আফরান নিশো ছবি : ‘সিন্ডিকেট’-এর সৌজন্যে
হিসাবি হয়েছিলেন আগেই। গেল দুই বছরে ঈদ কি ভালোবাসা দিবস—নিশো কাজ করেছেন আঙুলের কর গুনে। গত বছর নভেম্বর থেকে টানা ওয়েব সিরিজ নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। আসছে কোরবানির ঈদে বড়জোর পাঁচটি নাটক-টেলিছবিতে পাওয়া যাবে তাঁকে।
বিজ্ঞাপন
কৈফিয়ত দেওয়ার ভঙ্গিতে নিশো বলেন, ‘বিগত সাত মাসে ওটিটির বাইরে কাজ খুব একটা করিনি। রোজার ঈদের পর প্রায় দেড় মাসের মতো সময়ে ওয়েব সিরিজগুলোর ডাবিং ও নতুন কিছু ওয়েব কনটেন্টের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। নতুন কনটেন্টের ঘোষণা আসবে সামনেই। কিছু প্রমোশনাল কাজও করেছি। টিভি নাটকের পরিচালক বা চ্যানেলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছি, তাঁদের কাজ করার একটা প্রেসার তো থাকেই। সে কারণেই হাতে গোনা চার-পাঁচটা কাজ করছি। বাকি সময়টা ওটিটির জন্যই বরাদ্দ রেখেছি। ’
এবারই প্রথম হইচইয়ের কাজ করছেন নিশো। ‘কাইজার’ একজন হোমিসাইড ডিটেকটিভ। ব্যক্তিগত জীবনে বিপর্যস্ত, বদমেজাজি এবং ভিডিও গেমে আসক্ত কাইজার। সে প্রথম শ্রেণির ডিটেকটিভ, কিন্তু রক্ত দেখলেই ভয় পায়। সিরিজটি প্রসঙ্গে আফরান নিশোর ভাষ্য, ‘সাধারণ মানুষের মতোই জীবন কাইজারের। অন্য অনেক গোয়েন্দার মতো সে সুপার হিউম্যান নয়। তার জীবনে অনেক সমস্যা আছে। ’
‘কাইজার’ নিশোর জীবনে অনেক ‘প্রথম’ নিয়ে এসেছে। বলেন, “পরিচালক তানিম নূরের টিমের সঙ্গে প্রথমবার কাজ করলাম। আমার স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিকিতা নন্দিনী শিমু, তাঁর সঙ্গে প্রথম অভিনয় করলাম। মোস্তাফিজুর নূর ইমরান আমার বন্ধুর চরিত্র করেছেন। দারুণ এই অভিনেতার সঙ্গেও প্রথম কাজ করলাম। আমার মেয়ের চরিত্রে আছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া শিশুশিল্পী হৃদ্ধি। আমার গেমিং পার্টনার সৌম্য, বৃন্দাবন দা-খুশি আপার ছেলে। বেশ প্রমিজিং অ্যাক্টর। ওর সঙ্গেও প্রথম কাজ। দীপান্বিতা মার্টিন আর আমি দুজনই এত দিন ধরে নাটকে কাজ করি। আমরা প্রথমবার পর্দা ভাগাভাগি করলাম এই সিরিজেই। এমন অনেক ‘প্রথম’-এর ব্যাপার আছে এই সিরিজে। ”
এর আগে দেশি ওটিটি প্ল্যাটফরম চরকির ‘মরীচিকা’য় করেছিলেন মন্দ মানুষের চরিত্র, ‘রেডরাম’-এ হয়েছিলেন গোয়েন্দা কর্মকর্তা। এবার ‘সিন্ডিকেট’-এ আসছেন অ্যাসপারগার সিনড্রোমে আক্রান্ত এক তরুণের চরিত্রে। টিজারে দেখা গেছে, তাঁর মাথায় ছোট চুল, খোঁচা খোঁচা দাড়ি। চোখ দুটি ঘোলাটে। কখনো তিনি প্রেমিক কবি, কখনো বসে আছেন থানায় পুলিশের সামনে। শিহাব শাহীনের মনস্তাত্ত্বিক রহস্যময় এই থ্রিলারে আফরান নিশোর সঙ্গে আছেন নাজিফা তুশি ও তাসনিয়া ফারিণ। সিরিজে নাজিফা তুশির সঙ্গে প্রেম করতে দেখা যাবে নিশোকে, তবে ফারিণের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কী, সেই রহস্যটা ফাঁস করতে চাইলেন না নিশো। নিশো বলেন, “অ্যাসপারগার সিনড্রোমে ভোগা মানুষ সমাজ, মানুষজন থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলে। এমনই এক ইনট্রোভার্ট যুবক আদনান যখন জিসা নামের তরুণীর প্রেমে পড়ে, সেই প্রেম দেখার মতোই হবে। যেভাবে মানুষ স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠে, আদনান সেভাবে বেড়ে ওঠেনি। তবে ‘সিন্ডিকেট’ শুধু প্রেমের গল্প নয়; ক্রাইম, রহস্য উদঘাটনের বিষয়ও আছে। তুষির সঙ্গে প্রথমবার অভিনয় করলাম এখানে। ”
সিন্ডিকেটের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে চুল কেটে ফেলেছিলেন। কাস্টিংয়ের কিছু সমস্যার জন্য শুটিং পিছিয়ে যায়। তবু হঠাৎ পাওয়া সময়ে অন্য কোনো কাজ করেননি নিশো। কাস্টিং সমস্যার সমাধান হওয়ার পর জানুয়ারির শুরুতে ২০ দিনের বেশি সময় ধরে শুটিং করেছিলেন।
নিশোর আরেক রূপ দেখা যাবে এবার টেলিভিশনে। বিটিভির ঈদের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘আনন্দ মেলা’ উপস্থাপনা করেছেন। আগে অতিথি হয়ে অনুষ্ঠানটিতে গিয়েছিলেন। এবার উপস্থাপনার দায়িত্ব পেলেন। নিশো অভিনীত নাটকের জনপ্রিয় চার-পাঁচটি চরিত্রকেও মঞ্চে দেখা যাবে। বাস্তবের নিশোর সঙ্গে চরিত্রের নিশোরা আনন্দ মেলার মঞ্চ জমিয়ে তুলবেন এবার।
নিশো বলেন, ‘গত বছরই বিটিভিতে তালিকাভুক্ত হয়েছি। বিটিভির অডিটরিয়ামে কাজ হয়েছে। ওখানে যেভাবে শুটিং হয় সেটাও একটা অন্য রকম ভালো লাগা। যাঁরা নির্দেশক বা প্রযোজক ছিলেন তাঁরা একটু অন্যভাবে ভাবার চেষ্টা করেছেন এবারের আনন্দ মেলা নিয়ে। অনেক সিনিয়র বা আমাদের সমসাময়িকদের সঙ্গে দেখা হয়েছে। আমাদের তো ব্যক্তিগতভাবে আড্ডা দেওয়ার ওভাবে জায়গা নেই। মন খারাপ হলে যে ওখানে গিয়ে আড্ডা দেব, এমন অবস্থা নেই। এবার কাজ করতে গিয়ে যেমন অপু বিশ্বাসের সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছে। অথচ আমরা দুজনই শোবিজে কাজ করছি কত দিন! ইলিয়াস কাঞ্চন সাহেবের সঙ্গে নাটকে অভিনয় করেছি। তবে অনেক দিন পর দেখা হলো। পরীমনি-শরীফুল রাজদের সঙ্গে দেখা হলো। সব মিলিয়ে একদমই অন্য রকম একটা অভিজ্ঞতা হলো। ’