<p>তোমাদের একটি প্রশ্ন করি?</p> <p>না না, মোটেই কঠিন প্রশ্ন নয়।</p> <p>প্রশ্নটি খুবই সহজ। উত্তরটি আরো সহজ।</p> <p>প্রশ্নটি হলো একটি জায়গার নাম নিয়ে। এমন একটি জায়গার নাম বলো, যেখানে একটি লাল বাড়ি আছে। আর আছে একটি বটগাছ। কী, পারলে?</p> <p>আচ্ছা আরো বলছি। সেখানে আছে একটি মিলনায়তন। আর মিলনায়তনটির নাম হলো লাল মিয়া মিলনায়তন। এতক্ষণে নিশ্চয়ই পেরে গেছ!</p> <p>না পারলে আরো কিছু বলি। সে জায়গায় আছে একটি দোকান। দোকানটির নাম গুণী ময়রার প্রয়োজনীয় ভাণ্ডার। এবার অবশ্যই পেরেছ।</p> <p>হ্যাঁ, ঠিক বলেছ। সেই জায়গার নাম সিসিমপুর। তোমাদের সবার প্রিয় সিসিমপুর। চলো আজ আমরা সিসিমপুর সম্পর্কে জানি।</p> <p>অসম্ভব এক মজার জায়গা সিসিমপুর। সেখানে সবাই মিলেমিশে থাকে আর অনেক অনেক মজা করে। সেই মজার জায়গায় কে কে থাকে?</p> <p>সে কি আর বলতে হয়? তা তো সবাই জানে। সেখানে থাকে টুকটুকি, ইকরি, শিকু, হালুম, গুণী ময়রা, আশা, সুমনা, মুকুল এবং আরো অনেকে।</p> <p>সিসিমপুরের এক অসাধারণ সুন্দর বাড়ি হলো লাল বাড়ি। দোতলা। বাড়ির নাম ‘কিচিরমিচির’। এর সামনে প্রায়ই দেখা যায় একটি লাল ট্রাই-সাইকেল। কে চালায় সাইকেলটি? একদম ঠিক ধরেছ। সাইকেলটি চালায় ইকরি। সিসিমপুরের সবার প্রিয় ইকরি। আসলে ওই লাল বাড়ি ইকরিদের। এই বাড়িতে ইকরির একটি ঘর আছে। সেই ঘরে বসেই ইকরি নানুর কাছে মজার মজার গল্প শোনে। গল্প শুনতে শুনতে ইকরি হারিয়ে যায়। উড়ে বেড়ায়, ঘুরে বেড়ায়।</p> <p>ইকরিদের লাল বাড়িটির ঠিক সামনেই আরেকটি বাড়ি। খড়ের চাল আর মাটির দেয়ালের সেই বাড়ি হলো টুকটুকিদের। এক সুন্দর সাজানো-গোছানো একটি বাড়ি। বাড়িটি দেখলেই এর বারান্দায় একটু বসতে ইচ্ছা করে। বসতে ইচ্ছা করবেই না কেন, বাড়িটির বারান্দায় সব সময় থাকে একটি মাদুর। আর থাকে কয়েকটি জলচৌকি। একটি মাটির কলস, পানিভর্তি। আর থাকে বাঁশ ও বেতের তৈরি নানা রকম ঝুড়ি। সেখানে বসে সবাই মিলে গল্প করে। আর গুড়মুড়ি খায়। মিষ্টিও খায় মাঝেমধ্যে। কারণ বাড়িটির কাছেই একটি দোকান আছে। গুণী ময়রার প্রয়োজনীয় ভাণ্ডার। কী যে মজার মিষ্টি ওখানে পাওয়া যায়, কী আর বলব! সিসিমপুরে খুশির কিছু ঘটলেই মিষ্টি চাই। গুণী ময়রার দোকানের মিষ্টি।