<article> <p style="text-align: justify;">ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা রোজা পালনে বিরত থাকতে চান না। আর তাই হৃদরোগীরাও প্রায়ই চিকিৎসকের কাছে প্রশ্ন রাখেন তাঁরা রোজা রাখতে পারবেন কিনা। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন—</p> <p style="text-align: justify;"><strong>ডা. মো. মাহবুবুর রহমান বাবু,</strong> অধ্যাপক, কার্ডিওলজি বিভাগ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা</p> <p style="text-align: justify;">একজন হৃদরোগী রোজা রাখতে পারবেন কি না তা সম্পূর্ণ একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মোতাবেক ঠিক করা উচিত। রমজান মাসের আগেই এ জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীকে রোজা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এমনিতে একজন হৃদরোগী যিনি সুস্থ অবস্থায় এবং কোনো খারাপ উপসর্গ ছাড়া আছেন, তিনি রোজা রাখতে পারবেন। বরং অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যাঁরা রমজান মাসে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও নিয়ম-কানুন মেনে রোজা পালন করেন, সেসব হৃদরোগীর এসংক্রান্ত জটিলতা কম হয়।</p> <p style="text-align: justify;"><strong>স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণ</strong></p> <p style="text-align: justify;">রমজান মাসে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। সাহরির সময় (ভোরের আগের খাবার), এমন খাবার খাওয়া উচিত, যা সহজে হজম হয় এবং যা থেকে ধীরে ধীরে ক্যালরি অবমুক্ত হয়।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">উচ্চ ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার এ সময় আমাদের জন্য উপকারী এবং এগুলো আমাদের হজমশক্তি ভালো রাখতেও সাহায্য করবে। প্রচুর ফল ও শাক-সবজি এবং কিছু চর্বিযুক্ত বা কম চর্বিযুক্ত প্রোটিন অন্তর্ভুক্ত করুন। আপনার খাবার ভাজাপোড়ার পরিবর্তে বেক করুন বা গ্রিল করুন।</p> <p style="text-align: justify;"><strong>লবণ এড়িয়ে চলুন</strong></p> <p style="text-align: justify;">চর্বিযুক্ত এবং চিনিযুক্ত খাবার সীমিত করুন, যাতে রমজানে আপনার অনিচ্ছাকৃতভাবে ওজন না বেড়ে যায়।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">প্রোটিনের উত্স হিসেবে লাল মাংসের পরিবর্তে মাছ খাওয়া ভালো। এ ছাড়া দুধ ও ডিম প্রোটিন এবং প্রয়োজনীয় চর্বির ভালো উত্স হতে পারে। ইফতার ও সাহরিতে প্রচুর চিনিমুক্ত পানীয় পান করুন। এ ছাড়া লবণ ও নোনতা খাবার এড়ানোর চেষ্টা করুন, যা আপনাকে তৃষ্ণার্ত করে তুলতে পারে, একই সঙ্গে আপনার রক্তচাপের জন্যও ভালো নয়।</p> <p style="text-align: justify;"><strong>ধীরে ধীরে ইফতার করুন</strong></p> <p style="text-align: justify;">ইফতারের সময় দ্রুত অনেক কিছু খেয়ে ফেলা ঠিক নয়।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">প্রথমে খেজুর বা অন্য যেকোনো ফলমূল আর পানি খেয়ে রোজা ভেঙে নামাজ আদায় করতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে অন্য খাদ্য গ্রহণ করা যেতে পারে। এতে সার্বিক সুস্থতা ও হজমশক্তি ভালো থাকে। কখনোই পেট বোঝাই করে খাওয়া ঠিক নয়। কারণ এতে হঠাৎ হার্টের ওপর চাপ পড়ে। এভাবে ওজন বৃদ্ধিরও আশঙ্কা থাকে।</p> <p style="text-align: justify;"><strong>ব্যায়ামের সময়কালও গুরুত্বপূর্ণ</strong></p> <p style="text-align: justify;">ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে সময়কাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভুল সময়ে করা শারীরিক কার্যকলাপ এরই মধ্যে ডিহাইড্রেটেড ব্যক্তির হার্টের ওপর ভার আরো বাড়িয়ে দিতে পারে, যার ফলে অবাঞ্ছিত পরিণতি, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এবং হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তাই যাঁরা ব্যায়াম করতে চান তাঁরা ডাক্তারের অনুমতি নিয়ে ইফতার করার ঘণ্টা দুয়েক পরে ৩০ মিনিট হাঁটতে পারেন।</p> <p style="text-align: justify;"><strong>চাই পর্যাপ্ত ঘুম</strong></p> <p style="text-align: justify;">হৃদরোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বল্প নিদ্রা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হার্টের কাজের চাপ বাড়িয়ে দেয় এবং হৃদরোগজনিত জটিলতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।</p> </article>