<p>বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে বেড়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের খাদ্য হরিণ, বানর ও শূকরের সংখ্যা। এত দিন রয়েল বেঙ্গল টাইগারের খাবারের তালিকায় প্রধান এবং প্রিয় খাদ্য হিসেবে ছিল এই তিন প্রজাতির প্রাণী। তবে সম্প্রতি বন বিভাগের এক জরিপে বাঘের খাদ্য হিসেবে গুইসাপ ও সজারুর নাম স্থান পেয়েছে।</p> <p>জার্মানির কেএফডাব্লিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) সার্বিক সহযোগিতায় বন বিভাগের এক জরিপের প্রকাশিত রিপোর্টে এই পাঁচ প্রজাতির বন্য প্রাণীর মধ্যে হরিণ, বানর, শূকরসহ তিন প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধির তথ্য উঠে এসেছে।</p> <p>জীববৈচিত্র্যে ভরপুর পৃথিবীর বৃহত্তম এই ম্যানগ্রোভ বনে ৩৭৫ প্রজাতির বন্য প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে বাঘের খাদ্যতালিকায় ছিল হরিণ, বানর, শূকরসহ মাত্র তিন প্রজাতির প্রাণী। কিন্তু বর্তমান জরিপে হরিণ, বানর ও শূকরের পাশাপাশি বাঘের খাদ্য হিসেবে গুইসাপ ও সজারুর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।</p> <p>সুন্দরবন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গোটা সুন্দরবনে ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) সার্বিক সহযোগিতায় বাঘের খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে জরিপ চালায় বন বিভাগ।</p> <p>সম্প্রতি প্রকাশিত জরিপের এই ফলাফলে দেখা যায়, যেখানে ২০০৪ সালের জরিপে চিত্রল ও মায়া হরিণের সংখ্যা ৮৩ হাজার। বর্তমান জরিপে তা বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩৬ হাজার ৬০৪টি। বানর ৫১ হাজার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৫২ হাজার ৪৪৪টি এবং শূকর ২৮ হাজার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার ৫১৫টি। সুন্দরবনে এবারই প্রথম জরিপে অন্তর্ভুক্ত হওয়া গুইসাপ রয়েছে ২৫ হাজার ১২৪টি ও সজারু রয়েছে ১২ হাজার ২৪১টি। </p> <p>সুন্দরবন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো জানান, সুন্দরবনে বাঘের পর্যাপ্ত প্রাণিজ খাদ্য রয়েছে। বিশ্ব ঐতিহ্য ম্যানগ্রোভ বন দস্যুমুক্ত হওয়া, শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চরের আলোরকোলের রাসমেলা বন্ধ করা, স্মার্ট প্যাট্রলিংসহ বন বিভাগ, র‌্যাব, কোস্ট গার্ড ও বিজিবির কঠোর নজরদারির কারণে হরিণসহ বন্য প্রাণী শিকার অনেক কমে এসেছে। পাশাপাশি সুন্দরবনে অভয়ারণ্যের আয়তন বাড়িয়ে ৫১ ভাগ করায় প্রাণী বসবাস ও নিরাপদ প্রজননের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে অন্যান্য প্রাণীর পাশাপাশি বাঘের অন্যতম খাদ্য হরিণ, বানর ও শূকরের সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। </p> <p>সিএফ মিহির কুমার দো জানান, এবারই প্রথম জরিপে বাঘের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা গুইসাপ ও সজারুর সংখ্যাটাও জানা গেছে। বাঘের খাদ্য হিসেবে বিবেচিত পাঁচ প্রজাতির বন্য প্রাণীর জরিপে দেখা গেছে, সুন্দরবনে এখন সব মিলিয়ে এসব বন্য প্রাণী রয়েছে তিন লাখ ৭৩ হাজার ৯২৮টি। জার্মানির কেএফডাব্লিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের আর্থিক সহায়তা এবং আইইউসিএনের সহযোগিতায় সম্প্রতি প্রকাশিত জরিপ রিপোর্টে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।</p>