<p>বিসিএস সহ সকল সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় বিদ্যামান কোটা পদ্ধতির সংস্কার করে কমিয়ে আনার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে মানববন্ধন করেছে একদল চাকুরিপ্রত্যাশী। অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের ৩০ শতাংশ সংরক্ষিত কোটার বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে এবং সবক্ষেত্রে নির্ধারিত মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাস্তবায়নের দাবিতে আরেকটি মানববন্ধন করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটি। </p> <p>আজ শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই মানববন্ধন করেন তারা। প্রথমে তারা শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন করতে গেলে পুলিশের বাঁধার মুখে পড়ে। পরে তারা সেখান থেকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে অবস্থান নেয়। </p> <p>সেখানেও পুলিশ বাঁধা দিলে তারা কিছু সময় অবস্থান করে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করে শেষ করেন। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি একই দাবিতে প্রত্যেকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলা শহরগুলোতে আবার মানববন্ধন করার ঘোষণা দেন ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহবায়ক ইমরান হোসেন। মানববন্ধনে দশটি লিখিত দাবি পাঠ করে শোনান তিনি। </p> <p>দাবিগুলো হলো, কোটা সংস্কার করে সহনীয় পর্যায়ে কমিয়ে আনতে হবে, কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে খালি থাকা পদগুলো মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে, একই ব্যাক্তি কোটা সুবিধা নিয়ে একাধিকবার চাকরি পরিবর্তন বন্ধ করতে হবে, কোটায় চাকরি নিয়ে পরে পরিবর্তন করে অন্য চাকরিতে যেতে চাইলে মেধার ভিত্তিতে যেতে হবে, প্রিলিমিনারীতে অভিন্ন কাট মার্কের নিশ্চয়তা দিতে হবে, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করতে হবে, নির্দিষ্ট কোনো কোটায় নিয়োগ দেয়া যাবে না, কোটায় নিয়োগ দিতে গিয়ে সাধারণ জনগণের ক্ষতি বন্ধ করতে হবে, সংবিধানের ২৯ অনুচ্ছেদের ১ ও ২ ধারার পূর্ণ বাসত্মবায়ন করে নিয়োগ বৈষম্য বন্ধ করতে হবে, নাতিপুতি কোটা বাতিল করতে হবে। </p> <p>চাকুরিপ্রত্যাশীদের অভিযোগ, বর্তমান বাংলাদেশে চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা বিদ্যমান রয়েছে। দেশের অনগ্রসর শ্রেণীকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কোটা পদ্ধতি চালু করা হলেও এই কোটা সুবিধা নিয়ে তারা একাধিক চাকরিতে প্রবেশ করছে। যেখানে মেধাবীরা একাধিকবার পরীক্ষা দিয়েও চাকরি পাচ্ছে না সেখানে তারা চাকরি পরিবর্তন করছে ফলে অনেক পদ শূণ্য থেকে যাচ্ছে কিন্তু প্রকৃত মেধাবীরা সুযোগ পাচ্ছে না।</p> <p>সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহবায়ক ইমরান হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, আমাদের অবস্থান কোটার বিরুদ্ধে না। আমরা চাই এই কোটা পদ্ধতির সংস্কার করে কমিয়ে এনে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হোক। বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা রয়েছে ৫৬ শতাংশ। এতে চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রকৃত মেধাবীরা বাদ পড়ে যাচ্ছে। দেশ সেবার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই আমরা চাই চাকরিতে ১০ শতাংশ কোটায় নিয়োগ দিয়ে বাকী ৯০ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হোক। </p> <p>এদিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে তারাই কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন না করলে দেশ স্বাধীন হতো না। তারা স্বাধীন দেশে চাকরিও পেতেন না। তাই কোটার বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানায়। সকল ক্ষেত্রে নির্ধারিত মুক্তিযোদ্ধা কোটার বাসত্মবায়নের দাবি জানায়।</p> <p>বাঁধা দেয়ার বিষয়ে রমনা জোনের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, একুশের বই মেলা চলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বিশৃঙ্খল অবস্থা যাতে তৈরি না হয় সেজন্য তাদেরকে অনুরোধ করা হয়েছে। </p>