<p>নতুন আর্কিটেকচার সংবলিত ইন্টেলের নতুন ১২ প্রজন্মের প্রসেসরগুলো এএমডির বর্তমান প্রসেসরগুলোর চেয়ে ঢের শক্তিশালী। এক্স৮৬ প্রযুক্তির এসব প্রসেসরে থাকছে শক্তিশালী এবং শক্তিসাশ্রয়ী কোর। জানাচ্ছেন <strong>এস এম তাহমিদ</strong></p> <p>অবশেষে বাজারে হাজির হয়েছে ইন্টেলের ১২তম প্রজন্মের প্রসেসর, যার কোডনেম রাখা হয়েছে ‘অ্যালডার লেক’। নতুন রোডম্যাপ ঘোষণা দেওয়ার পর এটাই ইন্টেলের প্রথম নতুন প্রসেসর সিরিজ। মডেলের নাম ও প্রসেসরের দামে তেমন একটা পার্থক্য নেই, তৈরির প্রযুক্তিতেও নেই বিশাল চমক। কিন্তু তাদের নতুন করে ঢেলে সাজানো ট্রানজিস্টর বিন্যাস, বেশ কিছু নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ডেস্কটপ প্রসেসর ডিজাইনে নতুন প্ল্যান বহুদিন পর ইন্টেলকে তার সেরা পারফরম্যান্সের অবস্থান ফিরিয়ে দিয়েছে।</p> <p>অ্যালডার লেক সিরিজের সিপিইউগুলোর মাধ্যমে ইন্টেল প্রথমবারের মতো ডেস্কটপেও শক্তিশালী ও শক্তিসাশ্রয়ী—দুই ধরনের কোর ব্যবহার শুরু করেছে। এর ফলে সাধারণ কাজের সময় অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার ও তাপ দুটিই কমে যাবে। আগে এ ধরনের আর্কিটেকচার ডেস্কটপ ও ল্যাপটপে দেখা না যাওয়ায় পুরনো অপারেটিং সিস্টেম প্রসেসরগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে না, ফলে অন্তত উইন্ডোজ ১০-এর সর্বশেষ আপডেট বা ১১ ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে ইন্টেল।</p> <p>পারফরম্যান্স কোরগুলোর ডিজাইনে চরম পারদর্শিতা দেখিয়েছে ইন্টেল। আগের ১১তম প্রজন্মের প্রসেসরগুলোর তুলনায় ১৪ শতাংশ এবং দশম প্রজন্মের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি পারফরম্যান্স দিতে সক্ষম। এএমডির তুলনায়ও ২০ শতাংশ পর্যন্ত এগিয়ে আছে পারফরম্যান্স। এদিকে এফিশিয়েন্সি কোরগুলোর কল্যাণে সাধারণ কাজের সময় সিপিইউগুলো আগের চেয়ে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কম শক্তি ব্যয় করছে। ডেস্কটপে সেটি বিশাল সমস্যা না হলেও ল্যাপটপে আইডল থাকা অবস্থায় যতটা কমানো যায় শক্তি ব্যয় ততই মঙ্গল। ল্যাপটপের ব্যাটারিলাইফ আরো ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে, দাবি ইন্টেলের। তবে এর পরও ল্যাপটপের ব্যাটারিলাইফ আর্ম প্রযুক্তির প্রসেসরের সমকক্ষ হতে পারবে না। এদিকে ১২তম প্রজন্মের মাধ্যমে ডেস্কটপ ও ল্যাপটপে নতুন দুটি প্রযুক্তির আবির্ভাব হয়েছে—পিসিআই-এক্সপ্রেস ৫ এবং ডিডিআর ৫। ডিডিআর ৫ প্রযুক্তির র‌্যাম ব্যবহারের পাশাপাশি ডিডিআর ৪ র‌্যাম ব্যবহারের সুযোগ থাকছে, কোন প্রযুক্তির র‌্যাম সিস্টেমে থাকবে তা নির্ভর করবে মাদারবোর্ড ডিজাইনের ওপর। ডিডিআর ৫ র‌্যাম একসময় ৮০০০ মেগাহার্জ গতি এবং ১ টেরাবাইট পর্যন্ত ধারণক্ষমতায় পৌঁছাবে ধারণা করা হচ্ছে। পিসিআই এক্সপ্রেস ৫-এর গতি ব্যবহার করার মতো জিপিইউ এবং এসএসডি কোনোটিই এখনো বাজারে নেই, অতএব যারা ১২ প্রজন্মের সিস্টেম আজ কিনবেন তাঁরা সুফল পাবেন বেশ পরে।</p> <p>সব খবরই যে ভালো তা নয়, নতুন সিপিইউগুলোর জন্য ইন্টেল ডিজাইন করেছে এলজিএ ১৭০০ সকেট, ফলাফল আগের সব সিপিইউ কুলার নতুন বোর্ডে বসবে না। সিপিইউ কুলার নির্মাতারা চেষ্টা করছে তাদের কুলারগুলোর ক্রেতাদের কাছে অ্যাডাপটার কিট পৌঁছে দিতে, কিন্তু নতুন সিপিইউ ডিজাইনের ফলে পুরনো কুলার ডিজাইনই অ্যালডার লেক সিপিইউর জন্য কার্যকর নয়। নতুন করে কুলার ডিজাইন করা নিয়ে ভাবতে হবে নির্মাতাদের। নতুন সিস্টেম যাঁরা কিনছেন তাঁদের জন্য এটি বড় সমস্যা নয় কিন্তু ডেস্কটপের শুধু মাদারবোর্ড এবং সিপিইউ যাঁরা পরিবর্তনের কথা ভাবছেন তাঁদের জন্য এটি দুঃসংবাদই বটে।</p> <p>বেশ কিছু পরীক্ষক এরই মধ্যে নতুন সিপিইউগুলোকে ওভারক্লক করে আবিষ্কার করেছেন সঠিক কুলিংয়ের মাধ্যমে ৬ গিগাহার্জ গতি ছাড়াতে পারে অ্যালডার লেক। তবে পূর্ণাঙ্গ পারফরম্যান্স পেতে হলে ৩০০ ওয়াটেরও বেশি শক্তি খরচ হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। সেদিক থেকে কিছুটা কম পারফরম্যান্সে যদি সমস্যা না থাকে তাহলে এএমডি প্রসেসর কেনা এখনো যুক্তিযুক্ত। দেখার বিষয় আগামী দিনে ইন্টেলের ডিজাইন আরো কী চমক উপহার দেয়!</p>