<p style="text-align: justify;">কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষক সমিতির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষকদের ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ এবং প্রক্টরের নেতৃত্বে হামলার ঘটনায় ২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছে শিক্ষক সমিতি। অপরদিকে শিক্ষক সমিতির নেতারা উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ এবং প্রক্টরকে শারীরিক হেনস্থা করেছেন উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও থানায় অভিযোগ করেছেন। </p> <p style="text-align: justify;">গতকাল সোমবার শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার সাদেক হোসেন মজুমদার কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় অভিযোগ করেন।<br />  <br /> বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান, প্রত্নতত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মোরশেদ রায়হান, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শামিমুল ইসলাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জান্নাতুল ফেরদৌস, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাহফুজুর রহমানকে বিবাদী করেছেন। </p> <p style="text-align: justify;">এ ঘটনায় সাক্ষী হিসেবে কোষাধ্যক্ষ ড. মো. আসাদুজ্জামান, প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী, শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমান, সহকারী প্রক্টর মো. জাহিদ হাসান, সহকারী প্রক্টর মো. মোশারফ হোসাইন নাম উল্লেখ করা হয়েছে। </p> <p style="text-align: justify;">অন্যদিকে শিক্ষক সমিতি অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এএফএম আবদুল মঈন, কোষাধ্যক্ষ ড. মো. আসাদুজ্জামান, প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীসহ আমিনুর রহমান বিশ্বাস, রেজা-ই-এলাহী, মাসুদ আলম, ইকবাল হোসাইন খান, পার্থ সরকার, বিপ্লব চন্দ্র দাস, ইমরান হোসাইন, মুশফিকুর রহমান খান তানিম, রকিবুল হাসান রকি, মেহেদী হৃদয়, ফয়সাল হাসান, এম নুর উদ্দিন হোসাইন, অনুপম দাস বাঁধন, আরিফুল হাসান খান বাপ্পী ও ইমাম হোসাইন মাসুমকে বিবাদী করা হয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাকিব হোসেন ও দ্বীপ চৌধুরী নামের দুইজনকে বিবাদী করা হয়েছে। </p> <p style="text-align: justify;">শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবু তাহের অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, নিজ কার্যালয়ে প্রবেশের সময় উপাচার্য এএফএম আবদুল মঈন সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হানের পেটে ঘুষি মারেন এবং পেছন দিক থেকে কনুই দিয়ে আঘাত করেন। এরপর তার সঙ্গে থাকা সন্ত্রাসীরা মুর্শেদ রায়হানের পেটে ঘুষি মেরে প্রশাসনিক ভবনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। একই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মোকাদ্দেস উল ইসলামের মুখে সজোরে ঘুষি মারেন। এরপর তারা সবাই মিলে মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে শারীরিক আঘাত করে। এ সময় আরো অন্তত ২০ জন শিক্ষক হামলার শিকার হন। উপাচার্য কার্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বহিরাগতদের দিয়ে শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে হামলা ও তালা দেওয়ার নির্দেশ দেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। </p> <p style="text-align: justify;">অভিযোগে আরো বলা হয়, পরবর্তী সময়ে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা শিক্ষক লাউঞ্জে হামলা করে এবং প্রশাসনিক ভবনের বাইরে অবস্থানরত শিক্ষকদের ওপর পুনরায় হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা এ পর্যায়ে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শামিমুল ইসলামকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় এবং উপর্যুপরি শারীরিক হামলা করে। পরে অধ্যাপক শামিমুল ইসলামসহ লোকপ্রশাসন বিভাগের জান্নাতুল ফেরদৌস, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল করিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা গ্রহণের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা পুনরায় তাদের ওপর হামলা করে। এ সময় প্রক্টরিয়াল বডি ও কতিপয় শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি দেন। </p> <p style="text-align: justify;">অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাদেক হোসেন মজুমদার অভিযোগপত্রে বলেন, শিক্ষক সমিতির বিভিন্ন দাবির বিষয় নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বিবাদীদের মত বিরোধ চলমান ছিল। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে বিবাদীরা উপাচার্যসহ অভিযোগপত্রে উল্লেখিত সাক্ষীদের ওপর চড়াও হয়ে গত রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকের সামনে দাঙ্গা হাঙ্গামার উদ্দেশ্যে সমবেত হন। ওই সময় উপাচার্যসহ সাক্ষীরা তাদের নিজ নিজ কর্মস্থল কক্ষে প্রবেশের সময় বাধা দেন এবং সম্মানহানি করে। </p> <p style="text-align: justify;">অভিযোগপত্রে আরো বলেন, ওই সময় বিবাদীরা সাক্ষীদের এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মেরে জখম করে। উপাচার্যসহ সাক্ষীদের কাজে বাধা প্রদান করে তাদের সরকারি কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকসহ লোকজন এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে উপাচার্যসহ সাক্ষীদের উদ্ধার করেন। বিবাদীরা প্রকাশ্যে উপাচার্যসহ সাক্ষীদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।<br />  </p>