<p>চলাচলের রাস্তা, নির্বাচনী দ্বন্দ্বের জেরে জামায়াত-বিএনপি সমর্থিত হুদি গোষ্ঠীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রামানিক গোষ্ঠীর সংঘর্ষে খায়রুল ইসলাম (৪০) নামের একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন উভয় গ্রুপের অন্তত ৩০ জন। এলাকা জুড়ে চলছে তীব্র উত্তেজনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা। </p> <p>শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে পাবনা ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের চরগড়গড়ি আলহাজ্ব মোড় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।</p> <p>নিহত খায়রুল ইসলাম ওই এলাকার মৃত নসিম উদ্দিন প্রামানিকের ছেলে। তিনি সাহাপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সহসভাপতি।</p> <p>তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের মধ্যে সাজু হুদি (৫০), সাহাবুদ্দিন (৫০), জামাত ফকির (৫০), নাসিরউদ্দিন (৩০), জিল্লুর (৫০), তরিকুল (৪০),শাহ জামাল (৪০),আন্টু (৩০), হুজুর আলী (৫৮), নাসির (৩০), ওলিউর রহমান (৩৫), মজিদ (৩৫), আরিফ আলী (৩২), ওলিবুল (৩২), মো. মিঠুন (৩৫), মোসলেম উদ্দিন (৬০), মানু প্রামানিক (৫৫), মো. খোকন প্রামাণিক (৩৫), নুর বেগমের (৫০) নাম জানা গেছে। তবে আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। </p> <p>এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ সূত্র মতে, বেশ কিছুদিন ধরে চলাচলের রাস্তা, জমিজমা ও নির্বাচনকালীন বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রামানিক গোষ্ঠীর সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত হুদি গোষ্ঠীর বিরোধ চলে আসছিল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সমর্থিত হুজুর আলীকে মারধর করে হুদি গোষ্ঠীর লোকজন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করা হলেও উত্তেজনা থেকেই যায়। এই উত্তেজনা থেকেই শুক্রবার দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে ধারাল হাসুয়া, চাপাতি, লোহার রডের আঘাতে দুই পক্ষের অন্ততপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। এর মধ্যে খায়রুল ইসলাম নামের একজন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। হুদি গোষ্ঠীর ঈসাই প্রামানিক (৪৮) হাসুয়ার আঘাতে বাম হাতের কনুই পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। </p> <p>নিহত খায়রুল ইসলাম প্রামানিকের ভাতিজা মাহমুদ জুয়েল অভিযোগ করে জানান, ঘটনার দিন দুপুরে জামাত ফকির নামে তার এক চাচা বাড়িতে আসার সময় হুদি গোষ্ঠীর লোকজন মারধর করে। খবর শুনে লোকজন এগিয়ে গেলে হুদি গোষ্ঠীর মকলেছুর রহমান মজনু, রিয়াজুল, শাহিন ও নুরুর নেতৃত্বে ২০-৩০ জনের একটি সশস্ত্র দল তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে তার চাচা খায়রুল মারা যায়। আহত হয়েছে আরো ১২-১৫ জন। </p> <p>মকলেছুর রহমান মজনু অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর থেকে প্রামানিক গোষ্ঠীর অত্যাচার শুরু করেছে। এলাকায় বসবাস করা কঠিন হয়ে উঠেছে। মারধর, লুটপাট, জমি দখলসহ নানা রকম অপকর্ম চালিয়ে আসছে। কয়েকদিন পূর্বে হুজুর আলীর সঙ্গে ঝামেলা হয়। বিষয়টি বৃহস্পতিবার বসে মিমাংসা হয়ে যায়। কিন্তু দলীয় ও বংশী ক্ষমতা দেখিয়ে ঘটনার সময় খায়রুল ইসলাম প্রামানিক ধারাল অস্ত্র সশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে দুই পক্ষের লোকজনই গুরুতর আহত হয়েছে। </p> <p>ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তরত চিকিৎসক ঋত্তিকা ইসলাম জানান, আহতদের অধিকাংশই গুরুতর হওয়ায় পাবনা ও রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে ৮ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।</p> <p>ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, জমি-জমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেধেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এই ঘটনায় খায়রুল ইসলাম নামের একজন মারা গেছে। অনেকেই আহত হয়েছে। মরদেহ থানা নেওয়া হয়েছে। এলাকার উত্তেজনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে। তবে এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। </p>