<p>আমিনুর রহমান মন্টু (৫৫)। ঢাকায় পাথরভাঙা শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাতেন। সেখানে একটা দুর্ঘটনায় তাঁর ডান পা কেটে ফেলতে হয়েছে। বাধ্য হয়ে সংসার চালাতে ঢাকার রাস্তায় ভিক্ষা করতে হয় তাঁকে। মানুষের নানা প্রবঞ্চনায় নিজেকে বদলে নিয়েছেন তিনি। ছেড়েছেন ভিক্ষাবৃত্তির পথ। এরপর শুরু করেন জীবন সংগ্রাম। ঢাকা থেকে গ্রামে ফিরে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে কিনেছেন একটা হুইল চেয়ার। আর ঋণের বাকি টাকা দিয়ে শুরু করেন শুঁটকি মাছের ব্যবসা। দীর্ঘদিন থেকেই পা হারানো মন্টুর সংসার চলে হুইল চেয়ারের ভ্রাম্যমাণ দোকান করে। বিকেল হলেই যান স্থানীয় বাজারে। এভাবে সারা দিন যা আয় হয় তা দিয়ে দুই বেলা ডাল-ভাত খেয়ে দিন কেটে যায়।</p> <p>গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামদেব গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে তিনি। করোনার প্রভাবে গৃহবন্দি হয়ে বাড়িতে বসে থাকলেও কোনো সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পাননি। কোনো জনপ্রতিনিধি খাদ্যসামগ্রী হাতে দাঁড়াননি তাঁর পাশে। এমনকি প্রতিবন্ধী ভাতাও জোটেনি তাঁর ভাগ্যে। অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ব্যর্থ হয়েছেন।</p> <p>সম্প্রতি মন্টু জানান, এক পা কেটে ফেলার পর মন্টুকে ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে যান স্ত্রী মালতী বেগম। তাঁকে ছেড়ে চলে যাওয়ার এক যুগ পার হলেও এক দিনও খোঁজ নেননি স্ত্রী। এরপর একমাত্র ছেলের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন মন্টু। কিন্তু বিয়ের পর বাবাকে রেখে আলাদা হয়ে যান ছেলে আব্দুল মালেক।</p> <p>মন্টু বলেন, ‘এতদিন চলেছি। কেউ থামাতে পারেনি। এবার এই করোনা আমাকে থামিয়ে দিচ্ছে।’</p>