<p>বাংলাদেশের আদিবাসী জনগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি সাঁওতাল। এরা অস্ট্রিক ভাষাভাষী আদি-অস্ট্রেলীয় (প্রোটো-অস্ট্রালয়েড) জনগোষ্ঠীর বংশধর। এদের প্রধান আবাসস্থল ভারতের রাঢ়বঙ্গ, বিহার, ওড়িষার অরণ্য অঞ্চল ও ছোটনাগপুর। বাংলাদেশে রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর ও বগুড়া অঞ্চলে এরা বসবাস করে।</p> <p>সাঁওতালদের প্রধান পেশা কৃষি। কিন্তু দরিদ্রের কারণে বাধ্য হয়ে অতি অল্প পারিশ্রমিকেও কাজ করে। এরা কঠোর পরিশ্রমে অভ্যস্ত। সাঁওতাল নারী-পুরুষ ওরাঁওদের মতো দেহে উল্কিচিহ্ন ধারণ করে।</p> <p>সাঁওতালদের ভাষা আছে কিন্তু লেখ্য বর্ণমালা নেই। ধর্ম আছে কিন্তু কোনো আনুশাসনিক ধর্মগ্রন্থ নেই।</p> <p>সাঁওতালরা উৎসবপ্রিয় জাতি। প্রায় ঋতুতেই তাদের উৎসব থাকে। নববর্ষের মাস ফাল্গুনে যেমন অনুষ্ঠিত হয় স্যালসেই উৎসব, তেমনি চৈত্রে বোঙ্গাবোঙ্গি, বৈশাখে হোম, আশ্বিনে দিবি, পৌষের শেষে সোহরাই। সাঁওতালদের অন্যতম অনুষ্ঠান হলো ফুল ফোটার উৎসব। বসন্তের শুরুতে এ উৎসবের উদ্দেশ্য নানা রঙের ফুল ফোটার সৌন্দর্যকে অভ্যর্থনা ও অভিনন্দন জানানো।</p> <p>সাঁওতালরা পুরুষপ্রধান সমাজ হলেও নারীর ভূমিকাও কম নয়। জীবিকা অর্জনে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ঘর ছোট, কিন্তু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। মাটির দেয়ালে নানা রকম কারুকার্য সাঁওতালদের শিল্পমনের পরিচয় বহন করে।</p> <p>সাঁওতালরা প্রধানত সূর্যকে উপাসনা করে। পর্বত দেবতাও (মারাং বুরু) তাদের জন্য যথেষ্ট মর্যাদাব্যঞ্জক।</p>