<p><em>দীপ্ত টিভিতে গতকাল প্রচারিত হয়েছে কায়সার আহমেদের ধারাবাহিক নাটক ‘বকুলপুর সিজন ২’-এর ৭০০তম পর্ব। ধারাবাহিকটির নিয়মিত মুখ নাদিয়া আহমেদ। এই নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে দৈনিক কালেরকন্ঠ। </em><br /> <br /> <strong>৭০০ পর্বের মাইলফলক পার করল ‘বকুলপুর সিজন ২’। অভিনন্দন...</strong></p> <p>বাংলাদেশের নাটকের ইতিহাসে এটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আগের সিজনে করোনার কারণে আমরা শুটিং করতে পারিনি।</p> <p><br /> <strong>তখন ৩০০ পর্বেই শেষ করতে হয়েছিল। পরে দর্শকের আগ্রহেই সিজন ২ শুরু করতে হয়েছে। দীপ্ত টিভি কর্তৃপক্ষ ও পরিচালক শুধু নন, দ্বিতীয় সিজনের জন্য আমাদেরও কম আগ্রহ ছিল না। আসলে প্রথম সিজনটা দর্শক এতটাই পছন্দ করেছিল যে দ্বিতীয় সিজনের বিকল্পও ছিল না।</strong></p> <p>গল্পে সামান্য পরিবর্তন এনে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে নতুন করে শুটিং শুরু হয়। এরই মধ্যে দ্বিতীয় সিজনও ৭০০ পর্ব পার করল। দুই সিজন মিলিয়ে এক হাজার পর্ব। এই কৃতিত্ব পুরো টিমের।</p> <p> </p> <p><strong>শুরুতে ভেবেছিলেন এমন সাড়া পাবেন?</strong></p> <p>কায়সার আহমেদ ভাইয়ের অনেক নাটক করেছি। তিনি চলচ্চিত্র থেকে নাটকে এসেছেন। আমি তাঁর কাজের ভক্ত। কিন্তু এ ধারাবাহিকটি প্রথমে আমি করতে চাইনি। আমাকে জানানো হয়েছিল এক নৃত্যশিল্পীর চরিত্র। মনে হলো, না করাটাই ভালো, কারণ আমি নৃত্যশিল্পী বলেই হয়তো এই চরিত্রটি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া নৃত্যশিল্পীর চরিত্রে অভিনয় করার অনেক ঝামেলা। পোশাক-পরিচ্ছদ, গেটআপে অনেক সময় লাগে। তবে কায়সার ভাই যখন পুরো পাণ্ডুলিপি পাঠালেন, পড়ার পর ভুল ভাঙল। আমার চরিত্রের নাম প্রিন্সেস দিবা। পাওয়া না পাওয়া, ভাঙা-গড়ার চরিত্র দিবা। মনে হলো, ভালো কিছু হবে, সেটাই হলো।<br />  </p> <p><strong>একটা ধারাবাহিকের এতগুলো পর্ব হলে গল্পের পথ হারানোর আশঙ্কা থাকে না? </strong></p> <p>সেটা থাকে। তবে এদিক থেকে আমরা ভাগ্যবান। ‘বকুলপুর’-এর দর্শক ফিক্সড। ধারাবাহিকটি যেমনই হোক এটিকে দর্শক মনের ভেতর জায়গা দিয়েছে। এখন আর না দেখে তারা থাকতে পারে না। আমিও তো নানা ধরনের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হই। এখন তো প্রিন্সেস দিবা থেকে আমার চরিত্রটি চেয়ারম্যান দিবা হয়েছে। দর্শক আমাকে যেখানেই পায় বলে, ‘এটা করলেন কেন! ওর বিচারটা ঠিক করেননি’ ইত্যাদি ইত্যাদি। তিন দিন আগের কথা, ফেসবুকে পোস্ট করেছি বৃষ্টি হচ্ছে না এ নিয়ে। একজন মন্তব্য করেছেন, “‘বকুলপুর’ নাটকের উগান্ডা ও রুহীকে বিয়ে দিয়ে দেন, বৃষ্টি হবে তাহলে।” ভাবছি, দর্শক কতটা আগ্রহ নিয়ে নাটকটি দেখে!