<p>বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) চাঁদপুর জেলা শাখার মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে চাঁদপুর শহরের ঘোলঘর এলাকায় একটি কনভেনশন হলে এই মতবিময়সভার আয়োজন করা হয়।</p> <p>এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাজুস কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মো. রিপনুল হাসান। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর আপনাদের সাথে যেসব ওয়াদা দিয়েছেন তাঁর সবগুলোই পূরণ করবেন। তবে একটু সময় লাগবে। আপনারা দেখেছেন, গত দুই বছরে কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে। দীর্ঘ সময়ের এই সংগঠনের অবস্থা পরিবর্তন আনতে হলে অবশ্যই সময় লাগবে। এখন ইচ্ছা করলেই কেউ পকেট কমিটি করে আনতে পারবে না।’<br />  <br /> সংগঠনের সদস্য হওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের মধ্যে যারা সদস্য না, ঢাকার মধ্যে যারা আছেন, তাদের তালিকা তৈরি হয়েছে। পর্যায়ক্রমে জেলা ও উপজেলায় হবে। সদস্য ছাড়া কেউ জুয়েলারি ব্যবসা করতে পারবেন না। সদস্য না হয়ে কিভাবে আপনি ব্যবসা করবেন ও পণ্য পান সেটাও আমরা দেখব। কারণ এটিরও আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রথমে অনেকে টাকা ছাড়া সদস্য হননি, এখন অনেকে টাকা দিয়ে হচ্ছেন।’</p> <p>স্বর্ণের বাজারদর সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আজ থেকে ১৫ দিন আগে বাজারদর একরকম ছিল। এখন বাজারদর একই রকমভাবে দিয়ে আসছে। এই দর নিয়ে আমাদের সভাপতির একটি দল কাজ করছে। কারণ ছোট, বড় ও সৎ ব্যবসায়ী সবাই মিলে যাতে ব্যবসা করতে পারে এবং অসৎ ব্যবসায়ীরা যাতে প্রতারণা করতে না পারে সে জন্যই কাজ করা হচ্ছে। তবে আমাদের একটু সময় দিতে হবে। আশা করি, আমাদের বসুন্ধরার প্রডাক্ট যখন বাজারে চলে আসবে, তখন থেকে এক বাজার এক দরে এই জুয়েলারি ব্যবসা চলে আসবে। এই বিষয়ে আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন।’</p> <p>স্বর্ণের ল্যাব সম্পর্কে রিপনুল হাসান বলেন, ‘আমাদের নিজেদের ব্যবসার মধ্যে অন্যদের প্রবেশ করতে দিতে চাই না। এই বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বিএসটিআই এর সাথে আমাদের কথা হয়েছে। ছোট দোকান দিয়ে অনেকেই ল্যাব দিয়ে বসেছেন। তাদের আমরা সতর্ক হওয়ার জন্য বলেছি। আমাদেরও এখানে দোষ ছিল, তা আমরা স্বীকার করেছি। মন্ত্রণালয় আমাদের বলেছে এই বিষয়টি দেখবে, তবে সময় লাগবে। কারণ এটি সরকারি ইস্যু।’</p> <p>স্বর্ণ ক্রয় করা হলে চোরাই স্বর্ণ বলে ব্যবসায়ীকে হয়রানির শিকার হওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সারা দেশের এই সম্পর্কে আমরা অবগত। এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। এই বিষয়ে আইনি জটিলতা আছে। আমাদের লিখিত প্রস্তাব দিতে বলেছেন। এ ছাড়া এই বিষয়ে প্রত্যক স্থানে সংগঠনের লোকজন ভূমিকা নেন এবং পুলিশের সাথে কথা বলেন, তাহলে প্রাথমিকভাবে হলেও সমাধান করা সম্ভব।’<br />  <br /> বাজুস চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ মোস্তফার (ফুলমিয়া) সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাজুস কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক মো. ইমরান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য মো. মজিবুর রহমান খান।</p> <p>বাজুস জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মানিক পোদ্দারের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন জেলা কমিটির সহসভাপতি জয় রাম রায়, সহসাধারণ সম্পাদক জামিল আহমেদ, ফরিদগঞ্জ উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক লিটন চন্দ্র দাস, সদর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, হাইমচর উপজেলা সভাপতি রিপন স্বর্ণকার, শাহরাস্তি উপজেলা সাধারণ সম্পাদক সমির পাল, কচুয়া উপজেলা সভাপতি কিরণ রায়, মতলব উত্তর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক বিকাশ চন্দ্র দেবনাথ ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা সভাপতি অজিত সরকার।</p> <p>সভায় বক্তারা বলেন, ‘যারা সংগঠনের সদস্য না তারা আলাদা বাজারদর দেন। গ্রাম ও শহরে দুই ধরনের মূল্য তালিকার কারণে শহরের জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। যে কারণে সদস্যরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। সদস্য হওয়ার জন্য তাদের বোঝানো হলে, তারা টাকা দিয়ে সদস্য হবেন না মর্মে অনীহা প্রকাশ করেন। এ ছাড়া চাঁদপুর শহরে কয়েকজন ব্যবসায়ী জুয়ালারি ব্যবসায়ীদের সুনাম নষ্ট করছেন, তাদের বিষয়ে সংগঠনের নেতাদের অবগত করেন।’</p> <p>অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন হাইমচর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মো. সবুজ পাটওয়ারী এবং গীতা পাঠ করেন মতলব দক্ষিণ উপজেলা সভাপতি অজিত সরকার। এরপর সভায় প্রধান অতিথিসহ আগত অতিথিদের জেলা কমিটির পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।</p>