<p>আগামী দিনে বিশ্বে বড় বড় যুদ্ধগুলো হবে পানি নিয়ে- এমন ধারণা যে কতটা বাস্তব তা এই শহরের পরিস্থিতিতে অনেকটাই যেন ফুটে উঠেছে।</p> <p>পুরো শহরের জন্য আর মাত্র ৩০ দিনের পানি হাতে রয়েছে। এ অবস্থায় পুলিশ পাহারায় চলছে জনগণকে জরুরি পানি বিতরণ। সমুদ্রের পানি পরিশোধন করে ব্যবহারযোাগ্য করার চেষ্টা করছে সরকারি লোকজন। এ ছাড়া নর্দমার পানিও রিসাইক্লিং করে ব্যবহারের চেষ্টা চলমান। </p> <p>জলসংকটে জবুথবু শহরটি হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন। টানা তিন বছর ধরে চলমান খরার করাল গ্রাস যেন শহরটির কোমর ভেঙে দিয়েছে, অন্তত পানির অভাবে এর বাসিন্দাদের বর্তমান বেহাল অবস্থা তাই প্রমাণ করছে। </p> <p>কেপটাউনের জনসংখ্যা ৪০ লাখ। দিন দিন এই সংখ্যা বাড়ছেই কেবল। এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, পানি সংকট সমাধানের কোনো উপায় না হলে আগামী ১১ মে এই শহরের অবস্থা খুবই শোচনীয় হয়ে পড়বে। শহরের পানি শোধনাগারের রিজার্ভে মাত্র ৩০% পানি মজুদ আছে। এটা যখন ১৩.৫ শতাংশে নেমে যাবে তখন শহরে ট্যাপে পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে। </p> <p><em><span style=\"color:#B22222\"><strong>আরো পড়ুন : </strong></span></em><a href=\"http://www.kalerkantho.com/home/printnews/324686/2016-02-14\">পানি সংকটে ৪০০ কোটি মানুষ</a></p> <p>গত পাঁচ বছরে শহরে পানি সেঁচ মারাত্মকভাবে কমতে থাকে। তিন বছর যাবৎ এখানকার মাটি ছোঁয়া পায়নি পর্যাপ্ত বৃষ্টির। আগুয়ান ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাছের টেবল মাউন্টেনের তলায় সাত স্তরের বোরিং করে পানি বের করে আনার চেষ্টা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে এই স্থানটায় ১ লাখ কিউবিক কিলোলিটার পানির মজুদ রয়েছে।   </p> <p><img alt=\"\" src=\"/ckfinder/userfiles/images/2018/February-2018/07/capeTown_drought_kk_03.jpg\" style=\"border-style:solid; border-width:2px; height:400px; width:600px\" /></p> <p><em><span style=\"color:#FF0000\">জলহীনতায় মাটি শুকোতে শুকোতে পাথরে রূপ নিচ্ছে যেন</span></em></p> <p>জল সঞ্চয়কারী বাঁধের সংযোগ বন্ধ হওয়ার পর দৈনিক মাত্র ২৫ লিটার পানিতে চলতে হবে কেপটাউনবাসীকে। তখন শহরের ২০০ স্পটে কড়া পুলিশি নিয়ন্ত্রণে পানি বিতরণ শুরু হবে- যাতে এ নিয়ে কোনো রাহাজানি-হানাহানি না বেঁধে যায়।</p> <p><em><span style=\"color:rgb(178, 34, 34)\"><strong>আরো পড়ুন : </strong></span></em><a href=\"http://www.kalerkantho.com/online/world/2017/05/31/503427\">তীব্র পানি সংকটে ব্যাঙ্গালোর </a></p> <p>অপরদিকে, সংকট মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষ কেপটাউনবাসীকে এরই মধ্যে বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে যা সবাইকে কঠোরভাবে পালন করতে হচ্ছে। এর মধ্যে গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে জনপ্রতি ৫০ লিটার পানির কোটা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। গোসলের জন্য ২ মিনিট সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। কারণ, দেখা গেছে বেশি সময় ধরে গোসল করতে গেলে বেশি পানি খরচ হয়। গাড়ি ধোয়া নিষিদ্ধ। টয়লেট শেষে ফ্লাশ ব্যবহার যতটা না করা যায়- এমন মিনতি করা হয়েছে। এ ছাড়া সুইমিংপুলে পানি ভর্তি করতে নিষেধ করা হয়েছে; এমনকি বাগানেও পানির ব্যবহার না করতে বলা হচ্ছে।</p> <p>শহরের বাসিন্দাদের আরো বলা হয়েছে, গোসলের পানি রিসাইকেল করে ব্যবহার করুন আর ওয়াশিং মেশিন যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করুন।</p> <p><span style=\"color:#B22222\"><em><strong>আরো পড়ুন : </strong></em></span><a href=\"http://www.kalerkantho.com/home/printnews/468589/2017-02-27\">পানি সংকটে চিলির ৪০ লাখ মানুষ</a></p> <p>শহরজুড়ে এদিক-ওদিক তাকালেই নজরে পড়ে পানির জন্য লম্বা লম্বা লাইন দিয়ে আছে মানুষ- হাতে বলতি, জেরিকেন, ব্যারেল। </p> <p><img alt=\"\" src=\"/ckfinder/userfiles/images/2018/February-2018/07/capeTown_drought_kk_02.jpg\" style=\"border-style:solid; border-width:2px; height:400px; width:600px\" /></p> <p>১৯৭৭ সালের পরবর্তী বছরগুলোতে কেপটাউন এয়ারপোর্ট এলাকায় বছরে গড়ে ৫০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড হতো। সেই বৃষ্টিপাতের মাত্রা কমে এমন পর্যায়ে এসেছে যে গত তিন বছরে তা ছিল যথাক্রমে ১৫৩, ২২১ ও ৩২৭ মিলিমিটার। এই তিন বছরের মোট বৃষ্টিপাতও ১৯৯৩ সালে এক বছরে যা হয়েছে তার চেয়ে কম। বিজ্ঞানীরা জানান, আবহাওয়া চক্রের এল-নিনোর প্রভাবে এমনটা হচ্ছে।<br /> সূত্র: <em>জনসত্তা.কম</em></p>