অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও পার্বত্য চট্টগ্রামের মানবাধিকার পরিস্থিতির কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে মনে করে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম। ফোরাম বলেছে, এখনো পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। বরং বিগত ১০ মাসে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী। তারা নানা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকারে পরিণত হচ্ছে।
চরম নিরাপত্তাহীনতায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠী
- পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনাসভা
নিজস্ব প্রতিবেদক

গতকাল শুক্রবার ঢাকার ধানমণ্ডির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে আদিবাসী ফোরাম আয়োজিত ‘সামপ্রতিক পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতি ও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনাসভায় এসব কথা বলা হয়। আদিবাসী ফোরামের সহসভাপতি অজয় এ মৃর সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লেখক ও অধিকারকর্মী সতেজ চাকমা। তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার নেতৃত্বে জুম্ম নেতাদের প্রথম স্মারকলিপির চার দাবি আমলে না নিয়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে থেকে বাঙালি জনগোষ্ঠী ঢুকিয়ে দিয়ে জুম্ম দমনের ‘হুমকির’ বিষয়টি বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য। মূলত তাঁর এই আধিপত্যবাদী চিন্তার প্রতিফলনই দেশের রাজনৈতিক চরিত্রকে ভিন্ন এক রূপ দেয়।
সভায় জানানো হয়, সামরিক-বেসামরিক সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পাহাড়ে সশস্ত্র তৎপরতায় স্বাধীনতার পর থেকে পার্বত্য চুক্তির পূর্ববর্তী সময়ে নিহত, আহত ও অপহরণ কিংবা নিখোঁজের শিকার হয়েছে অন্তত আট হাজার ১৪০ জন। নিহতদের মধ্যে এক হাজার ১৩৮ জন পাহাড়ি এবং এক হাজার ৪৪৬ জন বাঙালি। এই সময় বিভিন্ন বাহিনীর ৩৮০ জন সদস্য নিহত হয়েছে।
জনসংহতি সমিতির তথ্য তুলে ধরে সভায় জানানো হয়, পার্বত্য চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ২৫টি বাস্তবায়িত হয়েছে।
সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহসভাপতি ও সাবেক এমপি ঊষাতন তালুকদার বলেন, ‘পাহাড়ি মানুষ কারো সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদে জড়াতে চায় না। কিন্তু আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে এখানেই থাকতে চাই।’ তিনি বলেন, বিগত সরকার পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। বর্তমান সরকারেরও উদ্যোগ নেই।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আদিবাসী শব্দটি নিয়ে গবেষণা হওয়া উচিত। আদিবাসী নেই, এটা প্রচার করতে পারলে তাদের অধিকারের বিষয়টিও আর থাকে না। এই প্রবণতা বাদ দিয়ে তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, এই অঞ্চলজুড়ে অস্থিতিশীলতা তৈরির মধ্য দিয়ে যে ঘটনা ঘটবে তাতে জঙ্গিগোষ্ঠী, আধিপত্যবাদ বিস্তার পাবে। এতে ওই অঞ্চলে আরো সামরিকীকরণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সম্পর্কিত খবর

বর্ষায়ও হাতিরঝিলের পানি দূষণ


জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে আজ দেশব্যাপী চলচ্চিত্র প্রদর্শনী
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে আজ রবিবার দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ‘পিপল হু ফট ফর আস’ ও ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট : স্টোরি অব মুশতাক আহমদ’সহ জুলাইয়ের চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হবে। ঢাকায় মিরপুর-১০ ও বছিলায় শহীদদের স্মরণে সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে এসব আয়োজন করা হবে। গতকাল শনিবার সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ কথা জানানো হয়।
তথ্য বিবরণীতে আরো বলা হয়েছে, আজ ২০ জুলাই ‘গণহত্যা ও ছাত্র-জনতার প্রতিরোধ দিবস’ স্মরণে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিউজিক ভিডিও শেয়ার করা হবে, যার থিম মিউজিক হবে ‘দেশটা তোমার বাপের নাকি’। কর্মসূচি অনুযায়ী এদিন ‘একটি শহিদ পরিবারের সাক্ষ্য’ ডকুমেন্টারির পার্ট-৬ প্রচার এবং একজন জুলাই যোদ্ধার স্মৃতিচারণার ভিডিও শেয়ার করা হবে। সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হবে। সব মোবাইল গ্রাহকের কাছে ভিডিওর ইউআরএল পাঠানো হবে।

আদিলুর রহমান খান
ঢাকা শহরে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য আবাসন নিশ্চিত করতে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক ও ঢাবি প্রতিনিধি

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, ‘ঢাকা শহরে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য নিরাপদ ও সাশ্রয়ী আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। বিগত সময়ে মানুষকে ঢাকাকেন্দ্রিক করে ফেলা হয়েছে। ঢাকার সঙ্গে আশপাশের জেলাগুলোর ভালো সংযোগ স্থাপন করা হয়নি। ফলে মানুষ কাজের জন্য ঢাকা এলেও, কাজ সেরে ফিরে যেতে পারছে না।
গতকাল শনিবার বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগ আয়োজিত ‘ঢাকায় নিম্নবিত্তের সাশ্রয়ী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আবাসন’ শীর্ষক এক বিশেষ ডিজাইন-গবেষণা উপস্থাপনা ও আলোচনায় উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর প্লট ও ফ্ল্যাট দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কোটা বাতিল করেছে সরকার। স্বল্প আয়ের মানুষের আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে রাজউক থেকে লটারির মাধ্যমে অ্যাপার্টমেন্ট দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ তৈরি হলে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ফলাফল হাতে থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন আদিলুর রহমান খান।
উপদেষ্টা বলেন, নতুন করে যেন বাংলাদেশে কখনোই আর ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে না পারে।

শিক্ষাঙ্গন
