‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৮’ প্রতিযোগিতায় যে কজন মেধার স্বাক্ষর রেখেছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম নিশাত নাওয়ার সালওয়া। যখন অনেক প্রতিযোগীর ভুলভাল উত্তরে বিব্রত হয়েছিল আয়োজকরা, তখনো নিশাত ছিলেন উজ্জ্বল। উপস্থিত প্রশ্নোত্তরে তিনি ছিলেন সাবলীল। সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন মুকুট জয়ের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর মাথায় মুকুট ওঠেনি। হয়েছিলেন প্রথম রানার-আপ। অবশ্য এ নিয়ে তাঁর আফসোস নেই, ‘প্রতিযোগিতার পর অনেকেই আমাকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য ফোন দিয়েছিলেন। তাঁদের জানিয়েছি, এখানে সান্ত্বনা দেওয়ার কিছু নেই। মুকুট না পাওয়ায় আমার আফসোস নেই।’
আফসোস না থাকার কারণও জানালেন, ‘এই প্রতিযোগিতা আমাকে দিয়েছে আত্মবিশ্বাস। পুরো গ্রুমিং সেশনে আমি ভালো করেছি। বিচারকরা আমার প্রশংসা করেছেন। সেরা দশে আসার আগের এক পর্বে আমার নাচে মুগ্ধ হন বিচারকরা। মঞ্চে এসে তাঁরা বাহবা দিয়েছেন, আমার সঙ্গে নেচেছেন। আমার আত্মবিশ্বাসের মাত্রা সেদিনই বেড়ে গিয়েছিল। এটা তো দারুণ প্রাপ্তি।’
এবারের মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিযোগী হিসেবে চলচ্চিত্রে অভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন। রাজু চৌধুরীর ‘রাজকন্যা’য় নাম ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হলেন। শুরুতেই বাজিমাত! ‘তা বলতে পারেন’—এক কথায় বললেন নিশাত।
একটু থেমে বললেন, ‘শোবিজে কাজ করব কখনোই ভাবিনি। ছোটবেলায় বরং খেলাধুলায় আসক্ত ছিলাম। স্কুলে স্পোর্টসের বিভিন্ন ইভেন্টে পুরস্কারও পেয়েছি। কখনো নাচ বা গান করিনি। এসব আমাকে টানেওনি। কিন্তু মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ আমাকে বদলে দিল। এখন আবার চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে যাচ্ছি। ভাবতে গিয়ে নিজেরই অবাক লাগে!’
প্রতিযোগিতার বিজ্ঞাপন দেখে হুট করেই আবেদন করার বিষয়টা মাথায় আসে। সাতপাঁচ না ভেবেই আবেদন করে বসলেন। পরিবারের সদস্যরা শুরুতে জানতেনই না এ খবর। পরে অবশ্য কনভিন্স করতে হয়েছে। নিশাত বলেন, ‘আমার মতামতকে গুরুত্ব দেয় পরিবার। আমার ওপর তাদের বিশ্বাস তৈরি হয়েছে। চলচ্চিত্রে পা দেওয়ার গল্পটাও একই রকম। বেশ কিছু নাটকে অভিনয়ের অফার পেয়েছিলাম, ফিরিয়ে দিয়েছি। আমার কথা হচ্ছে, কিছু করতে হলে চলচ্চিত্রই করব। অবশেষে সেই সুযোগটাও আসে।’
কিভাবে? চটপট উত্তর দিলেন ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার এই তরুণী, ‘জাকির স্যার নায়িকা খুঁজছিলেন। কোনো এক মাধ্যমে আমার ফেসবুক আইডিটা পেয়েছিলেন, সেখানে আমার ছবি দেখে পছন্দ করেন। এরপর আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ব্যস।’
চলচ্চিত্রের গল্প শুনেছেন? মানে কেমন হবে আপনার অভিষেক চলচ্চিত্র? ‘গল্পের আগে ছবির একটা গান শুনি, গানটা বেশ ভালো লাগে। এরপর ঘণ্টা দেড়েক ধরে নির্মাতা গল্প শোনান। গল্পটা পুরনো, তবে উপস্থাপনে আধুনিকতার ছাপ আছে। মনে হয়েছে সব প্রজন্মই ছবিটা ইতিবাচকভাবে নেবে। হিট না হলেও অন্তত ফ্লপ করবে না এই ছবি’—বললেন নিশাত।
ফেব্রুয়ারিতেই শুটিং। শুটিংয়ের আগে অবশ্য নায়ক চূড়ান্ত করবেন পরিচালক। এ বছরের মাঝামাঝি ছবিটি মুক্তি পাবে, জানালেন নিশাত।
বাবার বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজারে, নিশাতের জন্ম রাজধানীর গ্রিন রোডে। শোবিজে হুট করে ঢুকে যাওয়ার আগে নিশাতের গণ্ডিটা কলেজ ও স্কুল কেন্দ্রিকই ছিল। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়েছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। এখন ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়ছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে।
মন্তব্য