হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ৭৫ বছরের পুরনো পানির ফিল্টার শিল্প বিলুপ্তির পথে। একসময় অফিস-আদালত আর বাসাবাড়িতে যে ফিল্টারটি শোভা পেত এখন তাঁর উৎপাদন একেবারেই কমে গেছে। অথচ কিছুদিন আগেও বিদেশে যেত এই ফিল্টার।
বর্তমানে প্লাস্টিকের তৈরি ফিল্টারে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে।
বিজ্ঞাপন
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে মাধবপুর পৌর এলাকার কাছাড়ীপাড়া এলাকায় এই শিল্পের বিকাশ হয়। মহাসড়ক থেকে পূর্ব দিকে চোখ রাখলেই দেখা যায় সিমেন্ট-বালুর এসব ফিল্টার কারখানা। একসময় ৭০টি ফিল্টার নির্মাণ প্রতিষ্ঠান থাকলেও এখন আছে ২০-২৫টি। সে সময় এক হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হতো এই শিল্পে। যাদের বেশির ভাগ ছিল নারী। বছরে প্রায় ৮০ হাজার ফিল্টার দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হতো এখান থেকে। যা থেকে নির্মাতাদের আয় হতো প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। তবে এখন পুঁজি ধরে রাখাই কষ্ট হচ্ছে কারখানার মালিকদের।
ইসলামিয়া ওয়াটার ফিল্টার ও কুটির শিল্পের মালিক মো. খলিল মিয়া জানান, একসময় এ শিল্পের জন্য মাধবপুর এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বিখ্যাত ছিল। খাবার পানিকে ঠাণ্ডা ও বিশুদ্ধ রাখতে বেশ কার্যকর এ বিশেষ ধরনের ফিল্টার, ধানের তুষ, সিমেন্ট, বালু ইত্যাদি দিয়ে তৈরি। মাধবপুরের ফিল্টার এখন প্রায় উঠে যেতে বসেছে।
এ ছাড়া ফিল্টার তৈরিতে খরচ বহুগুণ বেড়ে যাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী ভিন্ন ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছেন। ফলে একদিকে যেমন কমেছে কদর ও অন্যদিকে বিলুপ্তির পথে সম্ভাবনাময় ফিল্টার শিল্প। করোনার কারণেও বিক্রি কমে গেছে উল্লেখযোগ্য হারে।
পপুলার ফিল্টার হাউসের মালিক প্রণব রায় বলেন, ‘২০ বছর ধরে ফিল্টার তৈরি করছি। এখন চাহিদা কম। শ্রমিক সংকট ও খরচ বেশি হওয়ায় ফিল্টার উৎপাদন অনেক কমেছে। সরকার দেশীয় এই শিল্পকে ধরে রাখার উদ্যোগ নিলে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে অর্থনীতি ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ’