বিশ্বের দুই বৃহৎ খাদ্যশস্য রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেন। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্ববাজারে এ দুই দেশের খাদ্য সরবরাহ ব্যাপকভাবে কমেছে। রাশিয়া ইউক্রেনের সমুদ্রবন্দর অবরুদ্ধ করে রাখায় দেশটি খাদ্যশস্য রপ্তানি করতে পারছে না, অন্যদিকে পশ্চিমাদের অবরোধের কারণে রাশিয়াও রপ্তানি করতে পারছে না। এ অবস্থায় বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকটে হু হু করে বাড়ছে দাম।
বিজ্ঞাপন
গত বৃহস্পতিবার সংঘর্ষ ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে জাতিসংঘের এক বৈঠকে রুশ প্রতিনিধি বলেন, ‘রাশিয়া এখনো খাদ্য ও জ্বালানির এক দায়িত্বশীল সরবরাহকারী। এ বছর আমরা রেকর্ড সর্বোচ্চ কৃষি উৎপাদন আশা করছি। সে ক্ষেত্রে নোভোরোসিস্ক বন্দর দিয়ে আগামী ১ আগস্ট থেকে এ বছর শেষ হওয়া পর্যন্ত আড়াই কোটি টন শস্য রপ্তানি করতে পারি। ’
এ সময় পশ্চিমা প্রতিনিধিদের উদ্দেশে নেবেনজিয়া বলেন, ‘আমরা অন্যান্য কেনাকাটা নিয়েও আলোচনা করতে পারি, যার মধ্যে আগামী জুন থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে সম্ভাব্য দুই কোটি ২০ লাখ টন সার রপ্তানির বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। কিন্তু আপনাদের যদি নিজেদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহারের কোনো ইচ্ছা না থাকে, তাহলে আমাদের দোষারোপ করছেন কেন? কেন আপনাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ভূ-রাজনৈতিক খেলার কারণে দরিদ্র দেশ ও অঞ্চলগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে?’
রুশ এ কূটনীতিকের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বের খাদ্য পরিস্থিতির অবনতির জন্য রাশিয়ার ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা শুধু অযৌক্তিক নয়, অন্যায়ও বটে।
ইউক্রেনে হামলার পর মস্কোর ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। তবে গত বুধবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, রাশিয়া থেকে সার ও খাদ্যপণ্য বিশ্ববাজারে প্রবেশে কোনো বাধা থাকা উচিত নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী বিশ্বে গম সরবরাহের ২৯ শতাংশ, ভুট্টার ১৯ শতাংশ এবং সূর্যমুখী তেলের ৮০ শতাংশ আসে ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে। ইউক্রেনের সব বন্দরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ, অন্যদিকে রাশিয়ার পণ্য নিচ্ছে না জাহাজ কম্পানিগুলো। সূত্র : তাস, আরটি, রয়টার্স।