</p> <p> </p> <p><strong>নতুন নাটকে খুব কম পাওয়া যাচ্ছে আপনাকে...</strong></p> <p>অনেক কারণ। প্রথমত, আমার ক্যারিয়ার এবার দুই যুগে পড়েছে। ২০০০ সালে প্রথম অভিনয় শুরু করেছিলাম। এ সময়ে এসে যেনতেন গল্পে অভিনয় করতে পারি না। আমাদের বয়সটাকে প্রাধান্য দিয়ে কেউ কি এখন নাটক নির্মাণ করছেন? আমি তো চাইলেই এই সময়ের ছেলেমেয়ের চরিত্র করতে পারব না। দর্শক মেনেও নেবে না। দ্বিতীয়ত, এখন যাঁরা নাটক নির্মাণ করছেন তাঁদের অনেকেই নাকি আমাদের চেনেন না, যদিও আমিও অনেককে চিনি না। এটাও একটা প্রধান কারণ। তৃতীয় কারণ, নাটকের মান। চলচ্চিত্রকে যেমন চোখের সামনে হারিয়ে যেতে দেখলাম, নাটকও প্রায় সেই অবস্থায় পৌঁছেছে। এখন একটা নাটক দেখা শেষ করে আপনি বলতেই পারবেন না, নাটকটি কেন দেখলেন? জানি না এই পরিস্থিতি সামলে ওঠা যাবে কি না!</p> <p> </p> <p><strong>ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কাজ করবেন বলে জানিয়েছিলেন। সেখানেও তো নেই আপনি!</strong></p> <p>এরও একটা মজার কারণ আছে। ওটিটি প্ল্যাটফরমের নির্মাতারা বলেন, টেলিভিশনে যাঁরা নিয়মিত কাজ করেন তাঁদের নাকি এই প্ল্যাটফরমের দর্শক দেখতে চায় না। আসলে কি তাই? তাহলে আমি যেখানেই যাই মানুষ কেন জিজ্ঞেস করে, ‘আপনি ওটিটিতে কাজ করছেন না কেন?’ আসলে এই জায়গাটায় একটা সিন্ডিকেট আছে। দেখবেন সেক্টরটিতে ঘুরেফিরে একই মুখ কাজ করছে।</p> <p> </p> <p><strong>নৃত্যশিল্পী হিসেবেও কি কাজ কমিয়ে দিলেন?</strong></p> <p>২০ বছর ধরে আমি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে বলে আসছি নৃত্যানুষ্ঠানের দিকে নজর দিতে। কে শোনে কার কথা! যার কারণে দেখবেন টেলিভিশনগুলোতে এখন নৃত্যানুষ্ঠান শূন্যের কোঠায়। গত ঈদে বিটিভিতে একটি মাত্র নৃত্যানুষ্ঠান হয়েছে, সেটা আমি করেছি। আর কোনো চ্যানেলে কিন্তু নৃত্যানুষ্ঠান হয়নি। তারা বলে, নৃত্যানুষ্ঠানে নাকি স্পন্সর পাওয়া যায় না। তাহলে তারা যেসব অনুষ্ঠান করে সব কটিতেই কি ভালো স্পন্সর পায়? সব কটিই লাভজনক? যদি তা-ই হতো তাহলে চ্যানেলগুলো এত লস লস করে কেন? আগে একটা সময় যেকোনো অনুষ্ঠানেই নৃত্যের জন্য থাকত আলাদা পর্ব। আর এখন নৃত্যটা বাদ দিয়ে সব হয়। করপোরেট শো, কনসার্ট কিংবা অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান—দিন দিন নৃত্যের চাহিদা কমে যাচ্ছে। এদিকে সবার নজর দিতে হবে।</p> <p> </p>