নওগাঁ-আত্রাই-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়কের আত্রাই উপজেলার সাহাগোলা রেল স্টেশনের উত্তরে হঠাৎ করে দেবে গেছে সড়ক। ছবি : কালের কণ্ঠ
১৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন নওগাঁ-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ শেষ না হতেই এর একটি অংশ দেবে গেছে। সড়কের আত্রাই উপজেলার সাহাগোলা রেলস্টেশনের উত্তরে প্রায় ২০০ ফুট এলাকা দেবে যায়। গত শুক্রবার সকাল ৮টায় সর্বপ্রথম ফাটল দেখা যায়। ধীরে ধীরে তা বড় আকার ধারণ করছে।
বিজ্ঞাপন
সড়ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে—তা নির্ধারণ করতে পারেনি। তবে সড়ক বিভাগ বলছে, যেহেতু এটা চলমান কাজ, সেহেতু ঠিকাদারকেই এর মেরামতের দায়ভার বহন করতে হবে। এ জন্য সরকারের কোনো বাড়তি বরাদ্দ এখানে দেওয়া হবে না।
জানা গেছে, গত ২০০১ সালে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে নওগাঁ ও নাটোরের সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা জোরদার করতে আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এরপর ওই বছরই মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়। রাজনৈতিক পালাবদলের কারণে সরকার পরিবর্তন হলে বিভিন্ন জটিলতায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ২০১৮ সালের শেষের দিকে নতুন করে নওগাঁর অংশে সাড়ে ১৯ কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণের কাজ শুরু হয়। এরই মধ্যে সব সেতু-কালভার্টের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া সড়কের উপরিভাগের কাজও প্রায় শেষের দিকে। এরই মধ্যে গত শুক্রবার সকাল থেকে ফাটল দেখা দেয়। ধীরে ধীরে সড়কের বেশির ভাগ অংশ দেবে যাওয়ায় ভারী যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। খবর পেয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
স্থানীয় আলম হোসেন বলেন, ‘শুরু থেকেই সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ছিল। দুই-তিন দিন আগে ওই স্থানে হালকা ফাটল দেখা দেয়। এরপর হঠাৎ করেই গত শনিবার পাকা সড়ক খাড়াভাবে প্রায় দেড়-দুই ফুট নিচের দিকে দেবে গেছে। ’
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ওই স্থানটি নাকি প্রায় ২০ ফুটের মতো গভীর ছিল। যে কারণে সড়ক দেবে গেছে। এরই মধ্যে সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতের কাজ শুরু করেছি। ’
নওগাঁর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘সড়ক দেবে যাওয়ার খবর পেয়ে আমি ও আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি; কিন্তু কিভাবে পাকা সড়ক খাড়াভাবে নিচ দিকে দেবে গেল এর হিসাব মিলাতে পারছি না। তবে স্থানীয় লোকজনের কাছে থেকে শুনেছি, ওই স্থানটি আগে নাকি অনেক গভীর ছিল এবং সেখানে কাদামাটি ছিল। বিষয়টি ঢাকার বিশেষজ্ঞ টিমকে জানানো হয়েছে। তারা এসে পরীক্ষা করে সঠিক কারণ জানার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’