<p>১। উদ্দীপকটি পড়ার পর সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :</p> <p>‘ক’ নামের একটি দেশের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে বিভিন্ন পেশাজীবী শ্রেণির পরামর্শ গ্রহণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় একজন আইনজীবী বলেন, নির্বাচনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে একটি কমিশন। এখানে একজন প্রধান আর কয়েকজন সহকারী কমিশনার হিসেবে কাজ করবেন। যিনি প্রধান তিনি আবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁদের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর।</p> <p>ক) গণতন্ত্র সম্পর্কে অধ্যাপক ফাইনারের উক্তিটি কী?</p> <p>খ) পরোক্ষ নির্বাচন বলতে কী বোঝো? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>গ) উদ্দীপকে আইনজীবী যে ধরনের কমিশনের পরামর্শ দিয়েছেন, তা পাঠ্যপুস্তকের আলোকে ব্যাখ্যা করো।</p> <p>ঘ) ‘আইনজীবীর পরামর্শমতো কমিশনের থাকবে ক্ষমতা ও নানা কাজ’—বিশ্লেষণ করো।</p> <p> </p> <p>উত্তর : ক) গণতন্ত্র সম্পর্কে অধ্যাপক ফাইনার বলেন, ‘আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসন কার্যত রাজনৈতিক দলের শাসন।’</p> <p> </p> <p>খ) পরোক্ষ নির্বাচন বলতে সাধারণত ওই নির্বাচনপদ্ধতিকে বোঝায়, যেখানে ভোটাররা ভোট দিয়ে সরাসরি প্রতিনিধি নির্বাচন করে একটি মধ্যবর্তী নির্বাচনী সংস্থা তৈরি করেন, যা ইলেকটোরাল কলেজ বা নির্বাচকমণ্ডলী নামে পরিচিত। আর সেই নির্বাচনী সংস্থা চূড়ান্তভাবে প্রতিনিধি বা রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচন করে। যেমন—যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি এ পদ্ধতিতে নির্বাচিত হন।</p> <p> </p> <p>গ) উদ্দীপকে আইনজীবী যে ধরনের কমিশনের পরামর্শ দিয়েছেন, তা পাঠ্যপুস্তকের আলোকে ব্যাখ্যা করা হলো।</p> <p>উদ্দীপকের আইনজীবী এমন এক ধরনের কমিশনের পরামর্শ দিয়েছেন, যা নির্বাচনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। এখানে একজন প্রবীণ ও কয়েকজন সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এ বৈশিষ্ট্যগুলোর সঙ্গে আমরা পাঠ্যপুস্তকের নির্বাচন কমিশন গঠনের মিল দেখতে পাই। বাংলাদেশে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। কমিশন স্বতন্ত্র, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন পরিচালনা করে। এখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কয়েকজন নির্বাচন কমিশনার নিয়ে কমিশন গঠিত হয়। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগ প্রদান করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কমিশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কমিশনের মেয়াদ পাঁচ বছর। কমিশনাররা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পেশ করতে পারেন। অসদাচরণ ও অসামর্থ্যের কারণে কমিশনাররা দায়িত্ব থেকে অপসারিত হতে পারেন।</p> <p> </p> <p>ঘ) ‘আইনজীবীর পরামর্শমতো কমিশনের থাকবে ক্ষমতা ও নানা কাজ’—বিশ্লেষণ করা হলো।</p> <p>উদ্দীপকের আইনজীবী নির্বাচনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য একটি কমিশনের পরামর্শ দেন। এখানে একজন প্রবীণ ও কয়েকজন সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এটি হলো নির্বাচন কমিশন। কারণ সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগ প্রদান করেন। নির্বাচন কমিশন স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের সব নির্বাচনের জন্য ভোটারতালিকা প্রণয়ন ও তত্ত্বাবধান করে। ভোটারতালিকা বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হলে কমিশন এর নিষ্পত্তিমূলক সিদ্ধান্ত দেয়। কমিশন ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করে। সীমানা বিতর্কের অবসান ঘটাতে কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হয়। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় রিটার্নিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগ করে। সংবিধান অনুযায়ী কমিশন সংসদ সদস্যদের দ্বারা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ব্যবস্থা করে। বাছাই করার দায়িত্ব কমিশনের। মনোনয়নপত্র বাছাইসংক্রান্ত বিষয়ে বিতর্ক দেখা দিলে কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। কোনো সংসদ সদস্যের অযোগ্যতা সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন দেখা দিলে কমিশন সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন কমিশন সংবিধান অনুযায়ী ও আইনের দ্বারা অর্পিত সব দায়িত্ব পালন করে।