সারা দিনের ব্যস্ততার ফাঁকে পকেটে থাকা স্মার্টফোনের গেম যদি হয় একটু প্রশান্তির উৎস, ব্যাপারটা নেহাত মন্দ হয় না। সম্ভবত সেটা চিন্তা করেই নির্মাতা মিক্সটভিশন গেমস তৈরি করেছে ‘ফার : লোন সেইলস’। মন্থর গতির গেমও যে মজার হতে পারে, তার জলজ্যান্ত উদাহরণ এটি।
গেমটির শুরু একটি কবরে। সেটি কার বা কেনই সেখানে—গেমারের চরিত্রটি দাঁড়িয়ে আছে তার কোনো কিছুই গেমটি জানাবে না। একটি মানুষ একটি কবরের সামনের দাঁড়িয়ে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে—এটাই আন্দাজ করা যাবে। এর পরই গেমের শুরু। অর্ধেক জাহাজ আর অর্ধেক স্টিমপাংক ঘরানার ট্যাংক—এমন একটি যান নিয়ে গেমার বেরিয়ে পড়বে অজানার সন্ধানে। নেই কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য, নেই কোনো ম্যাপ ভরা আইকন—শুধু নতুন দুনিয়া দেখার লক্ষ্য, এটুকুই গেমপ্লে। মজার বিষয় এটাই, এতটা সাধারণ হলেও গেমটি কখনো একঘেয়ে লাগবে না।
কিছুক্ষণ ঘোরাফেরার পর বোঝা যাবে, এলাকাটি একসময় বিশাল সাগর ছিল, যা কোনো কারণে শুকিয়ে গেছে। হয়তো তার ফলেই বা অন্য কোনো কারণে দুনিয়ায় নেমে এসেছে ধ্বংসযজ্ঞ। অনেক পোস্ট-অ্যাপোকালিপ্টিক গেমে এ ধরনের ঘটনা নিয়ে কাজ করা হয়েছে। তবে এটাকে বোধ হয় বলা যায় একমাত্র গেম, যেখানে কোনো জম্বি বা অদ্ভুত কোনো শত্রু নেই।
গেমটি একেবারেই অ্যাকশন ঘরানার নয়; বরং এ নতুন দুনিয়া ঘুরে তার ইতিহাস একটু একটু করে জানাই একমাত্র কাজ।
গেমটির গ্রাফিকস থ্রিডি ও টুডির চমৎকার মিশ্রণ। খেলতে হবে সাইড স্ক্রলার হিসেবে। গ্রাফিকসের স্টাইল পুরোই সাদা-কালো ছবির মতো। ডিটেইলস বেশ ভালো, তবে খুব বাস্তবসম্মত নয়। অবশ্য এ গেমে তা আশা করাটাও উচিত না। সাইড স্ক্রলার হয়েও অ্যাকশন ঘরানার না হওয়ায় গেমটি দেখে সিনেমার প্যানিং শটের মতো লাগবে, যেন ধীরে ধীরে দুনিয়া চোখের সামনে উন্মোচিত হচ্ছে। প্রশান্তিদায়ক এক অভিজ্ঞতা।
যদি বলা যায়, গেমপ্লে কী বা গেমে কী কী করার আছে? মূলত গেমারের বাহনটির রক্ষণাবেক্ষণ ও আপগ্রেড করাই লক্ষ্য। শক্তিশালী পাল পাওয়ার পর গেমার দ্রুত ছুটে চলতে পারবে বা আত্মরক্ষার জন্য শিল্ড আপগ্রেড পেলে পারিপার্শ্বিকতার মধ্যে আরো সহজে টেকা যাবে—এভাবেই গেম চলতে থাকবে। গেম দুনিয়া ঘুরে ঘুরে এসব জিনিস খুঁজে বের করতে হবে। এর ফাঁকে ফাঁকে আছে দুনিয়ার ইতিহাস একটু একটু করে আবিষ্কারের আনন্দ।
দিন শেষে গেমটি অনুসন্ধান ঘরানার। অবশ্যই গেমের দুনিয়া ঘুরে দেখাই লক্ষ্য। আর সে দুনিয়ায় দেখার মতো জায়গার কমতি রাখেনি মিক্সটভিশন।
চাইলে গেমটি কন্ট্রোলারে খেলা যাবে; এমনকি ফোনের বাইরে পিসি ও কনসোলেও খেলা যাবে। এতে নেই ইন-অ্যাপ পারচেজের বালাই বা কোনো বিজ্ঞাপন দেখার চাপ।
খেলতে যা যা লাগবে
খেলার জন্য লাগবে না তেমন কোনো শক্তিশালী ফোন। শুধু ডিভাইসে কোয়াডকোর প্রসেসর আর ২ গিগাবাইট র্যাম থাকলেই চলবে।
ডাইলোড লিংক
https://urlzs.com/y3uDR[অ্যানড্রয়েড]
https://apps.apple.com/us/app/far-lone-sails/id1525515023[আইওএস]
বয়স
প্রায় সব বয়সীরাই খেলতে পারবে।
মন্তব্য