বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম গতকাল সোমবার প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এটি আজ মঙ্গলবার ভোর থেকে সকালের মধ্যে ভারতের দক্ষিণ অন্ধ্র প্রদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাবে আজ খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজারকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আজ ভোরের মধ্যে নেল্লোর ও মছলিপত্তনমের কাছ দিয়ে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
এদিকে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) গতকাল তাদের ওয়েবসাইটে জানায়, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আজ স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টার মধ্যে দক্ষিণ অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলে আঘাত করতে পারে।
বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া আকারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আজ থেকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তবে আগামী দুই দিন বৃষ্টি বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অফিস বলেছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আজ খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে।
আগামীকাল বুধবার খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। পরদিন বৃহস্পতিবার বৃষ্টিপাতের এলাকা ও পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। এদিন ঢাকাসহ দেশের সাত বিভাগের বেশির ভাগ জায়গায় এবং রংপুর বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, সিস্টেমটি (ঘূর্ণিঝড়) থেকে মঙ্গলবার বাংলাদেশের দিকে হালকা কিছু মেঘ বেরিয়ে আসতে পারে।
এতে দেশের উপকূলীয় এলাকার কোথাও কোথাও হালকা বৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু সিস্টেমটি (ঘূর্ণিঝড়) চলে যাওয়ার পরে আরো বেশি পরিমাণ মেঘ আসতে পারে বাংলাদেশের দিকে। ফলে বুধ ও বৃহস্পতিবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণও বাড়তে পারে।
১০ ডিসেম্বরের পর বাড়তে পারে শীত
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ১০ ডিসেম্বরের পর থেকেই দেশে ডিসেম্বর মাসের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ও শীত অনুভূত হতে পারে। সময় গড়াবার সঙ্গে সঙ্গে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ অনেক জায়গায় জেঁকে বসতে পারে শীত।
আবহাওয়া অফিস জানায়, বৃষ্টি হলে আগামীকাল বুধবারই রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরবর্তী দিনগুলোতেও ক্রমেই কমবে তাপমাত্রা। আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, ‘আগামী ৯ বা ১০ ডিসেম্বরের পর তাপমাত্রা আরো কমতে পারে।