<p>নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরে রেলওয়ের জমিতে বসবাসকারীদের উচ্ছেদে দ্বিতীয় দফা গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পশ্চিম রেলের পাকশী বিভাগের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা। একই সঙ্গে গত এক সপ্তাহজুড়ে চালানো হচ্ছে মাইকিং। দ্বিতীয় দফা গণবিজ্ঞপ্তি জারি ও উচ্ছেদের দিনক্ষণ ঘোষণা করায় শহরে রেলওয়ে জমিতে বসবাসকারীদের মাঝে উচ্ছেদ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সৈয়দপুর শহরের সিংহভাগ জমি রেলওয়ের অধীন হওয়ায় গোটা শহরে বিরাজ করছে আতঙ্ক।</p> <p>রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর শহরে রেলওয়ের ৮০০ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে রেলওয়ে পতিত জমিতে বিপুলসংখ্যক লোক বসবাস করে। তাদের মধ্যে বৈধ ও অবৈধ বসবাসকারীও রয়েছে। এর আগে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ রেলওয়ের জমিতে বসবাসকারী উচ্ছেদে ১৬ এপ্রিল প্রথম দফায় গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে। ওই বিজ্ঞপ্তি মতে বৈধ ও অবৈধ স্থাপনার হালনাগাদ তালিকা তৈরি করে তারা। সে সময় পাড়া-মহল্লায় জরিপ করে অবৈধ স্থাপনা ‘লাল’ কালি দিয়ে চিহ্নিত করে। এর প্রায় চার মাস পর দ্বিতীয় দফা লাল নোটিশে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। একই সঙ্গে উচ্ছেদ অভিযানের তারিখ এবং চিহ্নিত উচ্ছেদ এলাকার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে শহরে ভীতি ও উচ্ছেদ আতঙ্ক বিরাজ করছে।</p> <p>রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তার ইস্যু করা দ্বিতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সৈয়দপুর পৌরসভার সঙ্গে বিরোধীয় ভূমি ও আটকেপড়া পাকিস্তানি ক্যাম্প বাদে ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর সব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। তবে যেসব স্থাপনার বৈধ লাইসেন্স প্রদান করা আছে এবং রেলভূমির মালিকানা স্বত্ব নিয়ে মামলা চলমান আছে, তাদের ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভূ-সম্পত্তি দপ্তরের মতামত গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে। নোটিশে উচ্ছেদের তারিখ ও এলাকা উল্লেখ করে বলা হয়, ২৯ সেপ্টেম্বর সৈয়দপুর কয়া মিস্ত্রিপাড়ার বাঁশবাড়ী রোডের উভয় পাশ থেকে আদর্শ কলেজ রোড পর্যন্ত এবং গোলাহাট থেকে মুন্সিপাড়া এলাকায় রেল ভূমিতে অবস্থিত সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর সৈয়দপুর অফিসার কলোনি, ধুপিমাঠ, দারুল উলুম মোড়, বাঙ্গালীপুর, নিচু কলোনি ও হাতিখানা রেল ভূমিতে অবস্থিত সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এদিকে এলাকা উল্লেখ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি এবং শহরে মাইকিং করায় রেলওয়ে জমিতে বসবাসকারীদের মাঝে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। ফলে বর্তমানে এ উচ্ছেদ অভিযান শহরে আলোচিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে শহরের সর্বস্তরে মিশ্র প্রক্রিয়ারও সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে উচ্ছেদ বন্ধে শহরে প্রতিবাদ সভা সমাবেশ হয়েছে এবং উচ্ছেদবিরোধী সংগঠনগুলো উচ্ছেদ বন্ধে আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। সংগঠনগুলো রেলের জমিতে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ না করতে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধনসহ শান্তিপূর্ণ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে বলে জানিয়েছে।</p>