<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ছাত্র গণআন্দোলনে নানান বিষয়ে কালের কণ্ঠের সঙ্গে কথা বলেন, সমন্বয়ক <strong>তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী। </strong>সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ঢাবি প্রতিনিধি <strong>মানজুর হোছাঈন মাহি</strong></span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""> </span></span></p> <p style="text-align:justify">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সহসভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন তিনি। শেখ হাসিনার সরকার পতনের দুই মাস পূর্তি উপলক্ষে তাঁর প্রত্যাশা ও ভাবনা জানতে এই সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কালের কণ্ঠ’র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মানজুর হোছাইন মাহি।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : জুলাই বিপ্লবে আপনার অংশগ্রহণ সম্পর্কে কিছু বলুন। কিভাবে এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন আপনি?</p> <p>তাহমিদ : ব্যক্তিগতভাবে সরকারি চাকরির প্রতি তেমন আগ্রহ না থাকলেও কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রথম থেকেই যুক্ত ছিলাম মোটাদাগে তিনটি কারণে। প্রথমত, কোটা একটি বৈষম্যমূলক পদ্ধতি, যার মাধ্যমে প্রকৃত মেধাবীরা যেমন বঞ্চিত হয়, তেমনি সত্যিকার পিছিয়ে পড়া মানুষদের সাহায্য করা সম্ভব হয় না এবং কোটার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের তৃতীয় প্রজন্মকে সুবিধা দেওয়া দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি না-ইনসাফির একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে তৈরি হয়েছিল। দ্বিতীয়ত, আওয়ামী</p> <p>লীগ তার নেতাকর্মীদের নামে অসংখ্য ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ইস্যু করেছে এবং পরে এটা সরকারি চাকরিতে দলীয়করণের নিরাপদ পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহূত হয়েছিল।  সর্বশেষ, অবৈধ হাসিনা সরকার মুক্তিযুদ্ধ ন্যারেটিভ তৈরি করার মাধ্যমে নিজের ক্ষমতাকে বৈধতা দিয়েছে। বৈষম্যমূলক ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এই বৈধতার একটি বর্ধিতরূপ ছাড়া আর কিছুই নয়।</p> <p>আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও নিজেকে আপাদমস্তক একজন রাজনৈতিক মানুষ মনে করি। তাই ১৫ বছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে দিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার নৈতিক ভিত্তি ভেঙে দেওয়ার একটি সুযোগ হিসেবে দেখেছি।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : আন্দোলনে রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনগুলোর ভূমিকা কেমন ছিল বলে আপনি মনে করেন?</p> <p>তাহমিদ : জুলাই বিপ্লবকে যদি আমরা দুই ভাগে ভাগ করি, তাহলে প্রথম ভাগটি হবে শুধুই কোটা সংস্কার আন্দোলন, যেটি চলেছে মূলত ১৪ তারিখ বিকেল পর্যন্ত।  এই পর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলো নৈতিকভাবে কিংবা তাদের লোকবল দিয়ে সাহায্য করেছিল। শিবির হল থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মোবিলাইজ করতে ভূমিকা রেখেছিল। ছাত্র ইউনিয়নসহ অন্যান্য বামদল প্রায়ই মিছিলযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে যুক্ত হতো। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিও লক্ষ্যণীয় ছিল।</p> <p>দ্বিতীয় পর্যায়ে অর্থাৎ ১৪ তারিখ রাতে যখন সাধারণ শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার, রাজাকার, কে বলেছে, কে বলেছে, স্বৈরাচার, স্বৈরাচার’ স্লোগানে হল থেকে বেরিয়ে আসে তখনই এটা রাজনৈতিক আন্দোলনে পরিণত হয় এবং এর পর থেকেই ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার একে রাজনৈতিকভাবে দমানোর চেষ্টা করে। পরে আন্দোলনকে জেলা, উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের দোসর ছাড়া সব রাজনৈতিক দলই মাঠে থেকে এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছে।  ১৮ তারিখ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকার কথা না বললেই নয়, তাদের সাহসী ভূমিকা জুলাই বিপ্লবকে নতুন পর্যায়ে পৌঁছে দেয়।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : বিপ্লবের দুই মাস পর দেশের পরিস্থিতি কেমন দেখছেন? যে পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন করেছেন তা কী দেখতে পারছেন?</p> <p>তাহমিদ : কোনো একটি সরকার বা দেশের অবস্থা বিচার করার জন্য দুই মাস অনেক কম সময়। দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনে দেশের সব প্রতিষ্ঠানেই চরম মাত্রায় দলীয়করণ হয়েছে এবং বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে আমরা দেখেছি, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়েছে। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে মব জাস্টিস, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও ভিন্নমতের স্থাপনার ওপর হামলা হয়েছে। এসব অপ্রত্যাশিত ও লজ্জাজনক।</p> <p> </p> <p> </p> <p> </p>