<p>চিত্র দেখে সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :</p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/December/05-12-2017/kalerkantho-12-2017-11-05-01a.jpg" style="height:353px; width:300px" /></p> <p>ক) অ্যানজিনা কী?   ১</p> <p>খ) ফুসফুসীয় শিরাকে ব্যতিক্রমধর্মী শিরা বলা হয় কেন?                     ২</p> <p>গ) চিত্র M-এর কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত টিস্যুর গঠন বৈশিষ্ট্য লেখো।                   ৩</p> <p>ঘ) ‘সঠিক ও পরিমিত খাদ্য গ্রহণ, পরিমিত ব্যায়াম ও হাঁটাচলার মাধ্যমে সুস্থ জীবন লাভ করা যায়’—উক্তিটির সঙ্গে M-এর সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।               ৪</p> <p> </p> <p>উত্তর :</p> <p>ক) হৃৎপিণ্ডের করোনারি ধমনি গাত্রে চর্বি জমা হলে ধমনিতে স্বাভাবিক  রক্তপ্রবাহে বিঘ্ন ঘটে। ফলে হৃৎপিণ্ড পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও খাদ্য সার না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রক্ত  চলাচল কমে যাওয়ার কারণে বুকে ব্যথা অনুভূত হয়। এই অবস্থাকে অ্যানজিনা বলে।</p> <p> </p> <p>খ) যেসব নালি দিয়ে রক্ত দেহের  বিভিন্ন অংশ থেকে হৃৎপিণ্ডে ফিরে আসে, তাদের শিরা বলে। শিরা কার্বন ডাই-অক্সাইডসমৃদ্ধ রক্ত পরিবহন করে হৃৎপিণ্ডে নিয়ে আসে। ফুসফুসীয় শিরা  বা পালমোনারি  শিরা অক্সিজেনসমৃদ্ধ  রক্ত ফুসফুস থেকে হৃৎপিণ্ডে পৌঁছে দেয়। এ জন্য ফুসফুসীয় শিরাকে ব্যতিক্রমধর্মী শিরা বলা হয়।</p> <p>গ) উদ্দীপকের চিত্র M হলো মানব হৃৎপিণ্ড। হৃৎপিণ্ডের  কার্যক্রমের সঙ্গে  জড়িত টিস্যু হলো হৃৎপেশি টিস্যু। এই টিস্যুর গঠন বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ—</p> <p>i. হৃৎপেশির টিস্যু হলো বিশেষ ধরনের অনৈচ্ছিক পেশি টিস্যু।</p> <p>ii. এই টিস্যুর কোষগুলো নলাকৃতির (অনেকটা ঐচ্ছিক পেশির মতো)।</p> <p>iii. হৃৎপেশির টিস্যুর কোষগুলো শাখান্বিত ও আড়াআড়ি দাগযুক্ত।</p> <p>iv. এ টিস্যুর কোষগুলোর মধ্যে ইন্টারক্যালাটেড ডিস্ক থাকে। এদের সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয়।</p> <p> </p> <p>ঘ) সুস্থ জীবনযাপনের জন্য সঠিক ও পরিমিত খাদ্য গ্রহণ, পরিমিত ব্যায়াম ও হাঁটাচলার গুরুত্ব রয়েছে। এগুলোর সঙ্গে উদ্দীপকের চিত্র M তথা হৃৎপিণ্ডের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। জীবের দৈহিক বৃদ্ধি, বিকাশ ও সুস্থতার জন্য পরিমিত পুষ্টি তথা সুষম খাদ্যের প্রয়োজন। সুষম খাদ্য পরিপাকের পর শোষণযোগ্য পুষ্টি উপাদান রক্তের মাধ্যমে দেহের সব কোষে পৌঁছে থাকে।</p> <p>বিরামহীন ও গতিশীল সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে হৃৎপিণ্ড  সমস্ত শরীরে এই রক্ত সঞ্চালন করে থাকে। কোনো কারণে হৃৎপিণ্ডের এই গতিশীল সংকোচন-প্রসারণ বন্ধ হলে জীবের স্বাভাবিক জীবনধারা ব্যাহত হয় এমনকি মৃত্যুও ঘটে। তাই সুস্থ জীবনধারা বজায় রাখতে হৃৎপিণ্ডের সুস্থতা দরকার।</p> <p>তেল ও চর্বিজাতীয় খাদ্য হৃৎপিণ্ডের  কার্যক্রমকে ব্যাহত করে। অধিক মাত্রায় তেল ও চর্বিজাতীয় খাদ্যগ্রহণ করলে রক্তনালিতে কোলেস্টেরল জমা হয়ে রক্তপ্রবাহে বাধার সৃষ্টি করে। এতে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ব্যক্তি মৃত্যুর মুখোমুখি হয়। প্রতিদিন পরিমিত ব্যায়াম ও হাঁটাচলা করলে হৃৎপিণ্ডের রক্তনালিতে কোলেস্টেরল জমতে পারে না  এবং হৃৎপিণ্ডের সংকোচন প্রসারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে শরীরে  স্বাভাবিক রক্ত সঞ্চালন ঘটে। ফলে সব  কোষ পর্যাপ্ত পুষ্টি পেয়ে থাকে।