<p>শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক পড়েছে প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকদের মধ্যে। ইভিএমে ভোটগ্রহণ নিয়ে ভোটারদের মাঝে কিছুটা কৌতূহল সৃষ্টি হলেও আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে হতাশার পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তাঁরা।</p> <p>প্রসঙ্গত, আগামী ১৪ অক্টোবর এখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।</p> <p>গতকাল বুধবার সরেজমিনে সদর উপজেলাসহ জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, যেখানে সেখানে প্রার্থীদের পোস্টার লাগানো হয়েছে। এমনকি রিকশায়ও তাঁদের পোস্টার শোভা পাচ্ছে। প্রার্থীদের পক্ষে কোথাও কোথাও তাঁদের বড় আকারের ব্যানার টানিয়েছে সমর্থকরা। কোনো কোনো প্রার্থী মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউনও করছে।</p> <p>অথচ বিধিমালা অনুযায়ী, নির্বাচনী এলাকার দেয়াল বা যানবাহনে পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল লাগানো যাবে না। শুধু ঝোলানো বা টানানো যাবে। এ ছাড়া শোডাউন কিংবা মিছিলের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধিনিষেধ আছে।</p> <p>শহরের শিববাড়ী এলাকার ভোটার এস এম ইমতিয়াজ চৌধুরী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘যারা বাড়ির দেয়ালে পোস্টার লাগায় এমন প্রার্থীদের বর্জন করুন। নির্বাচন কমিশন এদের কেন শাস্তির আওতায় আনে না তা একেবারেই বোধগম্য নয়। কোনো প্রার্থীর টাকা দিয়ে আমরা দেয়াল রং করাই না। এদের থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের ব্যবস্থা করার দাবি জানাই।’ অন্যদিকে শেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ও সরকারদলীয় হুইপ আতিউর রহমান আতিক, তাঁর মেয়ে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন রহমান অমি এবং আওয়ামী প্রার্থী মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে সরকারি চাকরিজীবী ছায়েদুল ইসলাম শাওনের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মিনহাজ উদ্দিন মিনাল। এ ছাড়া রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাওসহ অভিযোগের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি ও তাঁর কর্মী-সমর্থকরা।</p> <p>যদিও এমপি-হুইপ আতিক তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অন্যদিকে তাঁর মেয়ে ডা. অমি গতকাল নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ইউনিয়ন পর্যায়ে মাঠের কাজ তদারকি ও উঠান বৈঠকের আয়োজন করে আমি আমার বিভাগীয় সরকারি দায়িত্ব পালন করছি। এর সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। কতিপয় লোক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’</p> <p>এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শুকুর মাহমুদ মিঞা বলেন, ‘আমরা প্রার্থীদের নিয়ে মতবিনিময়সভা করে আচরণবিধিমালা যাতে লঙ্ঘিত না হয় সে জন্য তাঁদের কঠোরভাবে সতর্ক করেছি।’ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কিংবা জরিমানা করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি।’ শুকুর মাহমুদ আরো বলেন, ‘হুইপ আতিক এমপি মহোদয় ও তাঁর মেয়ে ডা. অমিকে আমরা চিঠি দিয়ে আচরণবিধিমালার বিষয়ে জানিয়েছি। সব সরকারি কর্মসূচি স্থগিত করে আজ বৃহস্পতিবার তিনি (আতিক) শেরপুর থেকে চলে যাচ্ছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।’</p>