<p>পরিকল্পনা ছিল সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করতে হবে। সে লক্ষ্যেই গণবিশ্ববিদ্যালয়ের শুভসংঘের বন্ধুদের একত্রে বসা। রানা মিত্রের এই পরিকল্পনাটি শুনে নাঈমের প্রশ্ন —কিন্তু এসব উপকরণ কিনতে তো বেশ কিছু টাকা লাগবে। এই টাকা আসবে কোথা থেকে। কেউ বলছে স্পন্সর আবার কারো মত চাঁদা তুলেই এটা করা যায়। কিন্তু ক্যাম্পাসে চাঁদা তোলাটাও শোভন মনে হচ্ছে না। সবাই ভাবছে ধান্ধা আছে এই কাজে। নতুন কিছু একটা করতে হবে। রানার মাথায়ই এলো অর্থ জোগানের চমত্কার পরিকল্পনা। পরিকল্পনাটি ছিল শুভসংঘের বন্ধুরা যে যার বাড়িতে বসে যেমন পারে তেমনভাবে শীতকালীন পিঠা বানিয়ে নিয়ে আসবে। ক্যাম্পাসের পিঠা উৎসবে স্টল নিয়ে বিক্রি হবে এই পিঠা। আর বিক্রির টাকায় হয়ে যাবে শিশুদের শিক্ষা উপকরণ কেনা। পছন্দ হয়ে গেল পরিকল্পনাটি। শুরু হলো কর্মযজ্ঞ। গত ৩০ জানুয়ারি গণবিশ্ববিদ্যালয়ে শুভসংঘ আয়োজিত পিঠা উৎসবে অংশগ্রহণের নেপথ্যের কাহিনীটি ছিল এমনই।</p> <p>খুব সকালেই পিঠার স্টলগুলো বর্ণিল সাজে সজ্জিত হয়ে ওঠে এদিন। বেলুন, প্ল্যাকার্ড আর ফেস্টুনে ছেয়ে যায় ক্যাম্পাস। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা নানা নামের বাহারি সাজের সুস্বাদু ১০০ রকম পিঠা নিয়ে হাজির হয় উৎসবে। উৎসবের পিঠার মধ্যে ছিল ভাপা, পুলি, পাটিসাপটা, দুধচিতই, নকশি পিঠা, গোলাপ পিঠা ও জামাই পিঠার মতো বাহারি নামের অসংখ্য পিঠা। উপস্থিত সবাই বিভিন্ন ধরনের পিঠার স্বাদ গ্রহণ করেন। গণবিশ্ববিদ্যালয় কালের কণ্ঠ শুভসংঘের একঝাঁক তরুণ। যাঁদের চোখে সর্বদাই একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন। যাঁরা স্বপ্ন দেখেন দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার। তাঁরা তাঁদের জীবন, শিক্ষা—সব কিছুই দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত। এবার পিঠা উৎসবের জন্য শুভসংঘের সদস্যরা নিজের হাতে পিঠাগুলো তৈরি করেন। বিভিন্ন পিঠা বিক্রি করে যে অর্থ উপার্জন হয়েছে, তা দিয়ে গরিব ও শিক্ষাবঞ্চিত শিশুদের কাছে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার তাঁদের।</p> <p>শুভসংঘের স্টল গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া নানা রকম পিঠা দিয়ে সাজানো হয়। মূলত শুভসংঘ তাদের স্টলের মধ্য দিয়ে গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি কিছুটা হলেও ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। বেশ ভালোই জমে উঠেছিল সেদিন শুভসংঘের স্টলটি। পিঠাও বিক্রি হয় সবগুলো। এখন এই টাকায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য শিক্ষা উপকরণ কেনা হয়েছে। বিতরণ করা হবে শিগগিরই।</p>