<p>আগে যেকোনো উৎসব-পার্বণে বায়োস্কোপের দেখা মিলত। কিন্তু এ যুগে বিনোদনের বিভিন্ন মাধ্যমের ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামবাংলার এ ঐতিহ্য। কিন্তু কিছু কিছু মানুষের জন্য এখনো টিকে আছে এ ‘জাদুর বাক্স’। দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ করে বৈশাখী মেলায় বায়োস্কোপ দেখিয়ে বিনোদন দিচ্ছেন মানিকগঞ্জের ঘিওরের পয়লা গ্রামের আতোয়ার রহমান।</p> <p>আতোয়ার বলেন, ‘বৈশাখী মেলায় গেলে কৌতূহলবশত ছেলেমেয়েরা বায়োস্কোপ দেখে। বায়োস্কোপের সামনে চোঙার মতো কয়েকটি মুখ থাকে। প্রতিটি মুখে লাগানো থাকে লেন্স। আর বাক্সের ভেতরে এক প্রান্তে লাগানো থাকে ছবি। কাপড় পেঁচানো থাকে পাশের দুটি কাঠিতে। কাঠির ওপরে মাথায় বাক্সের বাইরে থাকে হাতল। এ হাতল ঘুরালে একের পর এক দৃশ্য আসে। সেই সঙ্গে মিল করে গান-ছন্দ বলতে হয়।’</p> <p>আতোয়ার আরো বলেন, ‘সেই পাকিস্তান আমলে আমার বাবা পাশান ফকির শখ করে এ বাক্সটি বানিয়েছিলেন। তখন পাঁচ পয়সা করে নিয়ে দেখানো হতো বায়োস্কোপ। বাবার বয়স হয়ে যাওয়ার পর আমি ১৯ বছর ধরে এ পেশায় আছি। এখন পাঁচ মিনিট দেখলে ১০ টাকা নিয়ে থাকি। তবে শহরে দেখালে ২০ টাকা নিই। বৈশাখ মাসে বিভিন্ন জায়গায় মেলা উপলক্ষে বায়োস্কোপ নিয়ে যাই। দর্শক হলে মোটামুটি প্রতি মেলায় এক থেকে দেড় হাজার টাকা আয় হয়।’ এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আতোয়ার। এ ব্যাপারে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর জেলা সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মামুন বলেন, ‘বেশি বেশি গ্রামীণ মেলা আয়োজন করে (যাঁরা বায়োস্কোপ দেখান) তাঁদের সুযোগ করে দিতে হবে। পাশাপাশি তাঁদের সরকারিভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে বাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখা সম্ভব।</p>