</p> <p> </p> <p>২ । উদ্দীপকটি পড়ে সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :</p> <p>‘ক’ ব্যক্তি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে তাঁর সিদ্ধান্তই মুখ্য। তাঁরই দলের মনোনীত ‘খ’ ব্যক্তি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল আছেন। ‘ক’ ব্যক্তি আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির শাস্তি মওকুফ করতে না পারলেও ‘খ’ ব্যক্তি তা পারেন।</p> <p>ক) কে রাষ্ট্রের কাজের সমন্বয় করে থাকেন?</p> <p>খ) পৌরসভার শিক্ষাসংক্রান্ত কাজের ব্যাখ্যা দাও।</p> <p>গ) উদ্দীপকে ‘ক’ ব্যক্তির নেতৃত্ব প্রদান সম্পর্কিত কাজের বিশ্লেষণ করো।</p> <p>ঘ) উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘ক’ ও ‘খ’ ব্যক্তিদ্বয়ের কজের সমন্বয়ের ওপরই রাষ্ট্রের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নির্ভর করে। তোমার মতামত ব্যাখ্যা করো।</p> <p> </p> <p>উত্তর : ক) প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রের কাজের সমন্বয় করে থাকেন?</p> <p> </p> <p>খ) শহর এলাকার স্থানীয় শাসনসংক্রান্ত সংস্থাটির নাম পৌরসভা। বাংলাদেশের প্রতিটি পৌর এলাকার জন্য একটি করে পৌরসভা আছে। প্রাপ্তবয়স্কদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সদস্য নিয়ে পৌরসভা গঠিত হয়। পৌরসভা শহর এলাকার বিভিন্ন সমস্যা সমাধান ও উন্নয়নকল্পে বহুবিধ কাজ করে থাকে। তার মধ্যে শিক্ষাসংক্রান্ত কাজ অন্যতম। পৌরসভায় শিক্ষাসংক্রান্ত কার্যাবলি হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হোস্টেল নির্মাণ, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান, দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্রদের বৃত্তি প্রদান, বিনা মূল্যে বই বিতরণ, বাধ্যতামূলক গণশিক্ষার ব্যবস্থাকরণ ইত্যাদি। এগুলোই পৌরসভার উল্লেখযোগ্য শিক্ষাসংক্রান্ত কার্যাবলি।</p> <p> </p> <p>গ) উদ্দীপকের ‘ক’ ব্যক্তি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত একজন সংসদ সদস্য। তিনি জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন তাঁর নিজ এলাকার। জাতীয় সংসদের একজন সদস্য হিসেবে তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকার একজন নেতা। স্থানীয় নেতা হিসেবে তিনি কাজ করেন সংসদে। সংসদ সদস্য হিসেবে পদাধিকার বলে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর তিনি নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে তাদের অভাব, অভিযোগ এবং প্রয়োজনীয় সমস্যা সমাধান করা তাঁর দায়িত্ব। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় তিনি নিজ দলের একজন নেতা, অঞ্চলের নেতা এবং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একজন অংশীদার হিসেবে জাতীয় ক্ষেত্রেও নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন।</p> <p> </p> <p>ঘ) উদ্দীপকের ‘ক’ ব্যক্তি একজন সংসদ সদস্য এবং ‘খ’ রাষ্ট্রপতি। সংসদ সদস্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত এবং রাষ্ট্রপতি সংসদ কর্তৃক নির্বাচিত একজন নেতা। সংসদ সদস্য সরকারের আইনসভার প্রতিনিধি। অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি আইনসভার প্রধান এবং রাষ্ট্রপ্রধান। জাতীয় সংসদ দেশের জন্য আইন তৈরি করে, সংশোধন করে, অর্থসংক্রান্ত কার্যাবলি সম্পাদন করে, সংবিধান সংশোধন করে। সংসদের এ ধরনের কাজের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির সম্মতির প্রয়োজন হয়। রাষ্ট্রপতি সম্মতি না দিলে অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যার সৃৃষ্টি হয়। সংসদ ও রাষ্ট্রপতির যৌথ নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হয়। তাই দেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার জন্য রাষ্ট্রপতি ও সংসদের কাজের সমন্বয় প্রয়োজন। সমন্বিত কাজের মাধ্যমে সংসদ ও রাষ্ট্রপ্রধান মিলে একটি দেশকে তার কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে নিয়ে যেতে পারেন। তাই উদ্দীপকের ‘ক’ ও ‘খ’ ব্যক্তিদ্বয়ের কাজের সমন্বয়ের ওপরই রাষ্ট্রের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নির্ভর করে।</p>