ্দীপকের আলোকে তাই বলা যায় যে প্রতিবন্ধীদেরও আশ্রয়ের একটি জগৎ রয়েছে।</p> <p> </p> <p>২ (ক) মনসুর বয়াতি ‘দেওয়ানা-মদিনা’র লোকগাথার কবি।</p> <p>২ (খ) পল্লী সাহিত্যের যে প্রাচীন সম্পদ অতীতের সঙ্গে আমাদের সম্বন্ধ লোপ করে দিচ্ছে, তা হলো—পল্লীর উপকথা-রূপকথা।</p> <p>‘পল্লী সাহিত্য’ প্রবন্ধের লেখক মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেছেন যে তাঁরা ছেলেবেলায় কোনো ঝিল্লিমুখর সন্ধ্যাকালে পল্লী গ্রামের বুড়োবুড়ির মুখে যে উপকথাগুলো শুনতেন, সেগুলো আজ আরব্য উপন্যাসের ‘আলাউদ্দিনের আশ্চর্য প্রদীপ’, ‘আলী বাবা ও চল্লিশ দস্যু’ প্রভৃতির চেয়ে কম মূল্যবান নয়। আধুনিক শিক্ষার কর্মনাশা স্রোতে সেগুলো বিস্মৃতির অতল গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। কারণ এখনকার শিক্ষিত জননী সন্তানকে আর রাখালের পিঠাগাছের কথা, রাক্ষসপুরীর ঘুমন্ত রাজকন্যার কথা বা পাঙ্খিরাজ ঘোড়ার কথা শোনান না। তাদের কাছে বলেন আরব্য উপন্যাসের গল্প বা Lamb’s Tales from Shakespeare-এর গল্পের অনুবাদ। ফলে কোনো সুদূর অতীতের সাক্ষীস্বরূপ এই রূপকথাগুলো নষ্ট হয়ে অতীতের সঙ্গে আমাদের সম্বন্ধ লোপ করে দিচ্ছে।</p> <p>২ (গ) উদ্দীপকের গ্রামীণ লোকশিল্প ও লোক-ঐতিহ্য ‘পল্লী সাহিত্য’ প্রবন্ধের সঙ্গে পল্লীর প্রাচীন সাহিত্য সম্পদের অবহেলার দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ।</p> <p>‘পল্লীর সাহিত্য’ প্রবন্ধে লেকক যে পল্লীর প্রাচীন সম্পদের কথা বলেছেন তা হলো—পল্লীর রূপকথা, উপকথা, প্রবাদবাক্য, ডাক ও খনার বচন, ছড়া, ঘুমপাড়ানি গান, খেলাধুলার বাধা গৎ ও পল্লীগান ইত্যাদি। এর মধ্যে পল্লীর রূপকথা-উপকথাগুলো আধুনিক শিক্ষার কর্মনাশা স্রোতে বিস্মৃতির অতল গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। অথচ এগুলো যাদি সংগ্রহ করা হতো, তবে নৃতত্ত্বের মূল্যবান উপকরণ বলে পণ্ডিতসমাজে গৃহীত হতে পারত। তারপর ডাক, খনার বচন ও প্রবাদবাক্যে বহু যুগের ভুয়োদর্শনের পরিপক্ব ফল সঞ্চিত হয়ে আছে; জাতির পুরনো ইতিহাসের অনেক গোপন কথাও এর মধ্যে পাওয়া যায়। যেমন—‘পিঁড়েয় বসে পেঁড়োর খবর’ এই প্রবাদ বাক্যটি সেই সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়, যখন পাণ্ডুয়া বঙ্গের রাজধানী ছিল। তারপর রয়েছে ছড়া। কথায় কথায় ছেলেমেয়েরা যেসব ছড়া কাটে যেমন—রোদ হচ্ছে পানি হচ্ছে,/খেঁক শিয়ালির বিয়ে হচ্ছে, এগুলোও দুখে-দৈন্যে মানুষ আজ ভুলতে বসেছে। খেলাধুলার বাধা গৎ যেমন—‘এক হাত বোল্লা বারো হাত শিং/উড়ে