</p> <p>সিসিমপুরে হালুম, টুকটুকি, ইকরি আর শিকুদের প্রিয় জায়গা হলো গ্রন্থাগার। মানে পাঠাগার। নাম সিসিমপুর গ্রন্থাগার। এই গ্রন্থাগারে আছে অনেক অনেক বই। নানা রকম বই। মাছের বই, গাছের বই, পানির বই, ছড়ার বই, কবিতার বই, গল্পের বই, ছবির বই। সেই গ্রন্থাগারে যখন সবাই পড়তে যায়, একদম চুপচাপ বসে বসে পড়ে। কেউ কোনো শব্দ করে না। কেন শব্দ করে না, তা তোমরা জানো।</p> <p>একটি ডাকঘরও আছে সিসিমপুরে। আছে একটি ডাকবাক্স। কেউ চিঠি লিখে যদি সেই ডাকবাক্সে ফেলে, তবে সেই চিঠি যাকে লিখেছে তার কাছে পৌঁছে যায়। কী দারুণ ব্যাপার! ব্যাপারটি অত সোজা নয়। তুমি যদি কাউকে চিঠি লেখো, তবে সেই চিঠি একটি খামে ভরতে হবে। খামের ওপর লিখতে হবে যাকে চিঠি লিখেছ তার ঠিকানা। তারপর সেই খাম ফেলতে হবে ডাকবাক্সে। ডাকবাক্স খুলে একজন ডাকপিয়ন সব চিঠি বের করে। তারপর বাছাই করে। কোন চিঠিটি কোথায় যাবে। তারপর? তারপর আর কী! ওই চিঠি যাকে লেখা হয়েছে তার কাছে পৌঁছে দেয় ডাকপিয়ন।</p> <p>সে অনেক কথা। চলো আবার ফিরে আসি সিসিমপুরে। সিসিমপুরে সবার প্রিয় একটি জায়গা আছে, যেখানে সবাই আসতে পছন্দ করে। সেখানে মাঝেমধ্যে মেলা বসে। সবাই মিলে খেলাধুলা করে। নানা রকম অনুষ্ঠান হয়। সে জায়গাটির নাম কী? একদম ঠিক। সেটি হলো বটতলা। সিসিমপুরের বটতলা।</p> <p>আরে আরে সবই তো বলা হলো। হালুম আর শিকু কোথায় থাকে, তা তো বলা হয়নি। ওরা দুজনই থাকে সিসিমপুর জঙ্গলে। সেখানে শিকুর একটি মজার ঘর আছে। সবাই বলে, শিকুর ডেরা। ডেরা, মানে গর্ত। সেই ডেরায়ই তো হয় শিকুর যত গবেষণা। মজার মজার গবেষণা করে বিজ্ঞানী শিকু সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়। আর হালুমের বাড়ি? সেটিও বেশ মজার। অনেকটা গুহার মতো। বড় বড়, রঙিন রঙিন পাথর আর গাছের গুঁড়ি দিয়ে বানানো সেই ঘর। ঘরের ভেতরে আরো আছে হালুমের প্রিয় বন্ধুরা। কারা ওরা? হুম, ঠিক বলেছ। গাছবন্ধুরা।</p> <p>গাছের কথাই যখন এলো, তখন বলি। সিসিমপুরের আরেকটি জায়গা আছে। প্রিয় জায়গা, যেখানে আছে শুধু গাছ আর গাছ! ফুলের গাছ! ফলের গাছ! পাতার গাছ! এখানে এলেই হালুম আর টুকটুকিদের মন ভালো হয়ে যায়। বলো তো, কোন জায়গা সেটি? হুম, সেটি একটি নার্সারি। নার্সারিতে তো হরেক রকম গাছ থাকে। জানোই তোমরা!...বনমালী নার্সারি! একদম ঠিক বলেছ।</p> <p>তো এই হলো সিসিমপুর। তোমাদের প্রিয় সিসিমপুর!</p>