</p> <p>সুতরাং মেদ সৃষ্টিকারী খাদ্য যেমন—তেল, চর্বি, অতিরিক্ত শর্করা পরিহার  ও সুষম খাদ্য গ্রহণ, প্রতিদিন পরিমিতি ব্যায়াম এবং হাঁটাচলার মাধ্যমে সুস্থ জীবন লাভ করা সম্ভব, যেখানে চিত্র M তথা হৃৎপিণ্ডের গতিশীল পাম্প ক্রিয়া ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কিত।</p> <p> </p> <p> </p> <p>নিচের চিত্রগুলো লক্ষ করো—</p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/December/05-12-2017/kalerkantho-12-2017-11-05-01b.jpg" style="height:81px; width:300px" /></p> <p> </p> <p>ক) সংলগ্নতা কী?                ১</p> <p>খ) প্রস্বেদনকে কেন অতি প্রয়োজনীয় অমঙ্গল বলা হয়?                       ২</p> <p>গ) চিত্রের A ও B-এর মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরো।                 ৩</p> <p>ঘ) দেহের সুস্থতায় A, B ও C-এর ভূমিকা অনস্বীকার্য—যুক্তিসহ  আলোচনা করো।               ৪</p> <p> </p> <p>উত্তর :</p> <p>ক) পানির অণুর ভেসেল নলের প্রাচীরের সঙ্গে সংলগ্ন থাকাকে সংলগ্নতা বলে।</p> <p> </p> <p>খ) প্রস্বেদন উদ্ভিদের বহু ধরনের উপকার করলেও কিছু অপকারও করে। প্রস্বেদনের ফলে জাইলেমবাহিকায় টান পড়ে। এই টানের ফলে উদ্ভিদের মূলরোম কর্তৃক  শোষিত পানি ও খনিজ লবণ পাতায় পরিবাহিত হয়। এতে উদ্ভিদের অনেক বিপাকীয় কার্যক্রম চলে। পানি শোষণের চেয়ে প্রস্বেদনে পানি হারানোর হার বেশি হলে উদ্ভিদের জন্য পানি ও খনিজ লবণের ঘাটতি দেখা দেবে। এর ফলে উদ্ভিদটির মৃত্যুও হতে পারে। এ জন্য প্রস্বেদনকে অতি প্রয়োজনীয় অমঙ্গল বলা হয়।</p> <p> </p> <p>গ) উদ্দীপকের চিত্র A হলো ধমনি।</p> <p>উদ্দীপকের চিত্র B হলো শিরা।</p> <p>নিচে ধমনি ও শিরার মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরা হলো :</p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/December/05-12-2017/kalerkantho-12-2017-11-05-01c.jpg" style="height:524px; width:400px" /></p> <p>ঘ) উদ্দীপকের চিত্র A হলো ধমনি।</p> <p>যেসব রক্তনালির মাধ্যমে অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত হৃৎপিণ্ড থেকে সারা দেহে বাহিত হয়, তাকে ধমনি  বলে। অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত ধমনির মাধ্যমে হৃৎপিণ্ড থেকে সারা দেহে প্রবাহিত হয়ে সব কোষে অক্সিজেন সরবরাহ করে। ফুসফুসীয় ধমনি এর ব্যতিক্রম। এই ধমনি হৃৎপিণ্ড থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইডযুক্ত রক্ত ফুসফুসে পৌঁছে দেয়।</p> <p>উদ্দীপকের চিত্র B হলো শিরা।</p> <p>যেসব নালি দিয়ে রক্ত দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে হৃৎপিণ্ডে ফিরে আসে তাদের শিরা বলে। শ্বসন ক্রিয়ায় উৎপন্ন CO2 গ্যাস জীবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এই CO2 রক্তের সঙ্গে মিশে CO2 সমৃদ্ধ রক্ত তৈরি করে। শিরা এই CO2 সমৃদ্ধ রক্ত পরিবহন করে হৃৎপিণ্ডে নিয়ে যায়। এরপর ফুসফুসীয় ধমনি হৃৎপিণ্ড থেকে CO2 যুক্ত রক্ত ফুসফুসে পৌঁছে দেয়। ফুসফুসে রক্তের পরিশোধন ঘটে। ফুসফুসীয় শিরা অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত ফুসফুস থেকে হৃৎপিণ্ডে পৌঁছে দেয়।</p> <p>উদ্দীপকের চিত্র C হলো কৈশিক জালিকা।</p> <p>পেশিতন্তুতে চুলের মতো অতি সূক্ষ্ম রক্তনালি দেখা যায়। একে কৈশিক জালিকা বলে। কৈশিক জ্বালিকার প্রাচীর খুব পাতলা হওয়ায় পরিপাককৃত সরল খাদ্য ব্যাপন প্রক্রিয়ায় কৈশিক জালিকার রক্তে প্রবেশ করে এবং রক্তের মাধ্যমে তা সব সজীব কোষে বাহিত হয়। এ ছাড়া কৈশিক জালিকা কোষ থেকে রেচন দ্রব্য সংগ্রহ করে রক্তের মাধ্যমে বৃক্কে পৌঁছে  দেয়।</p> <p>সুতরাং দেহের সুস্থতায় ধমনি, শিরা ও কৈশিক জালিকার ভূমিকা অনস্বীকার্য।</p>