ছবি : মীর ফরিদ
ক্রীড়া প্রতিবেদক : ছয় ফুটের কাছাকাছি উচ্চতা। পেশির গড়ন, চলন-বলনে ভীষণ আক্রমণাত্মক ভাব। সাম্প্রতিক সময়ে মেসবাহ আহমেদসহ যে কয়জন দ্রুততম মানব দেখেছে বাংলাদেশ, তাঁদের তুলনায় ব্যতিক্রমই। সেই ইসমাইল জাতীয় অ্যাথলেটিকসে কাল টানা তৃতীয়বারের মতো ১০০ মিটার জিতে ঘোষণা দিয়েছেন—এখন তিনিই রাজা।
২০১৯-এ প্রথম জিতেছিলেন। পরের সামার মিটে বিকেএসপির হাসানের কাছে হারলেও জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ঠিকই মুকুট ধরে রাখেন। এবারও হাসানকে বেশ পেছনে ফেলেই ধরে রেখেছেন দ্রুততম মানবের খেতাব। মাঝখানে দীর্ঘ করোনাকাল। একজন অ্যাথলেটের ফিটনেস, পারফরম্যান্স ধরে রাখার কঠিন পরীক্ষা ছিল এই সময়টা। কিন্তু ইসমাইলের দৌড় কাল মনে করাল তিনি যেতে চান বহুদূর, ‘সামনে বাংলাদেশ গেমস আছে, এরপর অলিম্পিক। আমি আমার টাইমিংটাকে অনেক ওপরে নিতে চাই। দেশের জন্য বড় কিছু করাই আমার স্বপ্ন।’ ২০১৯-এ প্রথম দৌড়েই হাতঘড়িতে গোলাম আম্বিয়ার ২৭ বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিলেন ইসমাইল ১০.২০ সেকেন্ডে দৌড়ে। ট্র্যাকের বাজে অবস্থার কারণে গত জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ হয় ঘাসের মাঠে। সেখানে চ্যাম্পিয়ন হলেও সেই টাইমিং কোনো গুরুত্ব বহন করে না। এবার সেই পুরনো ছেঁড়া ট্র্যাকের সঙ্গে করোনাও গতি কমিয়েছে কিছুটা। ইসমাইল কাল দৌড় শেষ করেছেন ১০.৫৫ সেকেন্ডে। ট্র্যাকের করুণ দশাই বেশি আক্ষেপ ঝরিয়েছে তাঁর কণ্ঠে, ‘এই ট্র্যাক গতি বাড়ানোর বদলে কমিয়ে দেয়। পায়ের কিকে ট্র্যাক থেকে ফিরতি কিছু তো পাই-ই না উল্টো দেবে যেতে বসে। ছেঁড়ার কারণে ইনজুরির শঙ্কা তো আছেই। ফলে গতি বাড়ানোটা খুব কঠিন।’ ১০.৬০-এ দৌড়ে দ্বিতীয় হয়েছেন ইসমাইলেরই নৌবাহিনী সতীর্থ রকিবুল হাসান। তৃতীয় হওয়া সেনাবাহিনীর হাসান সময় নিয়েছেন ১০.৭০ সেকেন্ড।
মেয়েদের ট্র্যাকে শিরিন আক্তার বরাবরের আধিপত্য ধরে রেখেছেন। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ও সামার মিট মিলিয়ে কাল ১১তম বারের মতো দ্রুততম মানবীর খেতাব জিতেছেন ১১.৮০ সেকেন্ডে। ২৫ বছর বয়সী এই স্প্রিন্টার দারুণ এক দৌড়ে কাল নৌবাহিনীকে ১০০ মিটার রিলেও জিতিয়েছেন। শেষ ল্যাপে ব্যাটন হাতে নেন তিনি দ্বিতীয় স্থানে থেকে, কিন্তু সেখান থেকেই পেছনে ফেলেছেন তিনি সেনাবাহিনীর শরিফাকে। নৌবাহিনীর ছেলেদের দল রিলে জিতেছে অবশ্য উসাইন বোল্টের জ্যামাইকার মতো। জহির রায়হানের কাছ থেকে ব্যাটন নিয়ে শেষ ল্যাপে ইসমাইল যখন দৌড়াচ্ছেন সেনাবাহিনীর স্প্রিন্টার তখন কয়েক মিটার পেছনে তাঁর থেকে। দূরপাল্লার দৌড়ে অবশ্য আধিপত্য সেনাবাহিনীর। রকিবুল ইসলাম ও সুমি আক্তার ১৫০০ মিটার ও সোহেল রানা জিতেছেন ৫০০০ মিটার।
মন্তব্য