<p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় মাদকের বিস্তার প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত সর্বত্রই মাদকের ছোবল স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তরুণরা তো বটেই, কিশোর-কিশোরীরাও মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। তারা পরিবার, সমাজের পাশাপাশি দেশের জন্যও বোঝা হয়ে উঠছে। নিজেদের ধ্বংস করার পাশাপাশি সমাজে অশান্তি বাড়াচ্ছে। মাদকাসক্ত কিশোর-তরুণরা নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মাদকের বিস্তার ও অপরাধ ঊর্ধ্বগামী হওয়ার এক ভয়ংকর চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বা ডিএনসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বর্তমানে সামাজিক অবক্ষয় ও ছোট-বড় প্রায় সব অপরাধের পেছনে অন্যতম প্রধান অনুঘটকের কাজ করছে মাদকাসক্তি। বর্তমানে দেশে এক কোটির বেশি মানুষ মাদকাসক্ত। তাদের প্রায় ৯০ শতাংশ কিশোর-তরুণ। মাদকদ্রব্য কেনার অর্থ জোগাড়ে তারা নানা ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে। মাদক ব্যবসার গডফাদাররা খুন, অপহরণ ও চাঁদাবাজিতে এই কিশোর-তরুণদের ব্যবহার করছে। ডিএনসি ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মাদকসংক্রান্ত অপরাধ কর্মকাণ্ডের আওতায় ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত দেশে শতাধিক ব্যক্তিকে হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণার পরও মাদকের বিস্তার কমছে না, বরং দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রত্যন্ত গ্রামেও এখন মাদক সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। মাদকের অর্থ পাওয়ার জন্য কিশোর-তরুণরা ক্রমেই বেশি করে চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যাচ্ছে। গ্যাং কালচার গড়ে উঠছে। বিভিন্ন অপরাধীচক্রও মাদকাসক্ত কিশোর-তরুণদের ব্যবহার করছে। ফলে সমাজের শান্তি ও স্থিতি ক্রমেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। অভিযোগ আছে, মাদকবিরোধী অভিযানে সর্বনিম্ন পর্যায়ের কিছু বিক্রেতা, বাহক এবং কিছু মাদকসেবী ধরা পড়লেও শীর্ষ মাদক কারবারি বা গডফাদাররা ধরা পড়ছে না। ফলে মাদক কারবারও কমছে না, বরং নিত্যনতুন কৌশলে মাদকের কারবার দিন দিন আরো জোরদার হচ্ছে।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দেখা গেছে, সারা দেশে অনেক জায়গায়ই নিয়মিত মাদকের হাট বসে। রাজধানীতেও বেশ কিছু স্পটে মাদক বিক্রি হয়। অভিযোগ আছে, পুলিশ বা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই সেগুলো পরিচালিত হয়। কথিত </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">সোর্সের</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi"> মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন হয়। এসব অভিযোগ ভালোভাবে তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে দেশে এক লাখ ২০ হাজার ২৮৭ জন অবৈধ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। একই সময়ে মামলা হয়েছে ৯৭ হাজার ২৪১টি। আদালতে মাদকসংক্রান্ত বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৮২ হাজার ৫০৭। বিচারপ্রক্রিয়ার ধীরগতিকেও অনেকে মাদকসংক্রান্ত অপরাধ দমনের পথে একটি বাধা হিসেবে উল্লেখ করে। গ্রেপ্তারকৃত অপরাধীদের অনেকে জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় মাদক ব্যবসায় যুক্ত হয়।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা আশা করি, মাদক নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে। সীমান্ত দিয়ে মাদকের অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। গডফাদারসহ ছোট-বড় সব কারবারিকে আইনের আওতায় আনতে হবে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করতে হবে। মাদকসেবীদের চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।</span></span></span></span></span></span></p>