<p>আগেই একটি পুকুর (লেক) ছিল। কাগজ-কলমে সেখানেই একটি নতুন পুকুর কেটেছেন কর্মকর্তারা। এই পুকুরচুরির অভিযোগ উঠেছে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট পানছড়ি ইকো রিসোর্ট প্রকল্পে। শুরুতেই অনিয়ম-দুর্নীতি ও পরিকল্পনার অভাবে ভেস্তে যেতে বসেছে কোটি টাকার এ প্রকল্প।</p> <p>স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় প্রশাসন ২০১৮ সালের শেষের দিকে উবাহাটা ইউনিয়নের পানছড়ি পাহাড়ি এলাকার টিলা ধরনের ২৫ একর জমি অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করে। পরে জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে পানছড়ি ইকো রিসোর্ট প্রকল্পে পর্যটন মন্ত্রণালয় পর্যায়ক্রমে প্রায় এক কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। জেলা প্রশাসকের পক্ষে চুনারুঘাট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাস্তবায়নের কাজ করে।</p> <p>সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, একটি লেক আকৃতির পুকুর, দুটি বসার ঘর ও একটি ওয়াশ ব্লক করে প্রকল্পের প্রথম ধাপের কাজ শেষ করা হয়েছে। টিলা কেটে পুকুর বানানোয় একদিকে যেমন সরকারি আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে, অন্যদিকে পাহাড়ের চূড়ায় পুকুর দেওয়ায় মিলছে না পানির দেখা। ওয়াশ ব্লক নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ লাখ টাকা। যা প্রকৃত ব্যয় থেকে অনেক বেশি।</p> <p>নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘এখানে আগেই দুই টিলার মধ্যে একটি লেক ছিল। পার বেঁধে সরকারের অর্থের অপচয় করা হয়েছে। এর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’</p> <p>উবাহাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান তরফদার সবুজ বলেন, ‘এ প্রকল্প শুধু অর্থ খরচের চিন্তা থেকে নেওয়া হয়েছে। পুরো প্রকল্পের টাকা অপচয় করা হয়েছে। আমি উপজেলা সমন্বয়সভায় বারবার প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ন চেয়েছি। স্থানীয় প্রশাসন আমার কথার কোনো মূল্যায়ন করেনি। এ প্রকল্প পরিদর্শনে এসে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাজেরা খাতুন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আমি এলাকাবাসীর পক্ষে পানছড়ি ইকো রিসোর্ট প্রকল্পের কাজের তদন্ত দাবি করছি।’</p> <p>চুনারুঘাট এলজিইডি প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম শওকত বলেন, ‘দুর্নীতি করার কোনো সুযোগ নেই। ই-টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে কাজ করা হয়েছে। প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হলে এটি গ্র্যান্ড সুলতান, বাহুবল দি-প্যালেস রিসোর্টের মতো রূপ ধারণ করবে।’</p> <p>চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিত রায় দাশ বলেন, ‘পানছড়ি ইকো রিসোর্টে সরকার মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে কাজ শুরু করেছে। বিভাগীয় কমিশনারসহ পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অনেকে প্রস্তাবিত ইকো রিসোর্ট পরিদর্শন করেছেন। সীমানাপ্রাচীরসহ এখানে দৃষ্টিনন্দন পার্ক, কটেজসহ হলরুম করার পরিকল্পনা রয়েছে। ধারাবাহিকভাবে কাজ চলতে থাকলে একদিন এটি সারা দেশের মানুষের নজরে আসেবে।’</p>