<p> আমেরিকার মূল ভূখণ্ডের বাইরে সবচেয়ে বড় নেভাল ফোর্স সপ্তম নৌবহর। এর প্রধান ঘাঁটি জাপানের ইয়াকোসুকা। আমেরিকার সবচেয়ে উন্নত ও শক্তিশালী জাহাজগুলোই সপ্তম নৌবহরে থাকে। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয় নিশ্চিত দেখে আমেরিকা জাতিসংঘকে ব্যবহার করে পাকিস্তানের পক্ষে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করতে চায়। কিন্তু রাশিয়ার বিরোধিতায় জাতিসংঘকে ব্যবহারে ব্যর্থ হয়ে একতরফা শক্তি প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নেয় আমেরিকা। এ সময় ভিয়েতনাম যুদ্ধের কারণে সপ্তম নৌবহরের বেশির ভাগ জাহাজ ভিয়েতনামের কাছাকাছি ছিল। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর সপ্তম নৌবহরের কয়েকটি জাহাজ নিয়ে 'টাস্কফোর্স ৭৪' গঠন করা হয়। জাহাজগুলো সিঙ্গাপুরে একত্র হয়ে বঙ্গোপসাগর অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। এই বহরের জাহাজগুলোর মধ্যে প্রধান জাহাজটি হলো USS Enterprise। তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী জাহাজ এটি। জাহাজটি ৭৫টি জঙ্গি বিমান বহন করে আসছিল, যার বেশির ভাগই ছিল F-4 Phantom II ফাইটার। ওই সময় জাহাজটিতে নিউক্লিয়ার বোমাও ছিল। সপ্তম নৌবহরের আরেকটি জাহাজ USS Tripoli। এটি একটি অ্যাম্ফিভিয়াস অ্যাসল্ট শিপ। এতে ২০০০ মেরিন সেনার ব্যাটালিয়ন ও ২৫টি হেলিকপ্টার ছিল। সপ্তম নৌবহরে আরো ছিল USS King, USS Decatur, USS Parsons নামের তিনটি গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার এবং চারটি গান ডেস্ট্রয়ার- যেগুলোর নাম USS Bausell, Orleck, McKean এবং Anderson। এ ছাড়া এই বহরে ছিল একটি নিউক্লিয়ার অ্যাটাক সাবমেরিন। জাহাজগুলো ১৪ ডিসেম্বর মালাক্কা প্রণালি অতিক্রম করে। কিন্তু রাশিয়া ও ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণে এই নৌবহর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান নিতে সাহস করেনি। ভারতীয় নৌবাহিনী তাদের বিমানবাহী জাহাজ INS Vikrant ও অন্যান্য জাহাজের সাহায্যে বঙ্গোপসাগরে নেভাল ব্লকেড দিয়ে রেখেছিল। রাশিয়া সপ্তম নৌবহরকে ঠেকানোর জন্য বঙ্গোপসাগরে ব্যাপক সামরিক শক্তি সমাবেশের ঘোষণা দেয়। ফলে আমেরিকা সপ্তম নৌবহর ফিরিয়ে নেয়।</p> <p> গ্রন্থনা : জাকারিয়া জামান</p> <p>  </p> <p>  </p> <p>  </p>