যায় বোল্লা ধা তিং তিং’—এগুলোও বিদেশি খেলা প্রচলনের সঙ্গে সঙ্গে লোপ পাওয়ার উপক্রম হয়েছে। পল্লী-সাহিত্য সম্পদের মধ্যে পল্লী গানগুলোও অমূল্য রত্নবিশেষ। পল্লীর জারি, ভাটিয়ালি, রাখালি, মারফতি গানে অনেক প্রেম, আনন্দ, সৌন্দর্য ও তত্ত্বজ্ঞান ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। শহুরে গানের প্রভাবে সেগুলো এখন বর্বর চাষার গান বলে ভদ্রসমাজে আর বিকায় না।</p> <p>উদ্দীপকের লেখক বলেছেন যে বাংাদেশের প্রাচীন ও বিলুপ্ত লোকশিল্পের দ্রব্যগুলোও অনেক উন্নতমানের ছিল। উদ্দীপকের সেই লোকশিল্পের নির্দশন ‘পল্লী সাহিত্য’ প্রবন্ধের পল্লীর প্রাচীন সম্পদের অবহেলার দিকের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।</p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/January/24-01-2019/Ronger Mela/KK_ST_1B.jpg" style="float:left; height:127px; margin:12px; width:301px" />২ (ঘ) বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতি সংরক্ষণ ও প্রসারের জন্য পল্লীসাহিত্যের বিচিত্র সম্পদ বিশেষ যত্নের সঙ্গে সংগ্রহ করা যে একান্ত প্রয়োজন তা উদ্দীপকের লেখকেরও বক্তব্য।</p> <p>‘পল্লী সাহিত্য’ প্রবন্ধে লেখক বাংলার পল্লী সাহিত্যের বিশেষ কয়েকটি দিক সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। এ প্রসঙ্গে লেখক বলেছেন যে একদিন এক বিরাট পল্লী সাহিত্য বাংলাদেশে ছিল, সময় ও রুচির পরিবর্তনে যে সম্পদ আজ অনাদৃত হয়ে ধ্বংসের পথে দাঁড়িয়েছে। পাড়াগাঁয়ের সেকেলে লোক ছাড়া যেগুলোর আর কেউ কদর করে না। কিন্তু একদিন এই সাহিত্য সম্পদই নায়ের দাঁড়ি-মাঝি থেকে গৃহস্থের বউ-ঝি, বালক থেকে বুড়ো, আমির থেকে গরিব সবাইকেই আনন্দ-উপদেশ বিলাত। যদি পল্লী সাহিত্যের দিকে পল্লী জননীর সন্তানরা মনোযোগ দেয়, উপযুক্ত গবেষক, আগ্রহী সাহিত্যিকদের উদ্যোগ ও চেষ্টায় সেই সম্পদগুলো সংগ্রহ করে, তবেই পল্লী সাহিত্য সভার আয়োজন সার্থক হবে বলে লেখক মনে করেন।</p> <p>উদ্দীপকেও এ সম্পর্ক বলা হয়েছে—বাংলার প্রাচীন লোকশিল্পগুলো সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে আমাদের ঐতিহ্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পারি।</p> <p>উপর্যুক্ত বক্তব্যের পরিপ্রক্ষিতে তাই বলা যায়—উদ্দীপকে লোকশিল্প সংগ্রহের তাগিদ ‘পল্লী সাহিত্য’ প্রবন্ধের লেখকের বক্তব্যকেই সমর্থন করে।</p> <p><strong>উত্তরের</strong> <strong>বাকি</strong> <strong>অংশ</strong> <strong>আগামী</strong> <strong>সংখ্যায়</strong></p>