<p>নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকদের কাছে জিম্মি এলাকার কয়েক লাখ মানুষ। এ উপজেলায় অভিলাষ ট্রান্সপোর্ট নামের মাত্র একটি যাত্রীবাহী পরিবহন রয়েছে। ফলে বাস সংকট থাকায় ঝুঁকি নিয়ে অটোরিকশাযোগেও চলাচল করছে স্থানীয়রা। এ সুযোগে ইচ্ছামতো গলাকাটা ভাড়া আদায় করছে চালকরা।</p> <p>যাত্রীরা জানায়, অভিলাষ পরিবহনের লক্কড়ঝক্কড় মার্কা যাত্রীবাহি গাড়ি দিয়ে প্রতিদিন আড়াইহাজার থেকে ঢাকায় যাওয়া-আসা করছে যাত্রীরা। প্রায় সময়ই রাস্তায় বাসগুলো বিকল হয়ে পড়ছে। এতে প্রতিদিন ঘরমুখো মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে অনেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা করেও চলাফেরা করছে। এতে যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।</p> <p>অনুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয় বিশ্বনন্দী ফেরিঘাট থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত ৪৭ কিলোমিটার এ সড়কে অভিলাষ পরিবহন ভাড়া আদায় করছে ৭৫ টাকা। গোপালদী বাজার থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার রাস্তা হলেও ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৭০ টাকা। আড়াইহাজার কৃষ্ণপুরা চৌরাস্তা থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটার সড়কে ভাড়া নিচ্ছে ৬০ টাকা। এ ছাড়া মদনপুর থেকে আড়াইহাজার পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কে সিএনজিচালিত আটোরিকশাচালকরা ভাড়া আদায় করছে ৪০ টাকা। আর সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই ভাড়ার পরিমাণ বাড়তে থাকে। কখনো কখনো তা মূল ভাড়ার তিন-চার গুণ ছাপিয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে এর প্রতিবাদ করেও যাত্রীরা কোনো সুফল পাচ্ছে না। ফলে অসাধু চালক ও মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে তারা।</p> <p>আড়াইহাজার বাজারের ব্যবসায়ী আজিজুল হক বলেন, বাসের ভেতর ও বাইরের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। সিটিং সার্ভিস বলা হলেও যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করা হচ্ছে। দূরত্বের তুলনায় অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়। কখনো কখনো দুই-তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে বাসে উঠতে হয়। বাধ্য হয়ে অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিশায় যাতায়াত করছে। রাস্তাঘাট খারাপ হওয়ায় প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে যাত্রীরা।</p> <p>নারী যাত্রী আলেয়া আক্তার বলেন, ‘সুযোগ বুঝে আমাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হয় না। আমরা তাদের কাছে একপ্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছি।’</p> <p>অটোরিশাচালক আলমাছ মিয়া বলেন, ‘বাজে রাস্তা হওয়ায় মাঝেমধ্যে আমরা যাত্রীদের কাছ থেকে একটু বেশি ভাড়া আদায় করি। তবে রাস্তা সংস্কার হলে আমরা আর অতিরিক্ত ভাড়া নেব না।’</p> <p>পরিবহনটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের গাড়ির কোনো সংকট নেই। ঢাকা থেকে প্রতি ২০ মিনিট পর পর গাড়ি ছাড়া হচ্ছে।’ অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘সুযোগ বুঝে অনেক যাত্রী ফ্রিও যাতায়াত করছেন।’</p> <p>এ বিষয়ে আড়াইহাজার থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল হক বলেন, ‘যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি মৌখিকভাবে জেনেছি। খুব শিগগির গাড়িচালকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’</p>