<p>জামালপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের টয়লেটগুলো নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর হওয়ায় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় দুই হাজার ছাত্রী। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের টয়লেটগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেখা গেছে।</p> <p>সূত্র মতে, জামালপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিবছর এসএসসি, জেএসসি ও প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় জেলায় সবচেয়ে ভালো ফলাফল অর্জন করে। প্রভাতী ও দিবা শাখায় এক হাজার ৮৬৮ জন ছাত্রী রয়েছে। তবে টয়লেট সমস্যা নিয়ে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে ছাত্রীরা।</p> <p>সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পুরনো দোতলা দুটি একাডেমিক ভবনে প্রভাতী ও দিবা শাখার আট শতাধিক ছাত্রীর জন্য শুধু একাডেমিক ভবন ২-এ তিনটি করে মোট ছয়টি টয়লেট রয়েছে। টয়লেটগুলোর পরিবেশ অত্যন্ত নোংরা। প্লাস্টিকের নোংরা বদনাগুলোর কয়েকটি ভেঙে গেছে। নিরুপায় হয়েই বদনাগুলো ব্যবহার করছে ছাত্রীরা। কমোডগুলোও নোংরা। সাবান রাখার কেইস আছে বটে, কিন্তু সাবান নেই। নেই হাত মোছার জন্য টয়লেট টিস্যু বা তোয়ালে। দুটি টয়লেটের দরজার ভেতরের ছিটকিনির রিং ভাঙা। দরজা আটকানো যায় না। টয়লেটের পয়োনিষ্কাশনের বেসিন, পানির পাইপ ও অন্যান্য সামগ্রীর সবই ভেঙে গেছে।</p> <p>অন্যদিকে তিনতলা একাডেমিক নতুন ভবনের প্রতি তলায় চারটি করে মোট ১২টি টয়লেট রয়েছে। এটি নতুন ভবন হওয়ায় টয়লেটগুলোর দরজা ভালো আছে। কিন্তু ভেতরের পরিবেশ খুবই নোংরা। প্লাস্টিকের বদনা ও কমোড নোংরা। সাবান রাখার কেইসে হাত ধোঁয়ার সাবান নেই। নেই হাত মোছার জন্য টয়লেট টিস্যু বা তোয়ালে।</p> <p>বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রী জানায়, নোংরা পরিবেশের কারণে অনেকেই টয়লেটে যায় না। টিস্যু ও তোয়ালে না থাকায় বাসা থেকে আনা রুমালে বা স্কুলড্রেসেই হাত মুছতে হয়। টয়লেটগুলোতে স্যানেটারি ন্যাপকিন বা প্যাড ও কাপড় বদলানোর নিরাপদ পরিবেশ নেই। অনেকেই টয়লেটের বাজে অবস্থার জন্য অসুখের কথা বলে ছুটি নিয়ে বাসায় চলে যায়।</p> <p>ছাত্রীরা আরো জানায়, টয়লেটের সমস্যা নিয়ে শিক্ষকদের কিছু বলতে গেলে উল্টো তাদেরকেই শাসানো হয়। টয়লেটগুলো সব সময় পরিষ্কার রাখা, বদনাগুলো বদলে দেওয়া, হাত ধোয়ার জন্য সাবান, তোয়ালে ও স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাড রাখার দাবি জানিয়েছে ছাত্রীরা।</p> <p>জানা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের জন্য একটি, দুজন সহকারী প্রধান শিক্ষকের কক্ষে দুটি, সহকারী পুরুষ শিক্ষকদের জন্য একটি, সহকারী নারী শিক্ষকদের জন্য একটি এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য একটিসহ অতিরিক্ত ছয়টি টয়লেট রয়েছে। ছাত্রীদের ব্যবহারের জন্য ১৮টি টয়লেট নোংরা হলেও অন্যদের টয়লেটগুলোতে পরিষ্কার বদনা, কমোড, বেসিন, টয়লেট টিস্যু, সাবান ও তোয়ালের ব্যবস্থা রয়েছে।</p> <p>এদিকে বিদ্যালয়ের দুটি সুইপার পদের মধ্যে একটি শূন্য। নিয়োগ পাওয়া সুইপার নূর হোসেন প্রতি মাসে ১৮ হাজার টাকা বেতন পেলেও টয়লেট পরিষ্কারের কাজ করেন না তিনি।</p> <p>টয়লেট সমস্যা প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক সুলতানা রাজিয়া বলেন, ‘পুরনো ভবনে টয়লেটগুলোতে সাবান ও টয়লেট টিস্যু দেওয়া হলেও ছাত্রীরাই নষ্ট করে। বদনাগুলোও তারাই ভেঙেছে। দরজার ছিটকিনির রিংগুলোও তারা খুলে ফেলেছে। ছাত্রীদের অনেক শাসানো হয়। প্রতিদিন দিবা শাখার ক্লাস শেষে সুইপার টয়লেট পরিষ্কার করে দেয়। অন্যদিকে নতুন একাডেমিক ভবনের সব টয়লেটে পরিষ্কার বদনা ও হাত ধোয়ার সাবানের ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি ছাত্রীদের স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাড স্কুল কর্তৃপক্ষই সরবরাহ করে।’</p>