<p>‘অন্তরের সীমানা বিস্তারে যুক্তিযুদ্ধে সব্যসাচী চেতনায় অনির্বান’ স্লোগান নিয়ে ১৯৯৬ সালের ১১ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় বিতর্ক সংগঠন ‘চিটাগাং ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠিত হয়। দুই দশকেরও বেশি পথচলায় নানা সীমাবদ্ধতা ও প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে সিইউডিএস এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমৃদ্ধ সংগঠন। লিখেছেন : <strong>মোবারক আজাদ, </strong>চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়</p> <p> </p> <p>সাংগঠনিক দক্ষতার সঙ্গে বিতর্ক জগতে প্রতাপের সাথে বিচরণ সিইউডিএসকে পরিণত করেছে দেশের অন্যতম সেরা বিতর্ক সংগঠনে। সমপ্রতি হাজারেরও অধিক নবীন শিক্ষার্থী নিয়ে দেড় মাসব্যাপী দেশের সবচেয়ে বড় বিতর্ক প্রশিক্ষণের আয়োজন করে সংগঠনটি। দেশের খ্যাতনামা বিতার্কিকরা ছিলেন প্রশিক্ষক হিসেবে।</p> <p>এছাড়া বছরজুড়ে আন্তঃবিভাগ, আন্তঃক্লাব, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বাংলা ও ইংরেজি বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে বিতর্ক জগতে অবদান রেখে চলছে এ সংগঠন। প্রতিটি অনুষ্ঠান মান সমপন্নভাবে আয়োজনে সিইউডিএস সবসময় সচেষ্ট থাকে।</p> <p>জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে সবচেয়ে বেশি সাফল্যদানকারী সংগঠন হলো সিইউডিএস। বাংলা সংসদীয়, ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি বিতর্কে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংগঠনের বিতার্কিকরা সাফল্য নিয়ে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে। বছরজুড়ে টিআইভি জাতীয় জলবায়ু অর্থায়ন বিতর্ক প্রতিযোগিতা, জাতীয় পরিবেশ বিতর্ক প্রতিযোগিতার মতো ৭টি বিতর্ক প্রতিযোগিতার চ্যামিপয়ন তাঁরা। এভাবে অতীতের প্রতিটি বছরও সিইউডিএসের বিতার্কিকরা  সুনাম কুড়িয়ে এনেছেন। যা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মাইলফলক অর্জন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।</p> <p>সংগঠনটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে অংশ নিয়েছে ভারত, মালয়েশিয়া, নেদারল্যান্ড, ফিলিপাইন ও গ্রিস সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিতর্ক প্রতিযোগিতায়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই এই সংগঠনের হয়ে বিতর্ক করার জায়গা খোঁজেন নবীন বিতার্কিকরা। সিইউডিএসের  নিয়মিত বিতর্কের সেশন হয় প্রতি মঙ্গলবার ইংরেজি মাধ্যম এবং বৃহস্পতিবার বাংলা মাধ্যম। বিতর্কের কার্যালয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা অনুষদের  বিপরীতে অবস্থিত। সিইউডিএস প্রতিবছরের শুরুতে নবীনদের নিয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতা করে থাকে।</p> <p>সিইউডিএসের অব্যাহত সাফল্যে সন্তুষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীসহ পুরো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সিইউডিএস এর সব কাজেই তাই প্রশাসনও থাকে খুব আন্তরিক। শুধু নিজেরা বিতর্ক করেই বসে থাকেন না এই সংগঠনের বিতার্কিকরা। যুক্তিবাদী ও আলোকিত প্রজন্ম গড়ার প্রত্যয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হকের হাতে গড়ে ওঠা সংগঠনটি আলো আর যুক্তি সমাজে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটিও করছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুল কলেজের আমন্ত্রণে বছরজুড়ে তারা বিতর্ক প্রশিক্ষণ দেয়। ক্যান্টনমেন্ট স্কুল থেকে বাঁশখালীর নাপোড়া, সন্দ্বীপ, রাউজানের প্রত্যন্ত স্কুলেও তারা বিতর্ক শেখানো ও বিচার কাজের দায়িত্ব পালন করে আসছে।</p> <p>দ্রুতগতির সাফল্য নিয়ে এগিয়ে চলা স্বেচ্ছাসেবী এই সংগঠন প্রতিবছর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন ব্যবসায়ী, প্রতিষ্ঠান থেকে আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকে।</p> <p>চিটাগাং ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি রাফিউল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সিইউডিএস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় বিতর্ক সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে বিতর্ক নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। যা সবসময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করে আসছে। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রগতিশীল আন্দোলনের অংশীদার হিসেবে যুক্তি-তর্ক বিস্তারের মাধ্যমে সিইউডিএস তার অগ্রযাত্রা ধরে রাখবে।’</p> <p> </p>