কাজী নজরুল ইসলাম রচিত পত্রোপন্যাস ‘বাঁধন-হারা’। নজরুলের প্রথম উপন্যাসও এটি। করাচিতে থাকাকালে তিনি ‘বাঁধন-হারা’ উপন্যাস রচনা শুরু করেন। একজন বাঙালি সৈনিক কিভাবে যুদ্ধের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছিল, তা চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে ‘বাঁধন-হারা’ উপন্যাসে।
বিজ্ঞাপন
নজরুল নিজে যোগদান করেছিলেন বাঙালি পল্টনে। দুই বছর সামরিকজীবন কাটিয়ে ১৯২০ সালে ফিরে এসেছিলেন দেশে। তাঁর এই অভিজ্ঞতাই এ উপন্যাসের অন্যতম পুঁজি। তবে সামরিকজীবনের অভিজ্ঞতার বয়ান থাকলেও ‘বাঁধন-হারা’ আসলে একটি প্রেমের উপন্যাস। উপন্যাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র মাহবুবা নুরুল হুদাকে প্রচণ্ড ভালোবাসে, কিন্তু নুরুল কোনো বাঁধনে জড়াতে চায় না। অবশেষে মাহবুবার বিয়ে হয়ে যায় চল্লিশোর্ধ্ব এক জমিদারের সঙ্গে। কিছুদিন পরই বিধবা হয়ে যায় মাহবুবা। পরে নুরুল হুদাকে সে লেখে যে সে মক্কা ও মদিনায় তীর্থভ্রমণে যাবে এবং নুরুল হুদার কর্মস্থল বাগদাদেও যেতে পারে। নুরুল হুদা মাহবুবাকে নিষেধ করে না। তাদের দুজনের দেখা হওয়ার সম্ভাবনার মাধ্যমে শেষ হয় উপন্যাসটি। এই উপন্যাসে মোট ১০টি চরিত্র—আয়েশা, খুকি, রোকেয়া, মাহবুবা, মনুয়ার, নুরুল হুদা, রবিউল, রাবেয়া, সাহসিকা ও সোফিয়া। তারা প্রায় প্রত্যেকেই চিঠিতে নিজেদের তুলে ধরে। নিজেদের সম্পর্কে এবং নিজেদের ধ্যান-ধারণা ও মতাদর্শ নিয়ে তারা চিঠির মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে কথা বলে।
