আত্মজীবনীর প্রথম পর্ব
অভিনেতা পরিচয়ের আড়ালে ঢাকা পড়ে গেছে আলী যাকেরের অন্য অনেক পরিচয়। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের শুরুর দিকেই ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র তখন একটি ইংরেজি সার্ভিস শুরু করে। সেখানেই শব্দযোদ্ধা হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি ছিলেন।
দেশের বিজ্ঞাপনজগতেও তাঁর অবদান মনে রাখার মতো। দেশের অন্যতম বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিকের যাত্রা শুরু তাঁর হাত ধরেই। ১৯৭২ সালে তিনি দায়িত্ব নেন সংস্থাটির, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ছিলেন কম্পানিটির গ্রুপ সভাপতি।
যুক্ত ছিলেন রাজনীতিতেও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। যোগ দিয়েছিলেন মতিয়া চৌধুরীর মস্কোপন্থী ছাত্র ইউনিয়নে।
ছবি তোলা তাঁর অন্যতম নেশা। যুক্তরাজ্যের রয়াল ফটোগ্রাফিক সোসাইটিরও সদস্য ছিলেন। তাঁর তোলা ছবি নিয়ে একক চিত্র প্রদর্শনীও হয়েছে ঢাকায়। প্রবল ব্যস্ততার মধ্যেও নিয়মিত লেখার সময় বের করেছেন। টিভি নাটক তো লিখেছেনই, নিয়মিত লিখতেন পত্রিকার কলাম। সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে কালের কণ্ঠ’র সম্পাদকীয় পাতায় লিখেছেন, ‘ধর নির্ভয় গান’, যা পরে বই আকারে বের হয়। ২০১২ সালে ‘ইত্যাদি গ্রন্থপ্রকাশ’ প্রকাশ করে তাঁর আত্মজীবনী ‘সেই অরুণোদয় থেকে’, যেখানে তাঁর জীবনের প্রথমাংশের নানা ঘটনা উঠে এসেছে। তাঁর জীবনের পরের অংশের স্মৃতিকথন নিয়ে আরেকটি বই ‘মধ্যাহ্ন, অপরাহ্ন!’ প্রকাশিত হয়েছে এ বছরই। ‘দূরে কাছে স্বর্গ আছে’ নামে তাঁর একটি ভ্রমণ কাহিনিও আছে।
মন্তব্য