ক্রীড়া প্রতিবেদক : বাংলাদেশের শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের। ২৫ সেকেন্ডেই পেনাল্টি থেকে গোল হজম করতে হয়। সেখান থেকে দারুণভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন যুবারা। নির্ধারিত সময় শেষে ম্যাচ ২-২।
বিজ্ঞাপন
কিক অফের পরপরই বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়েছিলেন ভারতীয় ফরোয়ার্ড হিমাংশু জাংরা। বাংলাদেশ গোলরক্ষক মোহাম্মদ আসিফ তা ফেরালেও হাতে রাখতে পারেননি। গুরকিরাত সিং সেই বল ধরতে গেলে আসিফই তা ক্লিয়ার করতে গিয়ে ফাউল করে বসেন। রেফারিও পেনাল্টির বাঁশি বাজাতে মোটেও সময় নেননি। তা থেকেই গুরকিরাতের গোলে ভারতের প্রথম এগিয়ে যায়। যুবারা অবশ্য তাতে হতোদ্যম না হয়ে বরং আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিল।
ভারত তখন কিছুটা নিচে নেমে সেই চাপ সামলায়। তাদের জমাট রক্ষণে বারবার হানা দিয়েও তখন চির ধরাতে পারছিল না বাংলাদেশ। মইনুল বল নিয়ে বক্সে ঢুকেও যেমন গোলের পথ পাননি ভারতীয় ডিফেন্ডারদের বাধায়। রফিকুল ইসলামের ক্রসে পিয়াস আহমেদের সামনেও বাধা হয়ে থাকেন ডিফেন্ডাররা। শেষ ১৫ মিনিটে ভারত আবার ওপরে ওঠে গোলের আশায়। এ সময় দুটি সুযোগও তৈরি করেছে তারা। কিন্তু বিরতির বাঁশির ঠিক আগে অন্য প্রান্তে বাংলাদেশই পেয়ে যায় সমতা ফেরানো গোলটা। বক্সের জটলা থেকে নেওয়া রাজন হাওলাদারের নিচু শট গোলরক্ষকের হাতের ফাঁক গলে জড়ায় জালে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আবার বাংলাদেশের উচ্ছ্বাস। নিজেদের অর্ধ থেকে একটা লং বল ছিল ভারতীয় বক্সে। সেটি ক্লিয়ার হয়নি ঠিকঠাক। পিয়াসের মাথা ছুঁয়ে তা শাহীন মিয়ার সামনে পড়তেই বাঁ পায়ের অসাধারণ এক শটে তা জালে পাঠিয়ে দিয়েছেন এই ডিফেন্ডার। এই গোলে ম্যাচ মুহূর্তেই যেন ঘুরে যায়। লিগ পর্বে মুখোমুখি দেখায় ২-১ গোলে এগিয়ে গিয়ে ঠিকই লিডটা ধরে রেখে মাঠ ছেড়েছিল বাংলাদেশ। তবে এটা ফাইনাল, আর তা বুঝিয়ে দিতেই যেন ৬০ মিনিটেই আবার সমতা ফেরায় ভারত। এবার বক্সের ওপর থেকে নেওয়া গুরকিরাতেরই শট জড়ায় জালে। ২-২ হয়ে গেলে ম্যাচ পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকে। তখন জিততে পারে যেকোনো দলই। তবে খেলা অতিরিক্ত সময়ের গড়ানোর আগে ভারতই আরো বেশ কয়েকটা সুযোগ তৈরি করেছিল। ডিফেন্ডার আজিজুল হক গোললাইন থেকে একটা বল ফিরিয়েছেন। গোলরক্ষক আসিফ আরেকবার শেষ মুহূর্তে হাত বাড়িয়ে ফিরিয়েছেন ব্রিজেশ গিরির ফ্লিক।
তাতে ৯০ মিনিট পর্যন্ত বাংলাদেশ ম্যাচে থাকলেও অতিরিক্ত সময়ের খেলা শুরু হতেই যেন আশাটা শেষ হয়ে যায়। ভারত যে পর পর দুই গোল করে ম্যাচ একরকম বের করে নেয় বাংলাদেশের কাছ থেকে। প্রথমটা ডান দিক থেকে থ্রু পাস ধরে কোনাকুনি শটে গোলরক্ষককে পার করে বল জালে পাঠিয়েছেন হিমাংশু। পরেরটা বাঁ দিক থেকে। এবারও বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা ভারতীয় ফরোয়ার্ডের মুভ ধরতে পারেননি। নিচ থেকে বল পেয়ে মুহূর্তেই বেরিয়ে গেছেন, এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে এরপর ঠিকই বল জালে পাঠিয়েছেন। ম্যাচ তখন ৪-২। অতিরিক্ত সময়ের প্রথম অর্ধেই সেটা ৫-২ হয়ে যাবে, এতটা ভাবা যায়নি। কিন্তু তা-ই হয়েছে। গুরকিরাতই এরপর নিজের চতুর্থ গোলটি করেছেন দূরপাল্লার এক শটে।