দিনে ১৫ থেকে ২০ মণ বরই সংগ্রহ করা হয়
পরিবারের অভাব ঘোচাতে বিদেশ যেতে চেয়েছিলেন। ধারদেনা করে এক আদম ব্যবসায়ীর হাতে তুলে দেন সাড়ে চার লাখ টাকা। কিন্তু স্বপ্ন তাঁর স্বপ্নই রয়ে যায়। পুরো টাকা মেরে সটকে পড়েন ওই আদম ব্যবসায়ী।
বিজ্ঞাপন
ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে সিদ্দিক হোসেন স্ত্রীর গয়না ও বাবার জমি বিক্রি করে গড়ে তোলেন নার্সারি। নাম দেন ‘বিকল্প নার্সারি’। সফলতাও পান বেশ। এরপর স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে টক বরই চাষ শুরু করেন। জমি লিজ নিয়ে ৩০ একর জমিতে গড়ে তুলেছেন আগাম জাতের টক বরইয়ের বিশাল বাগান। তাতে রয়েছে প্রায় চার হাজার বরইগাছ। এ বছর তাঁর বাগানে তিন হাজার গাছে বরই ধরেছে। দামও পাচ্ছেন ভালো। প্রতিদিন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে বাগান থেকেই ঢাকার কারওয়ান বাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন। এ বছর তাঁর প্রায় ৬০ লাখ টাকার বরই বিক্রি হবে বলে তিনি জানান।
সরেজমিনে ওই বাগানে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় ৩০-৩৫ জন নারী-পুরুষ বাগানে বরই তোলার কাজ করছেন। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ মণ বরই সংগ্রহ করছেন তাঁরা। স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আরিফুর রহমান বলেন, ‘যে সিদ্দিক একসময় হতাশায় ভুগছিলেন, তিনি টক বরই চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এলাকার অনেক মানুষ এখন তাঁর মতো স্বপ্ন দেখছে। ’
বাগানে কাজ করতে আসা হায়দার আলী বলেন, ‘সিদ্দিক ভাইয়ের বাগানে গাছ থেকে বরই পাড়া, কুড়ানো, পরিষ্কার করা এবং বস্তাবন্দি করতে ৩০-৩৫ জন নারী-পুরুষ কাজ করে সংসার চালাচ্ছি। ’
সিদ্দিক হোসেন বলেন, ‘এ বছর প্রায় ৬০ লাখ টাকার বরই বিক্রি করতে পারব। আমার এই বাগান দেখতে বিভিন্ন এলাকার মানুষ প্রতিদিন ছুটে আসে। বাগান করতে আগ্রহীদের নানা পরামর্শ দিই। প্রতিবছর বাগান থেকে যে আয় হবে, তার তিন ভাগের দুই ভাগ পরিবারের জন্য, আর এক ভাগ সমাজের উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হবে। ’