<article> <p style="text-align: justify;">এক মাস ধরে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেই ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য ৮৫৬টি গাছ কাটতে যাচ্ছে বন বিভাগ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। সরকারি দুই দপ্তরের এ সিদ্ধান্তে স্থানীয় মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মুচিবাড়ির কোনা এলাকা থেকে দক্ষিণ খাসেরহাট বাজার পর্যন্ত প্রায় ৫.৪৩ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণের উদ্যোগ নিয়েছে তারা। এর বরাদ্দ নির্ধারিত হয়েছে প্রায় ১১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। টেন্ডারে এই কাজের দায়িত্ব পেয়েছে মেসার্স ইউনুছ অ্যান্ড ব্রাদার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ১২ ফুট প্রশস্ততা বাড়িয়ে ১৮ ফুট করা হবে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এরই মধ্যে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে নিলাম বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গাছগুলো কিনে নিয়েছে একটি প্রতিষ্ঠান। শিগগিরই গাছগুলো কাটা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">ওই সড়কের পাশে বসবাসকারী কৃষক মোস্তাফিজ, আবু তাহের, আফসার, মনিরসহ ১০ থেকে ১৫ জন বাসিন্দা জানান, গাছগুলো থাকায় কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষ মাঠে কাজের ফাঁকে ছায়ায় বিশ্রাম নেয়। পথচারীরাও প্রখর রোদের তাপ থেকে রক্ষা পায়। এই তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে সড়কের দুই পাশের বিশালাকৃতির গাছগুলো কাটা হলে ওই এলাকা মরুভূমিতে পরিণত হবে। তাই এলাকাবাসীর দাবি, গাছগুলো বাঁচিয়ে রেখে যেন সড়ক উন্নয়নের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">সড়কটির পাশে অবস্থিত পঞ্চপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রচণ্ড গরমে মাথার ওপর ছাতা না থাকলেও গাছগুলোর জন্য আরামে স্কুলে যাতায়াত করা যায়। গাছগুলো কাটা হলে অনেক অসুবিধায় পড়তে হবে।</p> <p style="text-align: justify;">বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির জানান, কতিপয় দপ্তরের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের পকেট ভারী করার জন্য সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ না করে উন্নয়নের নামে নির্বিচারে সারা দেশে গাছ নিধনের মহাযজ্ঞ চলছে। উন্নয়ন পরিকল্পনার আগে পরিবেশবিদ, উদ্ভিদবিজ্ঞানী ও পরিকল্পনাবিদদের পরামর্শ না নেওয়ার কারণে পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে। তজুমদ্দিনের এই সড়কের গাছগুলো রক্ষা করতে বাপার পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হবে। প্রয়োজনে ঐক্যবদ্ধভাবে গাছ রক্ষার জন্য জোরদার কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">ভোলা বন বিভাগের তজুমদ্দিন রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহাবুব আলম বলেন, ‘স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে আমরা গাছের পরিমাণ ও দাম নির্ধারণে সহযোগিতা করেছি। তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে এ গাছগুলো না কাটাই উত্তম হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করব।’</p> <p style="text-align: justify;">স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ভোলা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলীল জানান, সড়কটি সম্প্রসারণের জন্য দুই পাশের গাছগুলো কাটা হবে। এই কাজ সম্পন্ন হলে পুনরায় সড়কের দুই পাশে নতুন করে চারা রোপণ করা হবে।</p> </article>