<p>আদালত কক্ষে ঘড়ির কাঁটা যখন সকাল ১১টা ৩৮ মিনিট, তখন বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিন এজলাসে বসেন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণার জন্য। এর ঠিক এক মিনিট পরই বিদ্যুৎ চলে যায়। এই বিদ্যুৎবিহীন কক্ষে বিচারকের পেছনে দাঁড়িয়ে আদালত কর্মচারী তাঁর মোবাইল ফোনের আলো ফেলেন রায়ের কপির ওপর। আর সেই আলোয় রায় পড়তে থাকেন বিচারক। তিনি একে একে ফাঁসির আসামি, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামির নামের তালিকা পাঠ ও সাজা ঘোষণা করেন। দুপুর ১২টা ৩ মিনিটে বিদ্যুৎ আসে। তখন বিচারক অন্যান্য সাজাপ্রাপ্ত আসামির নামের তালিকা ও তাঁদের সাজা ঘোষণা করেন।</p> <p>প্রথম মামলায় (দণ্ডবিধিতে হত্যা মামলা) রায় ঘোষণা শেষ হতে না হতেই আবার বিদ্যুৎ চলে যায়। তখন দুপুর ১২টা ৮ মিনিট। এবার মোবাইল ফোনের আলোর পাশাপাশি একটি চার্জার লাইটের আলোয় দ্বিতীয় মামলায় (বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলা) রায় পড়তে থাকেন বিচারক। এরই মধ্যে একটি হ্যান্ডমাইক আনা হয়। সেই মাইকেই রায় পড়েন বিচারক। রায়ের পর্যবেক্ষণ অংশ পাঠের পর সাজা ঘোষণার ঠিক আগে দুপুর সোয়া ১২টায় বিদ্যুৎ আসে। দুপুর ১২টা ২৩ মিনিটে বিচারক রায় ঘোষণা শেষে এজলাস থেকে নেমে যান।</p> <p>আদালত কক্ষে উপস্থিত হতে পদে পদে বাধা : চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা পার হয়ে নাজিমুদ্দীন রোডে পুরনো কারাগারের পাশে লাল ভবনে স্থাপিত আদালত কক্ষে উপস্থিত হন আইনজীবী, সাংবাদিকরা। সকাল থেকেই সেখানে উপস্থিত হতে থাকেন সংশ্লিষ্টরা। সাংবাদিকদের জন্য একটি সাউন্ড বক্স দিয়ে আদালত ভবনের বাইরে ছোট একটি খোলা চত্বরে রায় কভার করার ব্যবস্থা করা হয়। আর এ কারণে অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠেন সাংবাদিকরা। রায় ঘোষণা বর্জনের হুমকি দেন গণমাধ্যমকর্মীরা। এতে কিছুটা টনক নড়ে প্রশাসনের। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সাংবাদিকদের আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় আদালত কক্ষের বাইরে বারান্দায় দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করেন প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীলরা। এ ব্যবস্থা দেখে সাংবাদিকরা আরো ক্ষুব্ধ হন। তাঁরা আবারও বর্জনের হুমকি দেন। এরপর একই ব্যক্তিরা সাংবাদিকদের পেছনের দরজা দিয়ে আদালত কক্ষে প্রবেশের ব্যবস্থা করেন। সাংবাদিকরা হুড়মুড় করে আদালত কক্ষে ঢুকে পড়েন। কিন্তু সেখানে সাংবাদিকদের বসার জন্য কোনো ব্যবস্থা ছিল না। তার পরও আদালত কক্ষে ঢুকতে পেরে সন্তুষ্ট সাংবাদিকরা যে যেখানে পারেন দাঁড়িয়ে সংবাদ সংগ্রহে মনোযোগী হন।</p> <p> </p> <p> </p>