ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন এলাকা এবং এর আশপাশের উদ্ধার করা জায়গা ফাঁকা থাকায় ধীরে ধীরে বেদখল হচ্ছে। ছবি : কালের কণ্ঠ
প্রায় এক বছর আগে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন এলাকা এবং এর আশপাশের জমি উদ্ধারে অভিযান চালায় কর্তৃপক্ষ। স্মরণকালের মধ্যে সেই অভিযান ছিল সবচেয়ে বড়। অভিযানের পর বিপুল পরিমাণ জমি দৃশ্যমান হয়েছিল। সেই জায়গা দীর্ঘদিন ফাঁকা থাকার পর ধীরে ধীরে আবার বেদখল হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর ময়মনসিংহে রেলওয়ের জমি উদ্ধারে অভিযান শুরু করে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ। ঢাকা থেকে পদস্থ কর্মকর্তারা সশরীরে উপস্থিত থেকে এ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান পরিচালনা কালে রেলস্টেশন এলাকার সব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়। এ ছাড়া মালগুদাম, বাঘমারা, কেওয়াটখালীসহ রেল বিভাগের আওতাধীন জমি থেকে শত শত অবৈধ দখলদার তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেন। রেলের জায়গায় গড়ে ওঠা ঘিঞ্জি বাড়িঘর ও দোকানপাট সরে যাওয়ায় বিপুল পরিমাণ ফাঁকা জমি দৃশ্যমান হয়।
সাধারণ নাগরিকরা এ অভিযানকে স্বাগত জানায়। কারণ অবৈধ দখলদাররা বেশির ভাগ ছিলেন প্রভাবশালী। তাঁরা রেলের জমি দরিদ্র লোকদের ভাড়া দিয়ে বাড়তি মোটা অঙ্কের টাকা আয় করতেন। অভিযানে দরিদ্র অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন প্রভাবশালীরা। তবে জায়গা উদ্ধার হলেও একে সব সময় দখলমুক্ত রাখা কঠিন হবে, তা রেল কর্তৃপক্ষও বুঝেছিল। ওই সময়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল উদ্ধার হওয়া রেলের জমিতে মার্কেট নির্মাণের জন্য জমি ভাড়া দেওয়া হবে। এতে রেল বিভাগ আর্থিকভাবে লাভবান হবে। আর জমিটি তাদের দখলে থাকবে। এ ছাড়া ফাঁকা স্থানে দৃষ্টিনন্দন কিছু স্থাপনাও তৈরি করা হবে। রেলস্টেশনটি আধুনিকায়ন করা হবে।
সময়ের চাকা ঘুরে আজ বছরাধিককাল সময় গত। কিন্তু উদ্ধার হওয়া জমিতে দোকান বরাদ্দের বিষয়টি এখনো ফয়সালা হয়নি। কবে হবে তাও স্থানীয়ভাবে সবার অজানা। এদিকে পূর্ব আশঙ্কা অনুযায়ী ধীরে ধীরে উদ্ধার হওয়া জায়গায় দোকানপাট গড়ে উঠছে। ফাঁকা জায়গাগুলোতে আবার বিচ্ছিন্নভাবে চোখে পড়ছে টিন, বেড়া আর ত্রিপলের দোকানপাট। স্থানীয় অনেকের আশঙ্কা, আগামী কয়েক মাসে বেদখল হয়ে আবার পুরনো রূপে ফিরতে পারে।
ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, তাঁরা নিয়ম মেনে জায়গা বরাদ্দ নিতে চান। শান্তিতে ব্যবসা করতে চান। এ জন্য রেল বিভাগের উদ্যোগী ভূমিকা ও সহযোগিতা চান। তাঁরা অপেক্ষায় আছেন কখন রেল বিভাগ থেকে দোকানঘর বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ ছাড়া জমি যেন দরিদ্র ব্যবসায়ীরা বরাদ্দ পান, এ ব্যাপারে রেলের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
এদিকে রেল বিভাগের সূত্র জানায়, এক হাজার ২০০-এর মতো দোকানঘর বরাদ্দ হতে পারে। এ ছাড়া স্টেশনের আধুনিকায়ন হবে। বিষয়টি প্রস্তাবাকারে রেল বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর জমা আছে। এখন বিষয়টির যত দ্রত সুরাহা হবে, ততই সবার জন্য মঙ্গল।
রেলওয়ের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ফাঁকা জমিতে দোকান বরাদ্দের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। বরাদ্দ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হলে স্থানীয়ভাবে সবাই তা অবহিত হবেন। তিনি বলেন, সম্পূর্ণ বাণিজ্যিকভাবে দোকানঘর বরাদ্দ হবে।
মন্তব্য