<p>লিগের শুরু থেকে ধুঁকতে থাকা শেখ রাসেলের সঙ্গে এখনকার রাসেলকে মেলানো যাবে না কিছুতেই। তারা এখন বড় ম্যাচ জেতে, পয়েন্ট হারালেও থাকে ভালো খেলার তৃপ্তি, আর হারলে ঘুরে দাঁড়ায় পরের ম্যাচেই। আবাহনীর মতো পরাশক্তিও তখন সন্ত্রস্ত হয়ে ওঠে। গতকাল সিলেটের মাঠে যেমনটা দেখা গেছে।</p> <p>আক্রমণের পর আক্রমণে আবাহনীকে এমন কোণঠাসা করে ফেলতে পেরেছে খুব কম দলই। এদিন জুলফিকার মাহমুদের শেখ রাসেল দেখিয়েছে তা-ই। একের পর এক সুযোগ তৈরি করেছে। কিন্তু কখনো ভাগ্যাহত, কখনো নিখুঁত ফিনিশিংয়ের অভাবে গোল পাওয়া হচ্ছিল না। সেই খেসারতও তাদের দিতে হয়, প্রথমার্ধে আবাহনী একটি সুযোগই কাজে লাগিয়ে গোল করে ফেললে। কিন্তু পিছিয়ে পড়েও রাসেল চাপটা আলগা করেনি। ৮০ মিনিটে মানিক হোসেনের বিতর্কিত লাল কার্ডে ১০ জনের দল হয়ে পড়েও। অতিরিক্ত সময়ে দীপক রায়ের সমতা ফেরানো গোলে সেই প্রতিদানই পেয়েছে তারা। ১-১ সমতায় আবাহনীর মাঠ থেকে তুলে নিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।</p> <p>কুমিল্লায় চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে দারুণ খেলে জয়ের পরই সাইফ স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে গত ম্যাচটি তারা হেরেছে। সিলেটে কঠিন অ্যাওয়ে ম্যাচটিতেই কী দারুণভাবে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে তারা। আবাহনী বল পজেশন রেখে ধীরে আক্রমণে উঠতে চেয়েছে। কিন্তু রাসেল বল পেয়েই দ্রুত ছুটেছে গোলমুখে। মাঝখানে চার্লস দিদিয়ের হয়ে ওপরে ইসমাইল আকিনাদে একের পর এক হানা দিয়েছেন আবাহনীর বক্সে। প্রথম সুযোগটা অবশ্য পেয়েছিলেন সাদ উদ্দিন। রিচার্ড গাডজে তাঁকে বল বের করে দিয়েছিলেন, কিন্তু সাদের শট লাগে সাইড নেটে। পরেরবার কাউন্টারে দিদিয়ের বের করে দেন আকিনাদেকে, তাঁর কোনাকুনি শটটিও পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।</p> <p>অন্য প্রান্তে মেহেদী হাসান বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। তাঁর প্রথম শটটি ক্রসবার উঁচিয়ে যায়, পরেরটা ফেরান আশরাফুল ইসলাম। শেষ পর্যন্ত মেহেদীর ওই শটই বিপদ ডেকে আনে শেখ রাসেলের। ৩৪ মিনিটে বক্সের ওপর রাফায়েল আগস্তুর বাড়ানো বলে বাধাহীন এক শটেই আবাহনীকে প্রথম এগিয়ে দেন তিনি। কিন্তু পিছিয়ে পড়েও রাসেল ফের হানা দেয়। এবার আকিনাদের শটে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সাইড পোস্ট। সাদের বুদ্ধিদীপ্ত এক থ্রু পাসে নেওয়া শটটিও থাকেনি পোস্টে। বিরতির পর আকিনাদেরই ভলি দারুণ রিফ্লেক্সে ফেরান শহীদুল। পরের মুহূর্তেই আবার নাসিরউদ্দিনের হেড লাগে ক্রসবারে। মানিকের লাল কার্ডটা এর পরই। বল পায়ে থাকা কলিনদ্রেসকে স্লাইডিং চার্জ করেছিলেন তিনি, বলও পেয়েছিলেন। কিন্তু রেফারি আনিসুর রহমান সরাসরি দেখান লাল কার্ড। এরপর অবশ্য আবাহনীর একটি পেনাল্টির আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি। কিন্তু ১০ জনের দল হয়ে পড়েও শেখ রাসেল হাল না ছাড়ার পুরস্কারটা পেয়েছে শেষ পর্যন্ত। অতিরিক্ত সময়ের খেলা চলছে তখন, রহমত মিয়ার কর্নারে চার্লস দিদিয়ের হেড ওপরে উঠে যায়, বক্সের ভেতর লাফিয়ে উঠে সেই বলই জালে পাঠিয়েছেন দীপক।</p> <p>১৫ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে রাসেল অবশ্য এখন আট নম্বরে। তবে আবাহনীকে শিরোপাদৌড়ে পিছিয়ে দিয়েছে তারা।</p>