<p>গাছের গোড়ায় অতিমাত্রায় লবণ বা রাসায়নিক সার প্রয়োগ, এমনকি গাছে এসিড নিক্ষেপ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে গোলাকারভাবে বাকল তোলা হচ্ছে। যাতে দ্রুত গাছ মারা যায়। এর পর সেই গাছ কেটে নেয় দুর্বৃত্তরা। এটা ঘটে যশোরের চৌগাছা উপজেলার বিভিন্ন সড়কে।</p> <p>স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চৌগাছা-কোটচাঁদপুর, চৌগাছা-যশোর, চৌগাছা-ঝিকরগাছা, চৌগাছা-মহেশপুর পাকা রাস্তার দুই পাশে জেলা পরিষদের কয়েক হাজার বনজ গাছ রোপণ করা হয়েছে। গাছগুলো কয়েক বছরের মধ্যে বড় হয়েছে। বেশির ভাগ গাছের দাম প্রায় ২০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে। কিন্তু, স্থানীয় একটি চক্র রাতের অন্ধকারে গাছের বাকল কেটে ফেলে। গোড়া থেকে দেড় থেকে দুই হাত ওপরে এমনটা করা হয়। এ ছাড়া কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। কোনো কোনো গাছে এসিডও ঢেলে দেওয়া হয়। এমনকি গোড়ায় রাসায়নিক সার অতিমাত্রায় ব্যবহার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দেওয়া হয় লবণ। এসব পদ্ধতির ফলে ধীরে ধীরে কিছুদিনের মধ্যে গাছ শুকিয়ে মারা যায়। পরে এই গাছ রাতে কেটে বেচা হয়।</p> <p>সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে এমন নিষ্ঠুরতার প্রমাণ পাওয়া যায়। চৌগাছা-ঝিকরগাছা সড়কের জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের ফাঁকা মাঠে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দামের কয়েকটি কড়ইগাছ গোলাকৃতিভাবে বাকল কাটা রয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে এই গাছগুলো মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে ঝড়েও ভেঙে পড়তে পারে। একইভাবে চৌগাছা-কোটচাঁদপুর সড়কে রাস্তার বেশ কয়েকটি গাছের বাকল (ছাল) কালো হয়ে গেছে।</p> <p>স্থানীয়রা জানায়, কে বা কারা রাতে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে পুড়ে কালো হয়ে গেছে বাকল। এ রাস্তার অনেক স্থানে বড় বড় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ মারা গেছে। অনেক স্থান থেকে গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে।</p> <p>এদিকে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, রাস্তার মূল্যবান গাছ কাটার জন্য সঙ্ঘবদ্ধ একটি শক্তিশালী চক্র রয়েছে। এদের সঙ্গে স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ীদের সখ্য রয়েছে।</p> <p>গাছের বাকল কাটলে কী ক্ষতি হয়? এমন প্রশ্নে উপজেলা সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মশিয়ুর রহমান বলেন, ‘গাছের বাকল খাদ্য তৈরি ও সরবরাহে সহায়তা করে। উদ্ভিদ সূর্যের আলোর সাহায্যে পানি ও কার্বন ডাই-অক্সাইড দিয়ে শর্করা জাতীয় খাদ্য তৈরি করে। গাছের উপরিভাগ ও মূলভাগের কোনোটিতে সংকট দেখা দিলে গাছ বা উদ্ভিদ মারা যায়। সে কারণে গাছের বাকল না থাকলে সেই গাছ বেঁচে থাকতে পারে না।’</p> <p>এ বিষয়ে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইবাদত হোসেন বলেন, ‘গাছের সঙ্গে এমন নিষ্ঠুরতা মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ ক্ষেত্রে জনগণকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।</p>